পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবনটা কি ?
১১৭

কোনটি ইউরিয়া (Urea), কোনটি পিত্তরস এবং কোনটি নানাপ্রকার রঙ্ উৎপন্ন করিতে ব্যস্ত থাকে। আবার কতকগুলি দেহস্থ বিষ পদার্থকে বিশ্লিষ্ট করিয়া নষ্ট করিতে থাকে, কতকগুলি হয় ত পাকাশয়ে উৎপন্ন অম্লকে অপর পদার্থের সহিত মিশাইতে ব্যাপৃত থাকে। কেবল যকৃতে নয়, প্লীহা, মুত্রাশয়, ফুস্‌ফুস্ প্রভৃতি দেহের সকল অংশে কোটি কোটি জীবকোষের এই প্রকার কার্য্য নিয়তই চলিতেছে। এমন কি মস্তিষ্কে এবং স্নায়ুমণ্ডলীতেও এই প্রকার বিশেষ খামী জন্মিয়া ভাঙ্গা-গড়ার ভিতর দিয়া জীবনের কার্য্য দেখাইতেছে। সুতরাং দম্বলে দধির উৎপাদন এবং জীবনের কার্য্য একই বলিয়া আমরা প্রবন্ধারম্ভে যে-কথাটার উল্লেখ করিয়াছিলাম, তাহা যে নিরর্থক নয় এই সকল পরীক্ষা-দৃষ্ট ব্যাপার হইতেই স্পষ্ট বুঝিতে পারা যায়।

 এখন জিজ্ঞাসা করা যাইতে পারে,—আজকাল বৈজ্ঞানিকগণ জীবদেহের যে সকল খামীকে জীবনীশক্তির মূল কারণ বলিয়া নির্দ্দেশ করিতেছেন, সেই Enzymes or Zymases জিনিষটি কি? আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ এখনও এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন না। কিন্তু ইহার যথার্থ উত্তর দেওয়াই আজকাল বৈজ্ঞানিকদিগের সাধনার বিষয় হইয়া দাঁড়াইয়াছে। এই উদ্দেশ্যে কত দেশে কত বৈজ্ঞানিক যে, নীরবে গবেষণা করিতেছেন তাহার ইয়ত্তা হয় না। কোন্ শুভদিনে ইঁহাদের সাধনা সিদ্ধিলাভ করিবে তাহা ঠিক্ বলা যায় না। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, রাসায়নিক প্রথায় বিশ্লেষ করিলে সেই হাইড্রোজেন্, অক্সিজেন্, নাইট্রোজেন্ এবং অঙ্গার ছাড়া আর কিছুই ঐ সকল পদার্থে ধরা পড়ে না। কি প্রকারে এই সকল সুপরিচিত পদার্থ সংযুক্ত হইয়া জীবনীশক্তির প্রকাশ করে তাহাই বিজ্ঞানের একটা সমস্যা হইয়া দাঁড়াইয়াছে। রসায়নবিদ্‌গণ যেমন অক্সিজেন্ ও হাইড্রোজেন্‌কে একত্র করিয়া