পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাণিদেহের উত্তাপ
১২৫

সময়ে অতি অল্প তাপ উৎপন্ন করিয়া স্তূপীকৃত ভস্মে পরিণত হয়। নিকৃষ্ট কয়লার এক মণে যে কাজ পাওয়া যায়, উৎকৃষ্ট কয়লার আধ মণেই হয় ত সেই কাজ হয়। দেহের কলে তাপ উৎপন্ন করিবার জন্য আমরা খাদ্যাকারে যে ইন্ধন যোগাই, তাহারো ভালমন্দ আছে। অর্দ্ধসের চাউলের দাহনে দেহ-যন্ত্রে যে তাপের উৎপত্তি হয়, অর্দ্ধ ছটাক ভাল খাদ্যে তাহা অপেক্ষা অনেক অধিক তাপ জন্মাইতে পারা যায়। কোনখান হজম হইবার সময়ে কি পরিমাণ তাপ উৎপন্ন করে, তাহার একটা হিসাব স্থির করা কঠিন নয়। এই প্রকার হিসাবে জানা গিয়াছে, পনর গ্রেণ ওজনের মাংস হজম হইবার সময়ে যে তাপ নির্গত করে, তাহাতে প্রায় দুই সের ওজনের জলকে সেণ্টিগ্রেডের এক ডিগ্রী পরিমাণে উষ্ণ করা যাইতে পারে, কিন্তু ঠিক্ সেই পরিমাণ ঘৃত বা চর্ব্বি হজম করিলে তাপের পরিমাণ উহার দ্বিগুণেরও অধিক হইয়া দাঁড়ায়। সুতরাং আমাদের প্রধান আহার্য্যগুলির এই প্রকার একটা তালিকা প্রস্তুত করিতে পারিলে, সুগৃহিণীগণ স্বাস্থ্যবিধানের উপরেও একটু দৃষ্টি রাখিতে পারিবেন বলিয়া আশা হয়।

 কোন্ খাদ্য হইতে কি পরিমাণ তাপ পাওয়া যায়, তাহা মোটামুটি স্থির থাকিলেও খুঁটিনাটিতে যথেষ্ট মতদ্বৈধ আছে। জগদ্বিখ্যাত জীবতত্ত্ববিদ লিবিগ্ (Liebig) সাহেব আমাদের সাধারণ খাদাকে মাংসবর্দ্ধক ও তাপবর্দ্ধক এই দুই প্রধান ভাগে ভাগ করিতেন। এই বিভাগ অনুসারে আমিষ খাদ্য মাংসবর্দ্ধক এবং শ্বেতসার (Starch) চিনি ও তৈল ঘৃতাদি তাপবর্দ্ধক বলিয়া আজও স্বীকৃত হইতেছে। তবে লিবিগ্ সাহেব আমিষ খাদ্যকে কেবলি মাংসবন্ধক বলিয়া সিদ্ধান্ত করিয়া ছিলেন, আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ তাহা স্বীকার করিতেছেন না। ইঁহাদের মতে, আমিষের কোন অংশই বৃথা যায় না। ইহাতে যে নাইট্রোজেন্ থাকে তাহা দেহের ক্ষয় পূরণ করে এবং তার পরে