পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
প্রাকৃতিকী

কথাই বলেন নাই। ব্যাপারটা এতই জটিল যে, এ সম্বন্ধে কোন সুনিশ্চিত মত প্রকাশ করা সত্যই অসম্ভব।

 আলোক পদার্থ-বিশেষের উপর পড়িয়া তাহাকে যে নানাপ্রকারে পরিবর্ত্তিত করে, ইহাতে আর এখন অবিশ্বাস করা চলে না। শত শত প্রত্যক্ষ পরীক্ষায় আলোকের রাসায়নিক কার্য্যের পরিচয় পাওয়া গিয়াছে। ক্লোরিন (Chlorine) ও হাইড্রোজেন্ (Hydrogen) বায়ুকে একটি কাচপাত্রে মিশাইয়া অন্ধকার ঘরে রাখিলে, উভয় বায়ু কেবল মিশিয়া থাকে মাত্র। এ অবস্থায় তাহাদের কোনই রাসায়নিক পরিবর্ত্তন দেখা যায় না। কিন্তু ঐ পাত্রটিকে কিছুক্ষণ সূর্য্যালোকে রাখিয়া দিলে আলোকের স্পর্শে হাইড্রোজেন্ ও ক্লোরিন্ পরস্পর সংযুক্ত হইয়া হাইড্রোক্লোরিক এসিড উৎপন্ন করে। ফোটোগ্রাফের কাচের উপরকার প্রলেপ আলোক পাইলেই যে কালো হইয়া যায় তাহাও আলোকের রাসায়নিক কার্য্যের একটি উদাহরণ। বৃক্ষের পত্রাদিতে যে-সকল সবুজবর্ণের অণু পরিব্যাপ্ত থাকে, তাহারাই বাতাসের অঙ্গারক বাষ্পকে বিশ্লিষ্ট করিয়া অঙ্গার উৎপন্ন করে, এবং তাহাই দেহস্থ করিয়া উদ্ভিদ পরিপুষ্ট হয়। পরীক্ষা করিয়া দেখা গিয়াছে, সূর্য্যের আলোকই উদ্ভিদের হরিদণুগুলিকে সক্রিয় করায়। সুতরাং অক্ষি-যবনিকায় পড়িলে তদ্দ্বারা জীবসামগ্রীর পক্ষে রাসায়নিক পরিবর্ত্তন হওয়ারই যে সম্ভাবনা অধিক, তাহা আর অস্বীকার করা যায় না।

 পাঠকের বোধ হয় অবিদিত নাই, অক্ষি-যবনিকার কোষগুলি প্রায় সর্ব্বদাই একপ্রকার রঙিন পদার্থে পূর্ণ থাকে, এবং তাছাড়া দণ্ডাকৃতি ও মোচাকারের (Rods and Cones) কতকগুলি অতি সূক্ষ্ম পদার্থ উহার সর্ব্বাংশে পরিব্যাপ্ত দেখা যায়। পরীক্ষা করিয়া দেখা গিয়াছে, আলোক পাইলেই কোষমধ্যস্থ বর্ণকণিকাগুলি চঞ্চল হইয়া