পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একটি নূতন আবিষ্কার

গত শতাব্দীর শেষার্দ্ধে ডারুইনের অভিব্যক্তিবাদ সুপ্রতিষ্ঠিত হইলে, জীবের উৎপত্তির উপর বৈজ্ঞানিকদিগের দৃষ্টি পড়িয়াছিল। এক দল বৈজ্ঞানিক বলিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন, জীব হইতেই জীবের উৎপত্তির সম্ভাবনা; মাতৃপিতৃসাহায্য-ব্যতীত জীবের জন্ম হইতেই পারে না। আর একদল পণ্ডিত ইহার প্রতিবাদ করিয়া স্বতঃজনন(Spontaneous generation) সিদ্ধান্ত প্রচার করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। সুপ্রসিদ্ধ জীবতত্ত্ববিৎ পুচে (Pouchet) সাহেব স্বতঃজননবাদীদিগের নেতা ছিলেন, এবং পরে অধ্যাপক বাষ্টিয়ান্ (Bastion) ইহার সহযোগী হইয়াছিলেন। ইঁহারা বলিতেন, জীব হইতে জীবের উৎপত্তি হয় সত্য, কিন্তু ইহাই জীবোৎপত্তির একমাত্র ধারা নয়। অজীব হইতে জীবের উৎপত্তি আমাদের চারিদিকে নিয়তই চলিতেছে। উদাহরণ জিজ্ঞাসা করিলে ইঁহারা গলিত উদ্ভিদ্ ও প্রাণিদেহের প্রতি অঙ্গুলি নির্দ্দেশ করিয়া বলিতেন, এগুলিতে যে অতিক্ষুদ্র অসংখ্য কীটের উৎপত্তি দেখা যায়, তাহাই স্বতঃজননের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

 ১৮৬২ খৃষ্টাব্দে ফরাসী বৈজ্ঞানিক লুই পাষ্টুর (Pasteur) এই স্বতঃজননবাদীদিগের সমগ্র যুক্তিতর্কের মূলোচ্ছেদ করিয়াছিলেন। গলিত জীবদেহে যে-সকল ক্ষুদ্র কীটের উৎপত্তি হয়, সেগুলি যে মাতৃপিতৃয়াহায্য গ্রহণ করিয়াই জন্মগ্রহণ করে, পাষ্টুর সাহেব এবং ইংরাজ বৈজ্ঞানিক টিন‍্ডাল্ সাহেব তাহা প্রত্যক্ষ দেখাইয়াছিলেন।

 ইহার পর বহুকাপ স্বতঃজননবাদীদিগের কণ্ঠস্বর শুনা যায় নাই।