পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কেরোসিন তৈল
১৯৫

একশত তিন ডিগ্রি উত্তাপেই জ্বলিয়া উঠে। সৎ ব্যবসায়ীর নিকট হইতে কেরোসিন না কিনিলে কখন কখন তৈলে শতকরা পাঁচভাগ পর্যন্ত ন্যাপ‍্থা পাওয়া গিয়া থাকে। এই তৈল ৮৬° ডিগ্রি উত্তাপ পাইলেই জ্বলিয়া উঠে; সুতরাং এপ্রকার নিকৃষ্ট জিনিষ ব্যবহারে বিপদের সংঘটন মোটেই আশ্চর্যের বিষয় নয়।

 কেবল দুর্ঘটনা হইতে নিষ্কৃতি লাভের জন্যই যে উৎকৃষ্ট তৈলের ব্যবহার আবশ্যক, তাহা নয়। অল্প খরচে অধিক আলোক পাইতে হইলেও উৎকৃষ্ট তৈল ব্যবহার করা আবশ্যক। অনেক সময়ে বাজারের তৈল ভাল ল্যাম্পে ব্যবহার করিতে গিয়া দেখা যায়, শিখা ধুমময় হইয়া পড়িতেছে। ইহাও তৈলমিশ্রিত ন্যাপ্‌থারই একটা লক্ষণ! এ প্রকার তৈল অল্প মূল্যে পাওয়া যায় সত্য; কিন্তু জিনিষটা এত অপরিচ্ছন্ন আলোক দিয়া শীঘ্র শীঘ্র পুড়িয়া যায় যে, ইহার ব্যবহারে গৃহস্থমাত্রকেই ক্ষতিগ্রস্ত হইতে হয়। তা’ ছাড়া আকস্মিক দুর্ঘটনার সম্ভাবনা পূর্ণমাত্রায় রহিয়া যায়। হিসাব করিয়া দেখা গিয়াছে, ভাল তৈল পুড়াইয়া যে পরিমাণ আলোক পাওয়া যায়, মধ্যম শ্রেণীর তৈলে তাহার চারি ভাগের তিন ভাগ মাত্র আলোক পাওয়া গিয়া থাকে।

 কেরোসিন তৈল আজকাল আমেরিকায় একটা প্রধান পণ্যদ্রব্য হইয়া দাঁড়াইয়াছে। পৃথিবীর নানা স্থানের কেরোসিনের বড় বড় আকরগুলি ১৮৬০ সাল পর্য্যন্তও অনাদৃত ব্যবস্থায় পড়িয়াছিল। দেশের অতি প্রাচীন জঙ্গলের বৃহৎ বৃহৎ বৃক্ষগুলিই ইন্ধন জোগাইত। এখন আর সে জঙ্গল নাই। প্রায় সকল অরণ্যভূমিই কৃষিক্ষেত্র বা গ্রাম-নগরে পরিণত হইয়াছে। কাজেই বৃহৎ বৃহৎ কলকারখানার খাঙ্ক জোগাইবার জন্য আমাদিগকে রত্নগর্ভা ধরা-দেবীরই শরণাপন্ন হইতে হইয়াছে। মনে হয়, ভবিষ্যৎ সন্তানদিগের সুখস্বাচ্ছন্দ্যের