পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৮
প্রাকৃতিকী

 যাহা হউক যে জিনিষ বাতাসের সহিত ভাসিয়া আসিয়া খেজুররস ইত্যাদি বিকৃত করে, আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ তাহা লইয়া অনেক গবেষণা করিয়াছেন। ইহাতে জানা গিয়াছে বাতাসে সর্ব্বদাই নানা জাতীয় জীবাণু ভাসিয়া বেড়াইতেছে। জীবাণুর নাম শুনিলেই ব্যাধির জীবাণুর কথা মনে পড়িয়া যায়। কিন্তু এপর্য্যন্ত যতগুলি এই শ্রেণীর জীবের সন্ধান পাওয়া গিয়াছে, তাহার মধ্যে ব্যাধি-উৎপাদক জীবাণুর সংখ্যা নিতান্তই অল্প। মৃত প্রাণী বা উদ্ভিদের দেহকে পচাইয়া ফেলা, চিনি হইতে মদ উৎপন্ন করা, উদ্ভিদের মূলে বায়ুর নাইট্রোজেন সংগ্রহ করিয়া রাখা, এমন কি চুরুটের তামাকে সুগন্ধ উৎপন্ন করা, রঞ্জন-কার্য্যে রঙ্ কে ফলাইয়া তোলা প্রভৃতি অনেক ব্যাপার কেবল জীবাণু দ্বারাই সম্পন্ন হয় বলিয়া স্থির হইয়াছে। কেবল স্থির করিয়াই বৈজ্ঞানিকগণ ক্ষান্ত হন নাই; হাজার হাজার পৃথক্ জাতীয় জীবাণুর মধ্যে আবশ্যক মত এক এক জাতিকে চিনিয়া এবং বাছিয়া লইয়া তাহাদিগকে পালন করিতে আরম্ভ করিয়াছেন। ব্যবসায়ের জন্য আমরা রেসমের কীট ও লাক্ষার কীট পালন করিয়া থাকি। আজকাল ব্যবসায়ের জন্য ঐ সকল জীবাণুকেও পালন করা হইতেছে। যে জীবাণু মদ্য উৎপন্ন করে যা উদ্ভিদের খাদ্য যোগায়, —পালন করিয়া তাহাদিগকে মদ্য প্রস্তুতের কারখানায় বা শস্যক্ষেত্রে ছাড়িয়া দেওয়া হইতেছে। ইহাতে আজকাল অত্যাশ্চর্য ফল পাওয়া যাইতেছে।

 দধি জিনিষটাও জীবাণু দ্বারা উৎপন্ন। এক শ্রেণীর বিশেষ জীবাণু দুগ্ধে আশ্রয় গ্রহণ করিয়া কোন প্রকার রস নির্গত করিতে থাকিলে তাহা দ্বারা রাসায়নিক কার্য্য শুরু হয়। ইহাই দুগ্ধকে দধিতে পরিণত করে। দধির সুগন্ধ, অম্লস্বাদ সকলই সেই দধি-জীবাণুর কাজ। মাখনের সুগন্ধ এবং বিলাতি চিজের সেই গন্ধটারও মূলে জীবাণুর কার্য্য দেখিতে পাওয়া যায়। বিশেষ বিশেষ জীবাণু দুগ্ধে আশ্রয় গ্রহণ