পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দধি
২০৩

বয়স অধিক হইলে অনেক সময় অকারণে মানুষ অসুস্থ হইয়া পড়ে। এই ব্যাধির প্রতিকারে দধির অত্যাশ্চর্য্য শক্তি দেখা গিয়াছে। তা ছাড়া রক্তহীনতা, পেটফাঁপা, অবসন্নভাব, মাথাধরা ইত্যাদি ছোট বড় নানা প্রকার পীড়ায় ইহা খুবই উপকার করে। অনুসন্ধান করিলে দেখা যায়, পূর্ব্বোক্ত প্রায় সকল-ব্যাধিই পাকনালীর সেই অনিষ্টকর জীবাণুর দ্বারা উৎপন্ন। সুতরাং দধির স্বাস্থ্যকর জীবাণুই যে, দেহশত্রুগণকে ধ্বংস করিয়া মানুষকে নিরুপদ্রব করে তাহাতে বোধ হয় আর সন্দেহ করিবার কিছুই নাই। দধির অপর কোন গুণ থাকুক্ বা না থাকুক্ ইহার যে এক অদ্ভুত পাচকশক্তি আছে কেবল তাহার জন্যই জিনিষটা সর্ব্বজাতির প্রধান খাদ্য বলিয়া গ্রহণ করা যাইতে পারে।

 স্বাস্থ্যবর্দ্ধক বলিয়াই হাটে বাজারে দধি নামক যে এক অতি তরল পদার্থ বহু ব্যয়ে ক্রয় করা যায়, তাহা ব্যবহার করিবার জন্য পাঠককে কেহই পরামর্শ দিবে না। খাঁটি দধি-জীবাণু দ্বারা প্রস্তুত দধিই স্বাস্থ্যপ্রদ। স্বাদে গন্ধে বর্ণে যে দধি নিকষ্ট তাহা স্বাস্থ্যহানিকর জীবাণুরই আবাসভূমি একথা স্মরণ রাখিতে হইবে। কাজেই ইহার ব্যবহারে স্বাস্থ্যের হানি হইবারই কথা। বাড়ীতে যাঁহারা ভাল দধি পাতিতে পারেন এপ্রকার গৃহিণী আমাদের পাড়াগাঁয়ে ঘরে ঘরে দেখিতে পাওয়া যায়। আমাদের দেশে দধিব্যবসায়িগণ নিরক্ষর বটে কিন্তু ইহাদেরই মধ্যে অনেকে দীর্ঘকালের পুরুষপরম্পরাগত অভিজ্ঞতার ফলে অনিষ্টকর জীবাণু তাড়াইয়া তাহাদের “সাঁজা” গুলিকে এমন সুন্দর করিয়া প্রস্তুত করে যে, ইহাদের হাতের দধি কখনই খারাপ হইতে দেখা যায় না। খাঁটি দধি-জীবাণু দিয়া বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দই পাতা আমাদের দেশেও আরম্ভ হইয়াছে।