পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাবিলোনীয় জ্যোতিষিগণ
২১৩

গ্রন্থের মধ্যে কোনটি প্রকৃত তাহা এখন নির্দ্দেশ করা প্রকার অসম্ভব হইয়া দাঁড়াইয়াছে, এবং অন্য উপায়ে নিরূপিত কাল ও বিবরণের উপরও সন্দেহ হইতেছে। আধুনিক পণ্ডিতগণ অনুমান করেন, বেলস্ নামক সুবিখ্যাত নৃপতির রাজত্বকালে জ্যোতিষ-চর্চ্চ বাবিলনে প্রথম আরম্ভ হয়। বেলস্ একজন নানাবিদ্যাপারদর্শী গুণবান নৃপতি ছিলেন, ইঁহার রাজত্বকালে অনেক জ্যোতিষগ্রন্থ লিখিত হইয়াছিল। যে-সকল প্রাচীন গ্রন্থ বিখ্যাত জ্যোতিষাচার্য্য বেরোসস্ লিখিত বলিয়া প্রসিদ্ধ, আধুনিক পণ্ডিতগণ বলেন, সেগুলির সমস্তই উক্ত বাবিলোনীয় নৃপতি বেলস্ প্রণয়ন করিয়াছিলেন। বেরোসস্ কেবল গ্রন্থগুলি ভাষান্তরিত করিয়াছিলেন মাত্র।

 সকল শাস্ত্রের মুলে প্রায়ই কতকগুলি অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের সমষ্টি দেখিতে পাওয়া যায়। মানুষ এই সকল বিশ্বাসের বশবর্ত্তী হইয়া সংসারে কাজ করিতে আরম্ভ করে। কিন্তু কেবল বিশ্বাস দ্বারা কাজ করা শীঘ্রই তাহাদের পক্ষে অসম্ভব হইয়া দাঁড়ায়। তাহারা স্বতঃই একটি দৃঢ় অবলম্বন খুঁজিতে আরম্ভ করে, এবং শেষে পূর্ব্ববিশ্বাসের নানা সংস্কার করিয়া ও তাহাকে নানা প্রকারে ভাঙ্গিয়া গড়িয়া অন্ধবিশ্বাসের মূলগত কারণ আবিষ্কার করে, এবং পূর্ব্বেকার ভিত্তিহীন শাস্ত্রকে সজীব ও সমূল করিয়া গড়িয়া তোলে। বাবিলোনীয় জ্যোতির্বিদ্যা পূর্ব্বোক্ত প্রকারে স্ফূর্ত্তি প্রাপ্ত হইয়াছিল। প্রথমতঃ, অধিবাসিগণ গ্রহনক্ষত্রযুক্ত আকাশমণ্ডলকে পার্থিব ঘটনাবলির অবিকল প্রতিবিম্ব বলিয়া বিশ্বাস করিত, এবং গ্রহাদির ভেদযোগ প্রভৃতি সংঘটনকালে পৃথিবী যে অবস্থায় থাকে ও যে-সকল ঘটনা ইহাতে সংঘটিত হয়, গ্রহাদি সেই সেই অবস্থায় পুনরায় উপস্থিত হইলে, তত্তৎ ঘটনা পৃথিবীতে নিশ্চয়ই লক্ষিত হইবে বলিয়া তাহাদের মনে