পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাবিলোনীয় জ্যোতিষিগণ
২১৭

করিত এবং প্রত্যেক বিভাগস্থ নক্ষত্র সকল কি অবস্থায় আছে তাহা পরিদর্শন করিয়া আবার কোন্ সময়ে জ্যোতিষ্কগণ ঠিক উক্ত প্রকার অবস্থায় ছিল, তাহা পঞ্জিকার সাহায্যে দেখিত এবং সেই অতীত কালের সংঘটিত কার্য্যাদির যে ফল হইয়াছিল, বর্ত্তমান কালেও অবিকল সেই ফল হইবে বলিয়া স্থির করিত।

 মানবশিশুর মনে একটু জ্ঞানের উন্মেষ হইলেই প্রথমতঃ কাল ও স্থান, এই দুইটি জগতের চিরন্তন সামগ্রীর উপর তাহারা স্বতঃই আকৃষ্ট হইয়া পড়ে, এবং ক্রমে এই অনন্ত ও অব্যয় ভাবদ্বয়কে বুদ্ধির ক্ষুদ্র ভাবমধ্যে সীমাবদ্ধ করিয়া তাহাদের একটা স্মৃতি যাহাতে থাকিয়া যায় তাহার জন্য ঐকান্তিক চেষ্টা করে, এবং এই চেষ্টার ফলস্বরূপই সময়াদির পরিমাপের একটি স্থূল নিয়ম আবিষ্কৃত হয়। এই কারণেই বোধ হয়, সময়ের স্থূল পরিমাপবিষয়ে মহা অসভ্য জাতি হইতে সভ্যতম জাতির মধ্যেও একই নিয়ম বর্ত্তমান দেখিতে পাওয়া যায়।

 প্রাকৃতিক পরিবর্ত্তনের মধ্যে ঋতুপরিবর্ত্তনটি সহজদৃশ্য ও সুবৃহৎ ব্যাপার বলিয়া বোধ হয়, ইহা দ্বারা সময়নির্দ্দেশ করিবার প্রথা সকল জাতির মধ্যেই প্রচলিত আছে। এক ঋতু হইতে আরম্ভ করিয়া সেই ঋতুর পুনরাগমন পর্য্যন্ত কালটিকে সকলেই স্থূল সময়গণনার পরিমাপদণ্ড-স্বরূপ নির্দ্দেশ করিয়া থাকেন। জ্ঞানালোকবর্জিত মহারণ্যবাসী কাফ্রির মধ্যেও কালগগনার এই নিয়মটি লক্ষিত হয়। তবে পার্থক্যের মধ্যে এই সুসভ্য জাতিগণ সূক্ষ্ম গণনা দ্বারা এই কালকে বৎসর নামে অভিহিত করিয়া গণনাকার্য্যের সুবিধার্থে বৎসরকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করে মাত্র। বাবিলোনীয়দেরও মধ্যে পূর্ব্বোক্ত সাধারণ নিয়মে বৎসর-গণনাপ্রথা প্রচলিত ছিল। কিন্তু মাস ইত্যাদির গণনাকার্য্যে ইহাদের সহিত অন্যান্য