পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাবিলোনীয় জ্যোতিষিগণ
২২১

উদ্ধার সাধিত হওয়ায়, সেগুলি দ্বারা নক্ষত্রাদির পরিচয় অবগতির কিঞ্চিৎ সহায়তা হইবে বলিয়া আশা করা যাইতেছে।

 পূর্ব্বেই বলা হইয়াছে বাবিলোনীয়গণ নক্ষত্রাদি পর্য্যবেক্ষণ দ্বারা তাহাদের গতিনির্দ্ধারণ কার্য্যে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ ছিল। জ্যোতিষ্ক সকল গতিশীল ও ইহারা রাত্রিকালে পূর্ব্ব হইতে পশ্চিমাভিমুখে গমন করে, বাবিলোনীয়গণ ইহাই জানা যথেষ্ট বলিয়া জ্ঞান করিত। পৃথিবীর কক্ষে মেরুদণ্ড হেলিয়া থাকায় দক্ষিণাকাশস্থ যে-সকল নক্ষত্র প্রায়ই অদৃশ্য থাকে তাহাদের আকস্মিক উদয়, বাবিলোনীয়গণ বড়ই বিস্ময়কর ব্যাপার বলিয়া বোধ করিত, এবং এই সকল নক্ষত্রের উদয়কালে তাহারা নানাবিধ শুভ ও দৈবকার্য্য মহোৎসবে সম্পন্ন করিত। গ্রহদিগের জটিল গতির বিষয় ইহারা কিছুই জানিত না এবং বাহ্যতঃ ইহাদের গতি উচ্ছৃঙ্খল ও অস্বাভাবিক দেখিয়া গ্রহগণকে অপদেবতা বলিয়া ভয় করিত ও শান্তপ্রকৃতি দেবগণের কৃপায় আশু বিঘ্নশান্তি-মানসে সর্ব্বাগ্রে জগতের নিয়মসংহারকারী দুষ্ট গ্রহগণকে পূজাদি দ্বারা সন্তুষ্ট করিত। অনেকে অনুমান করেন, এই সময় হইতেই সুপ্রসিদ্ধ সেমেটিক্ ধর্ম্ম সংস্থাপনের সূত্রপাত হয়। বাবিলোনীয়গণ কেবলমাত্র কাল্পনিক আশঙ্কার বশবর্ত্তী হইয়া সপ্তগ্রহকে তাহাদের উপাস্য দেবতা করিয়া তুলিয়াছিল এবং অবিকল একই কারণে দুর্ভিক্ষ, মারীভয়, বজ্রাগ্নিভয়াদি আপদকেও দেবতা বলিয়া পূজা করিতে শিক্ষা করিয়াছিল। এতদ্ব্যতীত ইহারা চন্দ্র ও সূর্য্যগ্রহণকে একটি মহা অশুভ লক্ষণ বলিয়া ভয় করিত। কিছুদিন পরে আবার এই মত পরিবর্ত্তন করিয়া চন্দ্রসূর্য্যের গ্রহণকে একটি শুভ চিহ্ন বলিয়া দেখিত।

 আধুনিক জ্যোতিষীদিগের নিকট বাবিলোনীয় জ্যোতিষশাস্ত্র যে, সর্ব্বাংশে হীন তাহাতে আর অণুমাত্র সন্দেহ নাই। ডায়োডোনস্