পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫০
প্রাকৃতিকী

হইয়া পড়ে। আধুনিক জ্যোতিষিগণ এই ঘটনার নানা কারণ নির্দ্দেশ করিয়া আসিতেছিলেন। সি, সাহেব বলিতেছেন, জ্যোতিষ্কদিগের দেহ হইতে স্খলিত হইয়া, যে ধূলিপুঞ্জ মহাকাশে ব্যাপ্ত হইয়া আছে, তাহাই এই সকল পরিবর্ত্তনের মূল কারণ। নির্দ্দিষ্ট পথে চলিবার সময় কোন অনুজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক যদি ঘন ধূলিপুঞ্জের সংঘর্ষণ প্রাপ্ত হয়, তবে ইহার তাপে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি হইবারই সম্ভাবনা। এই প্রকারে আকস্মিক উজ্জ্বল নক্ষত্রগুলিকেই আমরা দূর হইতে পরিবর্ত্তনশীল তারকার আকারে দেখি। যে-সকল নক্ষত্র জোড়া জোড়া বা তিন চারিটি করিয়া একত্র অবস্থান করে, তাহাদেরও উজ্জ্বলতার নিয়মিত পরিবর্ত্তনসম্বন্ধে এই ব্যাখ্যান প্রয়োগ করিতে পারা যায়। যে গুলিকে আমরা যুগল নক্ষত্র বলি, তাহা সত্যই খুব কাছাকাছি থাকিয়া নির্দ্দিষ্টকালে পরস্পরকে প্রদক্ষিণ করে। সুতরাং ইহাদের কাহারো কক্ষার মাঝে যদি কোন ধূলিপুঞ্জ আসিয়া দাঁড়ায়, তবে প্রত্যেক প্রদক্ষিণের শেষে উহাকে ধূলির সংঘর্ষণে জ্বলিয়া উঠিতে হয়।

 নবীন জ্যোতিঃশাস্ত্রে অদ্যাপি কোন নক্ষত্রের মৃত্যু সংবাদ লিপিবদ্ধ হয় নাই। কোটি কোটি বৎসরজীবী নক্ষত্রগুলি যে, দুই হাজার বৎসরের শিশু পৃথিবীকে মৃত্যুর বিভীষিকা দেখাইবে, তাহাও আশা করা যায় না। কিন্তু নক্ষত্রের জন্ম বড় দুর্লভ ঘটনা নয়। আকাশের যে সকল স্থান সম্পূর্ণ নক্ষত্রবর্জ্জিত, কখন কখন সেখানে হঠাৎ নূতন নক্ষত্রের প্রজ্জ্বলন দেখা গিয়াছে। এগুলি প্রায়ই কয়েকদিন মাত্র উজ্জ্বলালোক বিতরণ করিয়া নির্ব্বাণপ্রাপ্ত হয়। যাহা হউক অধ্যাপক সি, ইহাদের উৎপত্তিপ্রসঙ্গে বলিতেছেন, অনুজ্জল বা স্বল্পোজ্জ্বল নক্ষত্র যখন গন্তব্য দিক্ ধরিয়া যাইতে যাইতে সেই ধূলিপুঞ্জ বা অপর কোন অনুজ্জ্বল জ্যোতিষ্কের সংঘর্ষণ প্রাপ্ত হয় তখন উভয়েই সংঘর্ষণ তাপে জ্বলিয়া উঠে। আমরা দূর হইতে এই বিশাল অগ্নিকাণ্ডকেই নূতন নক্ষত্রের আকারে দেখি।