পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নুতন নীহারিকাবাদ
২৫১

 দূরবীক্ষণযন্ত্র দিয়া চন্দ্রমণ্ডল পর্য্যবেক্ষণ করিলে, আগ্নেয়গিরির গহ্বরের অনুরূপ কতকগুলি চিহ্ন চন্দ্রের সর্ব্বাঙ্গে পরিব্যাপ্ত দেখা যায়। আধুনিক জ্যোতিষিগণ এগুলিকে নির্ব্বাপিত আগ্নেয়গিরির বিবর বলিয়াই প্রচার করিয়া আসিতেছেন। নুতন নীহারিকাবাদের প্রতিষ্ঠাতা সি, সাহেব এই সিদ্ধান্ত গ্রাহ্য করিতেছেন না। ইঁহার মতে সেগুলি উল্কাপাতের চিহ্ন। কাদায় ঢিল ফেলিলে যেমন তাহাতে এক প্রকার চিহ্ন রহিয়া যায়, কোমল চন্দ্রদেহে সেই প্রকার বহু উল্কা পড়িয়া এক সময়ে ঐ চিহ্নগুলি উৎপন্ন করিয়াছিল।

 নূতন নীহারিকাবাদের সাহায্যে গ্রহদিগের আবর্ত্তন (Rotation) ও পরিভ্রমণ (Revolution) এই দুইয়েরই সুন্দর ব্যাখ্যা পাওয়া গিয়াছে, এবং গ্রহদিগের কক্ষ বৃত্তাকার না হইয়া কেন বৃত্তাভাস হইল, তাহারও কারণ নির্দ্দেশ করা চলিতেছে। সি, সাহেব এই সকল ব্যাপারে গণিতের প্রমাণ দিয়াছেন, সুতরাং তাঁহার বিরুদ্ধে বলিবার কিছুই নাই।

 অর্দ্ধশতাব্দী পূর্ব্বে জ্যোতিষিগণ সৌরজগৎকে অতি ক্ষুদ্র বলিয়া মনে করিতেন। শনিগ্রহের বাহিরে সৌরপরিবারভুক্ত অপর কোন জ্যোতিষ্ক নাই বলিয়াই ইঁহাদের বিশ্বাস ছিল। ইহার পর কয়েক বৎসরের মধ্যে ইউরেনস্ ও নেপ্‌চুন্ গ্রহযুগলের আবিষ্কারে সৌরজগতের প্রসার খুবই বৃদ্ধি পাইয়াছিল। সি, সাহেব তাঁহার নব সিদ্ধান্তের সাহায্যে আমাদের জগৎকে আরো বৃহৎ বলিয়া প্রমাণ করিতেছেন। নেপ্‌চুন্-গ্রহের কক্ষ সূর্য্য হইতে বহু দূরবর্ত্তী থাকিয়াও, আকারে প্রায় বৃত্তের ন্যায় রহিয়াছে। ইনি গণিতের প্রমাণ প্রয়োগ করিয়া বলিতেছেন, নেপ্‌চুন সৌরজগতের সীমান্তবর্ত্তী হইলে ইহার কক্ষ বৃত্তের অনুরূপ না হইয়া সুস্পষ্ট ডিম্বাকৃতি হইত। কাজেই বলিতে হইতেছে, নেপ্‌চুনের বাহিরে এখনো একাধিক বৃহৎ গ্রহ বর্ত্তমান আছে। সূর্য্য