পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রহদিগের কক্ষা
২৫৫

জর্জ্জ ডারুইন্ তাঁহার সিদ্ধান্ত অবলম্বন করিয়া যে এক অব্যাখ্যাত জ্যোতিষিক ব্যাপারের ব্যাখ্যা দিবার চেষ্টা করিয়াছেন, আমরা এখানে তাহারই আভাস দিব।

 পৃথিবী, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি প্রভৃতি ছোট বড় গ্রহগুলি, যে পথে সূর্য্যের চারিদিকে পরিভ্রমণ করিতেছে, সহস্র সহস্র বৎসরের পর্য্যবেক্ষণে গ্রহগণকে সেই সকল পথ হইতে একটুও বিচলিত হইতে দেখা যায় নাই। এই ব্যাপারটি আমাদের খুব সুপরিচিত হইলেও বড়ই বিস্ময়কর। কেবল ইহাই নয়, সূর্য্য হইতে বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল প্রভৃতি গ্রহের দূরত্ব পরিমাপ করিলে, দূরত্বগুলির মধ্যে যে এক অদ্ভুত শৃঙ্খলা দেখা যায়, তাহা আরো বিস্ময়কর। ১২, ২৪, ৪৮, ৯৬, এই সংখ্যাগুলির মধ্যে বেশ একটা শৃঙ্খলা আছে। ছয় তিনের দ্বিগুণ, বারো আবার ছয়ের দ্বিগুণ ইত্যাদি। কাজেই শূন্যকে ছাড়িয়া দিলে, পূর্ব্বোক্ত প্রত্যেক রাশিকে পূর্ব্ববর্ত্তী রাশির দ্বিগুণ হইতে দেখা যায়। এখন যদি প্রত্যেকের সহিত চারি যোগ করা যায়, তবে সংখ্যাগুলি-৪, ৭, ১০, ১৬, ২৮, ৫২, এবং ১০০ হইয়া দাঁড়ায়। বড়ই, আশ্চর্যের বিষয়, সূর্য্য হইতে বুধ, শুক্র, পৃথিবী ইত্যাদি গ্রহের দূরত্বের অনুপাত প্রায় ৪, ৭, ১০ ইত্যাদিরই অনুরূপ।

 গ্রহগণের দূরত্বের এই অদ্ভুত নিয়মটি জর্ম্মান জ্যোতিষী বোড্ (Bode) সাহেব হঠাৎ আবিষ্কার করিয়াছিলেন, কিন্তু তিনি বা তাঁহার পরবর্ত্তী কোন জ্যোতিষীই ইহার কারণ নির্দ্দেশ করিতে পারেন নাই। সৌরজগতের সীমান্তবর্ত্তী নেপচুন গ্রহটিকে ও তাহার উপগ্রহগণকে পূর্ব্বোক্ত নিয়ম মানিয়া চলিতে দেখা যায় না সত্য, কিন্তু তাই বলিয়া গ্রহ-বিন্যাসের নিয়মটি যে, প্রকৃতির একটা খেয়াল এ কথা কখনই বলা যায় না। গ্রহগণের কক্ষার (অর্থাৎ পরিভ্রমণ-পথের) স্থিরতা এবং সূর্য্য হইতে তাহাদের দূরত্বের শৃঙ্খলা যে, সৃষ্টির