পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরশ-পাথর
১৩

করিয়া হেলিয়ম্ হইয়া দাঁড়াইল, এই সমস্ত ভোজবাজি শক্তিরই লীলা। হিসাব করিয়া দেখিলেন, এক ঘন সেণ্টিমিটার (One Cubie Centimeter) স্থানে আবদ্ধ নাইটন্‌ বিশ্লিষ্ট হইয়া হেলিয়ম্ ইত্যাদিতে পরিণত হইলে, সেই আয়তনের চল্লিশ লক্ষ গুণ হাইড্রোজেন্‌কে পোড়াইলে যে তাপ উৎপন্ন হয়, সেই প্রকার তাপ আপনা হইতেই জন্মে। তিনি সুস্পষ্ট বুঝিতে পারিলেন, এই বিপুল শক্তিরাশি খুব নিবিড়ভাবে রেডিয়মেই লুক্কায়িত থাকে এবং রেডিয়ম্ নিজেকে ক্ষয় করিয়া যখন লঘুতর পদার্থে পরিণত হয়, তখন ঐ শক্তিই তাপের প্রকাশ করে। র‍্যাম্‌জে সাহেবের বিশ্বাস হইল, ব্রহ্মাণ্ডের সকল বস্তুতেই এই প্রকার বিশাল শক্তিস্তূপ সঞ্চিত আছে, এবং সেই সুরক্ষিত শক্তিভাণ্ডারের দ্বার খুলিয়া প্রকৃতিদেবী জগতে ভাঙাগড়ার ভেল্কি দেখান। রেডিয়মের ন্যায় গুরু ধাতু যখন তাহার অন্তর্নিহিত শক্তি ত্যাগ করিয়া নাইটন ও হেলিয়ম্ প্রভৃতি লঘুতর বস্তুতে পরিণত হইতেছে, তখন লঘু পদার্থের উপরে প্রচুর শক্তি প্রয়োগ করিয়া কেন তাহাকে গুরুতর পদার্থে পরিণত করা যাইবে না; —এই প্রশ্নটি র‍্যাম্‌জে সাহেবের মনে উদিত হইল। এই রাসায়নিক প্রক্রিয়াটি আবিষ্কার করিতে পারিলে লৌহকে স্বর্ণে পরিবর্তিত করা কঠিন হইবে না, ইহা সকলেই বুঝিতে লাগিলেন।

 প্রাকৃতিক কার্য্যের প্রণালী আবিষ্কার করা কঠিন নয়, কিন্তু যে-সকল উপকরণ সংগ্রহ করিয়া এবং যে অপরিমিত শক্তি প্রয়োগ করিয়া প্রকৃতি জগতের কার্য্য চালাইয়া থাকেন, তাহার অনুকরণ করা মানব-বিশ্বকর্ম্মার সাধ্যাতীত। র‍্যাম্‌জে সাহেব ইহা জানিয়াও কোন কৃত্রিম উপায়ে শক্তি প্রয়োগ করিয়া লঘু পদার্থকে স্বতন্ত্র গুরু পদার্থে পরিণত করিবার জন্য পরীক্ষা করিতে লাগিলেন। কিন্তু সে উপায় ধরা দিল না এবং রেডিয়ম্ বিযুক্ত হইবার সময়ে যে বিপুল শক্তি