পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রসায়নীবিদ্যার উন্নতি
১৯

রাসায়নিক সিদ্ধান্তে বৈজ্ঞানিকদিগের বিশ্বাস শিথিল হইয়া আসিতেছে। কেবল রেডিয়মের পরমাণুই এই প্রকারে বিভক্ত হয় না, ইউরেনিয়ম্ (Uraninm) প্রভৃতি আরো অনেক মূলপদার্থের পরমাণুকে এই প্রকারে বিশ্লিষ্ট হইতে দেখা গিয়াছে। এবং বিশ্লেষণের ফলে যে অতি সূক্ষ্ম কণিকার উৎপত্তি হইতেছে, তাহার আকৃতি-প্রকৃতি সকল জিনিষেই এক দেখা যাইতেছে। সকলে ভাবিতেছেন, এই অতিসূক্ষ্ম কণিকাগুলিই বিশ্বের একমাত্র উপাদান এবং ইহাদেরই সংযোগবিয়োগে তাম্রলৌহ, শিলামৃত্তিকা প্রভৃতি নানা যৌগিক-অযৌগিক বস্তু উৎপন্ন হইয়া জগতকে এত বিচিত্র ও এত সুন্দর করিয়া তুলিয়াছে। সুতরাং আভাস পাওয়া যাইতেছে যে, তাম্রলৌহ বা হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন প্রভৃতি সেই সত্তরটি মূলপদার্থের কোনটিই প্রকৃত মূলপদার্থ নয়, সেই রেডিয়ম্ প্রভৃতি ধাতুর দেহনির্গত সূক্ষ্ম কণাই বিশ্বে একমাত্র মূল জিনিষ।

 জগতের সমস্ত বস্তুই এক মূলপদার্থ দ্বারা গঠিত, এই মহাসত্যটির আভাস পাইয়া রসায়নশাস্ত্র কম গৌরবান্বিত হয় নাই। একই মহাশক্তিকে আশ্রয় করিয়া যে, একই পদার্থ বিচিত্র মূর্ত্তিতে প্রকাশ পাইতেছে, ইহা দেশবিদেশের দার্শনিকগণ বহু পূর্ব্বে প্রকারান্তরে স্থির করিয়াছিলেন। বিজ্ঞান আজ সেই পরম সত্যটিকে চাক্ষুষ দেখাইবার উপক্রম করিয়া ধন্য হইয়াছে।

 রেডিয়ম ধাতুর আবিষ্কারের ইতিহাস অনুসন্ধান করিলে দেখা যায়, ফ্রান্সের ভুবনবিখ্যাত পণ্ডিত ক্যুরি সাহেবের পত্নী মাডাম্ ক্যুরিই ইহার সন্ধান পাইয়াছিলেন। জনৈক মহিলা দ্বারা এই প্রকার একটা বৃহৎ আবিষ্কারের সূত্রপাত বড়ই বিস্ময়কর ব্যাপার। যাহা হউক রেডিয়ম্ আবিষ্কারের পর ফরাসী ও ইংরাজ বৈজ্ঞানিক ব্যতীত অপর কেহই এই জিনিষটি লইয়া নাড়াচাড়া করিতে পারেন নাই।