পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অদৃশ্য কিরণ
৫৭

গিয়াছে, এই কম্পনসংখ্যা সেকেণ্ডে ৩৮০০০ বার হইলে, শব্দ এতই চড়িয়া যায় যে, তাহা তখন আমাদের কর্ণ দ্বারা অনুভূত হয় না। আবার কম্পনসংখ্যা কমাইতে কমাইতে সেকেণ্ডে ৩০ বারের কম হইলে, শব্দ এতই গম্ভীর হইয়া পড়ে যে, তাহা আর কোনক্রমেই শ্রুতিগোচর হয় না। পরীক্ষা করিলে ইন্দ্রিয়াদির অসম্পূর্ণতা আমরা প্রতিপদক্ষেপেই দেখিতে পাই,—তাই দর্শনকার্য্যে চক্ষুর অপকর্ষতা লক্ষ্য করিয়া জনৈক খ্যাতনামা বৈজ্ঞানিক বলিয়াছিলেন,—“মানব-চক্ষুর ন্যায় একটা অসম্পূর্ণ স্থূল যন্ত্র নির্ম্মিত হইয়া বিক্রয়ার্থ প্রস্তুত থাকিলে, তাহা চিরকালই অবিক্রীত থাকিত।”

 পূর্ব্বোল্লিখিত অতীন্দ্রিয় কিরণের অস্তিত্ব ও তাহার প্রকৃতি অল্পদিনই হইল আবিষ্কৃত হইয়াছে,—একশত বৎসর পূর্ব্বে অদৃশ্য-কিরণের কথা কেহই জানিতেন না। গত ১৮০০ খৃঃ অব্দে উইলিয়ম্ হার্সেল, তাপমান যন্ত্র দ্বারা বর্ণচ্ছত্রস্থ বিবিধ আলোকের তাপ নির্দ্ধারণকালে, ইহার লোহিতাংশের ঠিক্ অব্যবহিত পূর্ব্বে সর্ব্বাপেক্ষা অধিক তাপের চিহ্ন দেখিয়া, ইহা নিশ্চয়ই বর্ণচ্ছত্রস্থ কোন অদৃশ্য আলোকরশ্মি দ্বারা উৎপন্ন হইতেছে বলিয়া সিদ্ধান্ত করেন। হার্সেলের এই আবিষ্কারের এক বৎসর পরে, আলোক দ্বারা নানা রাসায়নিক পদার্থ কি প্রকারে বিকৃতিপ্রাপ্ত হয় তাহার পরীক্ষাকালে, রিটার্ নামক জনৈক বিজ্ঞানবিৎ বর্ণচ্ছত্রের সকল বর্ণ অপেক্ষা ভায়লেটেরই রাসায়নিক শক্তি অতীব প্রবল বলিয়া স্থির করেন এবং ভায়লেটের পরবর্ত্তী আলোকহীন স্থানে, এই শক্তি আরো অধিক প্রত্যক্ষ করেন। কি প্রকারে বর্ণচ্ছত্রবহির্ভূত আলোকহীন স্থানে, এই অত্যাশ্চর্য্য রাসায়নিক শক্তি আসিল, অনেকদিন অবধি তাহা কেহই স্থির করিতে পারেন নাই। ইহার কিছুদিন পরে তাৎকালিক পণ্ডিতমণ্ডলীর অনেক চিন্তা ও অনুসন্ধানের ফলে, ইহা নিশ্চয়ই ভায়লেটৃ বর্ণোৎপাদক আলোকতরঙ্গ অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর তরঙ্গজাত