প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান "లల হইয়াছিলেন। র্তাহার। সৰ্ব্বতীর্থের জল দিয়া এই ভাষা-লক্ষ্মীকে সিংহাসনে অভিষিক্ত করিতে চাহিয়াছিলেন। আরাকানের রাজদরবার বৌদ্ধ, হিন্দু ও মুসলমান বিরচিত বাঙ্গল কাব্যের অন্ততম মুখ্যকেন্দ্রে পরিণত হইয়াছিল । পঞ্চদশ হইতে অষ্টাদশ শতাব্দীর বঙ্গ-সাহিত্য পর্য্যালোচনা করিলে দেখা যাইবে, কি পূৰ্ব্ববঙ্গে, কি পশ্চিম রাঢ় দেশে, প্রাচ্য বঙ্গের সীমান্তে আরাকানে বা চাকমা রাজ্যে, ভাগীরথী, পদ্মা ও কর্ণফুলীর তীরে, এক কথায় পেগু হইতে আসাম পর্যন্ত একটি বৃহৎ জনপদ বঙ্গীয় লেখকগণের তীর্থে পরিণত হইয়াছিল । আত্মপরিচয়, ইতিহাস ও ভূগোলের নাম নির্দেশক স্থানগুলি বাদ দিলে এই বিশাল সাহিত্য একই লক্ষণাক্রান্ত । না বলিয়া দিলে গ্রন্থকার হিন্দু, মুসলমান, কি বৌদ্ধ তাহ চেন যাইবে না,—ইহাই আমাদের সাহিত্যের এক জাতীয়ত্ব । জৈমুনী ভারত’-এর অনুবাদক শ্ৰীকরণ নন্দী চট্টগ্রাম হইতে আশ্রয়দাতা ছুটি খান সম্বন্ধে লিখিয়াছেন— “লস্কর পরাগল খানের তনয় । সমরে নির্ভয় ছুটি খান মহাশয় ॥ আজামুলম্বিত বাহু কমল লোচন । বিলাস-হৃদয়ে মত্ত গজেন্দ্র-গমন ॥ চতুঃষষ্ঠ কলা বসতি গুণের নিধি। পৃথিবীবিখ্যাত সে যে নিৰ্ম্মাইল বিধি। দাভা বলি কৰ্ণ সম অপার মহিমা । শৌর্য্যে, বীৰ্য্যে, গাম্ভীৰ্য্যের নাহিক উপমা ।” ‘পদ্মাবতী কাব্যে কবি আলোয়াল তাহার পৃষ্ঠপোষক মাগন ঠাকুর সম্বন্ধে লিখিয়াছেন— “দুৰ্ব্বাদল-শ্যাম তনু, মুখ পূর্ণচন্দ্র। দেখিয়া সুহৃদজন হৃদয় আনন্দ।
পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৭২
অবয়ব