পাতা:বংশ-পরিচয় (একাদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বগীয় মহারাজা শ্ৰীরামচন্দ্ৰ ভঞ্জদেব NSDS হৃদয়ে সুচীবোধ্য যাতনার সঞ্চার করিয়াছিল । তিনি সর্বদাই এই ভাবিদ্যা কাতর হইতেন যে, র্যাহাকে তিনি বিবাহ করিব বলিয়া বাকদান করিয়াছিলেন তাহার প্রতি-সেই তরুণী মহিলার প্রতি তিনি ঘোর অবিচার করিয়াছেন । বিশেষতঃ মহারাজা শ্ৰী রামচন্দ্রের প্রতি তাহার যে অসামান্য অনুরাগ ছিল তাহা স্মরণ করিয়া মহারাজ বড়ই ব্যথা অনুভব করিতেন । এই তরুণী মহিলা সুন্দরী ও গুণবতী ছিলেন। মহারাজের সহিত তাহার বিবাহ-সম্বন্ধ ভাঙ্গিয়া যাইলেও কয়েকটি সন্ত্রান্ত পরিবার হইতে তাহার সুম্বন্ধ আসিয়াছিল ; কিন্তু তিনি সে সকল প্ৰত্যাখ্যান করিয়াছিলেন । দিগদর্শন যন্ত্রের কঁাটা যেমন সর্বদাই উত্তরমুখে থাকে, তাহার হৃদয়ও তেমনই একমাত্ৰ মহারাজা শ্ৰীরামচন্দ্রের অনুরাগী ছিল । তিনি দেহ-মন-প্ৰাণ সকলই তাহার বাঞ্ছিত। শ্ৰী রামচন্দ্রের উদ্দেশে অৰ্পণ করিয়াছিলেন । মহারাজার সহিত লক্ষ্মীকুমারী দেবীর বিবাহের পর হইতে তিনি প্ৰায় চৌদ্দ বৎসর কাল নীরবে তাহার বাঞ্ছিতের উদ্দেশে প্ৰেমাঞ্জলি প্ৰদান করিয়া আসিতেছিলেন। তরুণী মানসীর এই একনিষ্ঠ তপস্যায় মহারাজা শ্ৰীীরামচন্দ্রের হৃদয় বিচলিত হইল। তিনি তখন সঙ্কল্প করিলেন-তাহার বাকদত্ত প্ৰণয়স্পদার প্রতি যে অবিচার হইয়াছে তাহার সংশোধন করিতে হইবে । কিন্তু এই সঙ্কল্পসিদ্ধির পথ কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। এই বিবাহে পূর্ববৎ প্রতিকূলতা বিদ্যমান ছিল। জাতি, ধৰ্ম্ম ও সামাজিক মৰ্য্যাদাদি এই বিবাহের বিরোধী হইয়াছিল। একদিকে ময়ূরভঞ্জের প্রজাবৃন্দ এই কারণে এই বিবাহে সন্মতি দান করিতেছিল না এবং অপর দিকে ব্ৰাহ্মনেতৃবৃন্দ পণ করিয়া বসিলেন যে, পাত্ৰ ব্ৰাহ্মধৰ্ম্মে দীক্ষিত না হইলে এ বিবাহ হইতেই পারে না । তাহার উপর আইনের দিক দিয়াও যথেষ্ট ভাবিবার বিষয় ছিল,-এ বিবাহ আইনতঃ সিদ্ধ হইবে কি না। অর্থাৎ এই বিবাহের ফলে যে সন্তান-সন্ততি জন্মগ্রহণ করিবে তাহারা