পাতা:বংশ-পরিচয় (ত্রয়োদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর RC* বলিয়াছিলেন, “কোনও বালিকা বিধবা হইয়াছে রিলিলে বিজ্ঞাসাগর কঁশদিয়া আকুল হইতেন। এই জন্য তঁহাকে বলিতাম, “তুমি কি ইহার কোন উপায় করিতে পার না ?” তাহাতে তিনি বলিতেন, “শাস্ত্ৰ প্ৰমাণ ভিন্ন বিধবা বিবাহ প্ৰচলন করা দুষ্কর ; আমি শাস্ত্ৰ-প্ৰমাণ-সংগ্ৰহ প্রবৃত্ত হইয়া'ছ ץ* বিধবা-বিবাহ-আন্দোলন বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ধারণা ছিল,-“তঁহার দেশবাসীদিগের প্ৰাচীন শাস্ত্রের প্রতি যেরূপ অনুরাগ তাহাতে যদি শাস্ত্রীয় বচন দ্বারা বিধবা-বিবাহের বৈধতা প্ৰতিপন্ন করিতে পারা যায়, তাহা হইলো লোকে তঁহার প্রদর্শিত পথে গমন করিবে । কিন্তু তাহার এই ধারণার ভ্রম তিনি পরে বুঝিতে পারিয়াছিলেন । বিধবাগণের বিবাহ শান্ত্রসিদ্ধ ইহা প্ৰমাণিত হইলেও লোক-ভয়, সমাজ-ভয়, দেশাচার বিধবাবিবাহের বিরুদ্ধে অটল পর্বতের মত বিদ্যমান ছিল । বিদ্যাসাগর মহাশয়, প্ৰথমে এই দেশাচারের বিষয় ভাবিয়া দেখেন নাই। তঁহার বিধবা-বিবাহ বিষয়ক গ্ৰন্থ প্ৰকাশিত হইবামাত্ৰ দেশময় তুমুল আন্দোলন উপস্থিত। হুইল । চারিদিকে হুলস্থূল বাধিল । হাটে বাজারে, পথে ঘাটে, যেখানে সেখানে এই চৰ্চা। প্রাচীন-পন্থীরা তঁহাকে পাষণ্ড, কুলাঙ্গার, দেশের শত্ৰু, ধৰ্ম্মের শত্রু ইত্যাদি নানাপ্রকার কটুক্তি করিতে লাগিল। দেশে প্রবল ঝড় বহিল। দ্বারে দ্বারে বিজ্ঞাপন প্রচারিত হইল-ষ্ণে বিন্যাসাগরের সহিত আহার করিবে অথবা তাহার মতে যাইবে, তাহাকে অবিলম্বে সমাজচ্যুত করা হইবে। কিন্তু বীর বিদ্যাসাগর ইহাতে একটুও বিচলিত হইলেন না। দেশ এক,দকে, সমাজ একদিকে, অন্যদিকে বিরাট পুরুষ বিদ্যাসাগর। তিনি কিছুতেই তাহার সঙ্কল্পচুত হইলেন না । এই দেশাচারের শক্তি সম্বন্ধে পণ্ডিত শিবনাথ শাস্ত্ৰা লিখিয়াছেন,