iz o বংশ-পরিচয় করিলাম, - “বাবা, পৃথিবীর আকার কি রকম ?” তিনি বলিলেন, “কোন বাবা, পৃথিবীর আকার গোল |” এই কথা বলিয়াই আমাকে একখানি পুথি দেখাইয়া দিলেন, বলিলেন, ঐ গোলাধ্যায় পুথিখানির অমুক স্থানটী দেখ দেখি।” আমি সেই স্থানটি বাহির করিয়া দেখিলাম তথায় লেখা রহিয়াছে- “করতল কলিতামিলক বদমলং বিদন্তি য গোলং।” বচনটি পাঠ করিয়া মনে একটু বলের সঞ্চার হইল। একখানি কাগজে ঐট টুকিয়া লইলাম। পরদিন স্কুলে আসিয়া রামচন্দ্ৰবাবুকে বলিলাম, “আপনি বলিয়াছিলেন, আমার বাবা পৃথিবীর গোলত্ব স্বীকার করিবেন না। কেন, বাবা ত পৃথিবী গোলই বলিয়াছেন, এই দেখুন। তিনি বরং এই শ্লোকটি আমাকে পুথির মধ্যে দেখাইয়া দিয়াছেন।” রামচন্দ্ৰবাবু সমস্ত দেখিয়া ও শুনিয়া বলিলেন, “কথাটা বলায় আমার একটু দোষ হইয়াছিল; তা তোমার বাবা বলবেন বৈ কি, তবে অনেক ব্ৰাহ্মণ পণ্ডিত এ বিষয়ে অনভিজ্ঞ ।” “রামচন্দ্ৰবাবুতে ও আমাতে যখন এই সকল কথা হয়, তখন ক্লাসের একটি ছেলের চক্ষু আমাতে বিশেষরূপ আকৃষ্ট দেখিতে পাইলাম ! বর্ণ কাল হইলেও ছেলেটা দেখিতে বেশ সুশ্ৰী, শরীর সতেজ, ললাট প্ৰশস্ত, চক্ষু দুইটি বড় বড় ও অতিশয় উজ্জ্বল, দেখিলে অতিশয় বুদ্ধিমান ও অধ্যবসায়শীল বলিয়া বোধ হয় । যতক্ষণ স্কুলে ছিলাম ততক্ষণই মধ্যে মধ্যে অতি তীব্র দৃষ্টিতে সে আমার দিকে চাহিতেছিল। ছুটির পর একেবারে আমার নিকটে আসিয়া সেকৃহাণ্ড করিয়া আমাকে জিজ্ঞাসা করিল, “ভাই তোমার নাম কি, কোথায় ঘর তোমার ? ইত্যাদি।” আমি তাহার এই অতিমিষ্ট সম্ভাষণ ও সৌজন্যে বিশেষ আপ্যায়িত হইয়া একে একে তৎকৃত সকল প্রশ্নগুলিরই উত্তর দিলাম। “ইনিই মধু। এই দিন হইতেই ইহার সহিত আমার ঘনিষ্ঠতা “আরম্ভ হইল এবং অত্যন্ত্রকালের মধ্যেই উভয়ে বিশেষ বন্ধুত্ব জন্মিল।