বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বংশ-পরিচয় (ষষ্ঠ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৪৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 y 8 st-effab রায়সাহেব রাধাগোবিন্দ রায় লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করিয়া স্বীয় পিতৃদেবের দানসাগর শ্ৰাদ্ধ মহাসমারোহে সম্পন্ন করেন । পিতা কমললোচনের পরলোক-গমনের পর যখন তিনি নিজহস্তে বিপুল ভার গ্ৰহণ করিলেন, তখন তঁাহার নব যৌবন । হিতোপদেশকার বলিয়াছেন, “যৌবনং ধনসম্পত্তিঃ প্ৰভুত্বমবিবেকত । একৈকমপ্যনর্থায় কিমু যত্র চতুষ্টয়ম।” যৌবন, ধনসম্পত্তি, প্ৰভুত্ব আর অবিবেকতা — এই চারিটাির একটাতে লোক মত্ত হইয়া পড়ে । দৈবক্রমে এই চারিটির একত্ৰ ংযোগ বা সমাবেশ হইলে মানুষ না করিতে পারে এমন দুস্ক্রিয়া নাই ; কিন্তু এই স্বৰ্গীয় মহাত্মা নবযৌবনে বিপুল সম্পত্তির অধিকারী এবং প্ৰভুত্ব-বিকাশের প্রচুর অবসর পাইয়াও অবিবেকতার দাস হইয়া পড়েন নাই। পরম বৈষ্ণব জনকের বৈরাগ্য, ভক্তি এবং সাধুত উত্তরাধিকারসূত্রে লাভ করিয়াছিলেন এবং বাল্য-কৈশোরে তাহার সুকুমার জীবনে স্বধৰ্ম্মপরায়ণ পুণ্যকীৰ্ত্তি পিতা কমললোচনের সাধু জীবনের আদর্শ প্ৰতিপালিত হইয়াছিল বলিয়াই, তিনি সকল রকম প্ৰলোভন এবং মোহজাল হইতে নিজেকে নিৰ্ম্ম,ভক্ত রাখিয়া ধৰ্ম্মজীবনে অগ্রসর হইতে সমর্থ হইয়াছিলেন বলিয়াই আজ তাহার যশোকুসুমের সৌরভে চতুৰ্দিক আমোদিত হইয়া রহিয়াছে। যে সময়ে তিনি কৰ্ম্মজীবনে প্ৰবেশ লাভ করেন, সে সময়ে বাঙ্গালার নব্য সম্প্রদায়ের মধ্যে এক মহাবিপ্লব ওতঃ প্ৰোতভাবে বহিয়া যাইতেছিল । একদিকে চাকচিক্যময় ফেরঙ্গ সভ্য - তার প্রবল অনুচিকীৰ্ষা, অন্যদিকে হিন্দুধৰ্ম্মের পুনজীবিত করণের প্ৰচেষ্টা । এই দোটানার মধ্যে পড়িয়া কত নব্য যুবক যে দিশেহারা হইয়া গিয়াছিলেন, তাহার সংখ্যা নাই । জীবনের এই মহাসন্ধিক্ষণে বঙ্গদেশের দশটী জেলার বিপুল সম্পত্তি, গঙ্গার জলোচ্ছাসের মত উদ্দাম যৌবন এবং অসীম প্ৰভুত্ব-বিস্তারের অবকাশ পাইয়াও তিনি বিলাসব্যসন হইতে দূরে থাকিয়া, যে অসাধারণ হৃদয় বলের পরিচয় দিয়া