পাতা:বংশ-পরিচয় (সপ্তম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিত্যানন্দ Ve S এক একজনের প্রাণে এক এক প্রকার ভাবের উপজয় হইল । কেহ।। বা রাধা ভাবে, কেহ বা যশোদা ভাবে শ্ৰীকৃষ্ণের ভাবনা করিতে করিতে আসিতে লাগিলেন, ফলে তদ্ভাবে ভাবিত হইয়া সকলেই বাহা জ্ঞানশূন্য হইলেন। পথিমধ্যে এইভাবে তাহারা কত বার যে প্ৰকৃত পথ রাখিয়া অন্য পথে গিয়া পড়িয়াছিলেন তাহার আর হয়ত্তা নাই । তার পর যে পথ আসিবেন দুইমাসে সেই পথ ছয়মাসে অতিক্ৰম করিয়া তাহার। গঙ্গাতীরে পাণিহাটি গ্রামে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। পাণিহাটিতে রাঘব পণ্ডিতের বাটী, তথায় সপরিষদ নিত্যানন্দ কিছুকাল অবস্থান করিলেন। এখানে দিনরাত সঙ্কীৰ্ত্তন চলিতে লাগিল ৷ কীৰ্ত্তনে সিদ্ধহস্ত মাধব ঘোষ আসিয়া নিত্যানন্দের সহিত যোগদান করিলেন । মাধব, গোবিন্দ ও বাসুদেব তিন ভাই মনের আনন্দে গান গাহিতে লাগিলেন, আর নিত্যানন্দ তাহদের সহিত নাচিতে লাগিলেন । তাহার ভাবোচ্ছাস-উদ্ভূত পদভরে পৃথিবী যেন কঁাপিতে লাগিল। নাচিয়; নাচিয়া গান শেষ হইলে নিত্যানন্দ খটার উপরে উপবেশন করিলেন এবং তঁহাকে অভিষেক করিবার জন্য ভক্তবৃন্দের প্রতি আদেশ করিালেন। রাঘবপণ্ডিত-প্রমুখ পারিষদগণ তাহাকে অভিষেক করিতে লাগিলেন । গঙ্গাজলে নিত্যানন্দকে স্নান করাই য়। নানা গন্ধে তাহার দেহ সুবাসিত করিয়া তাহাকে নুতন বসনে বিভূষিত করা হইল। দিব্য স্বর্ণখচিত খটার উপর প্রভুকে বসান হইল, রাঘবানন্দ তাহার শিরোদেশে ছাত্র ধারণ করিলেন । কতক্ষণে নিত্যানন্দ রাঘবানন্দের প্রতি আজ্ঞ; করিলেন, “দেখ আমি কদম্বপুষ্প বড় ভালবাসি, আমাকে কদম্বফুল আনিয়া দেও।” রাঘবানন্দ বলিলেন, “প্ৰভু এখন ত কদম্বের ফুল ফুটিবার সময় নহে ।” তদুত্তরে নি ত্যানন্দ বলিলেন, “একবার বাড়ীর ভিতর গিয়া ভাল করিয়া চতুর্দিকে চাহিয়াই দেখ, নিশ্চয়ই কদম্বের ফুল পাইবে ।”