পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 সতীশঠাকুর কহিলেন, “এই লাল দাগগুলি উপর হইতে নীচে নামার, আর নীল দাগগুলি নীচু হইতে উপরে উঠার।”

 সতীশঠাকুরের সারা বুকটা নীল ও লাল লাইনে চিত্রিত হইয়া একটি চিত্রব্যাঘ্রের রূপ লইয়াছে। ডাক্তারের নির্দেশমত বুকের ব্যথাটার গতিপথ অনুসরণ করিবার জন্য সতীশঠাকুর একটা লাল-নীল পেনসিলের সাহায্য লইয়াছেন, সেই চলমান ব্যথাটার উর্দ্ধ গতি নীল দাগ দিয়া অনুসৃত হইয়াছে আর নিম্নাভিমুখী গতিটা লাল দাগে চিহ্ণিত হইয়াছে। ফলে সারা বুকটা লাল-নীল পেনসিলের রেখায় বিচিত্র একটি গোলকধাঁধার পট চিত্র হইয়া দাঁড়াইয়াছে।

 ডাক্তারবাবুর শান্ত মুখে একটি শান্ত হাসি দেখা দিল। ডেটিনিউ বন্ধুরা সশব্দ হাসিতে ফাটিয়া পড়িলেন।

 সতীশবাবু ধমক দিলেন, “রোগীর সীটে অত হল্লা করবেন না, ওদিকে গিয়ে যত খুশী দাঁত বের করে হাসুন।”

 ডাক্তারবাবু কহিলেন, “আপনার কেসটা একেবারে নূতন; আমার এতদিনের অভিজ্ঞতায় এ রকম রোগ দেখিনি।”

 সতীশবাবু কাঁদ কাঁদ সুরে বলিলেন, “ডাক্তারবাবু বাঁচব তো?”

 —“ডাক্তারদের আশা ছাড়তে নেই। দেখুন আপনাকে এখন আমি ওষুধ দিতে চাইনে।”

 সতীশঠাকুর কহিলেন, “কেন? আপনি কি এ রোগের চিকিৎসা করতে পারবেন না?”

 —“পারব। আপাততঃ আপনাকে মেডিক্যাল গ্রাউণ্ডে রোজ একটা মুরগী, ৪টা কলা, ৪টা আপেল, ৪টা কমলা আর এক ছটাক মাখন দিচ্ছি। ক’দিন খেয়ে দেখুন। যদি উপকার না হয়, তখন ব্যবস্থা দেখা যাবে। কি বলেন?”

 —“আপনি যখন বলছেন, তখন আপনার কথা শুনতে হবে বৈকি!”

২০৯