পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 প্লাটফর্ম হইতে মোটা গলার ডাক আসিল—“অমলবাবু” ও অমলবাবু! কাণ্ড দেখ, ঘুমিয়ে পড়েছে—”

 ঘুমাইয়া পড়ি নাই, জাগিয়াই ছিলাম, কারণ চোখ বুজিয়াও জাগা চলে। চোখ মেলিলাম।

 শরৎবাবু ওয়েটিংরুমের দুয়ারের সামনে আসিয়া পৌঁছিলেন। ভিতরে ঢুকিতে গিয়া খেপিয়া গেলেন। উদ্যত পা পিছনে টানিয়া লইয়া কহিলেন —“হুঁ, কিসের মধ্যে বসে আছেন? বাইরে আসুন!”

 বলিয়া থুঃ শব্দে খানিকটা নিষ্ঠীবন মুখ ঘুরাইয়া অন্য দিকে নিক্ষেপ করিলেন এবং নাসিকায় হাতের পাতা চাপা দিয়া দুর্গন্ধটাকে ঠেকাইয়া রাখিলেন।

 বাহিরে যাইতে আমার কোন আপত্তি ছিল না, কিন্তু উঠিতে ইচ্ছা হইতেছিল না। মনের উপর হইতে মোহের আবেশ তখনও সম্পূর্ণ অপসারিত হয় নাই।

 কহিলাম—“ভেতরে আসুন, চেয়ার আছে।”

 —“থাক, চেয়ারের দরকার নেই। আপনি বাইরে আসুন।”

 উঠিবার কোন লক্ষণ না দেখাইয়াই প্রশ্ন করিলাম—“কেন?”

 —“কথা আছে। গতিক বড় খারাপ।”

 তবু উঠিলাম না। গতিক আর কি এমন খারাপ হইবে। টিকিয়া আছি, এই যথেষ্ট। তাছাড়া স্টেশনে আসিলেই একটা নটঘট নির্ঘাৎ বাধিবে, এমন যাত্রাই তো করিয়া বাহির হইয়াছি। অর্থাৎ আমার চোখেমুখে বোধ হয় এইরূপ একটা দার্শনিক ঔদাসীন্য ফুটিয়া থাকিবে। তাই শরৎবাবুকে বাধ্য হইয়াই ভিতরে আসিতে হইল। কারণ, কথা আছে এবং গতিক নাকি বড়ই খারাপ।

 প্রবেশ পথে বাধা ছিল। তাই বিপজ্জনক স্থানটুকু এক লম্ফে ডিঙ্গাইয়া শরৎবাবু তার মোটা শরীরটাকে ধপাস করে আমার কাছাকাছি এপারে

৩৪