পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২ i - শ্ৰী নীরব । “তোমার পুস্ত্য-নক্ষত্রস্থিত চন্দ্রে জন্ম ” ঐ নীরব । “গুহার বাহিরে আইস-—হাত দেখিব ।” তখন শ্ৰীকে বাহিরে আনিয়া, তাহার বামহস্তের রেখাসকল স্বামী নিরীক্ষণ করিলেন । খড়ি পাতিয়৷ জন্মশক, দিন, বার, তিথি, দণ্ড, পল সকল নিরূপণ করিলেন। পরে জন্মকুণ্ডলী অঙ্কিত করিয়া, গুহাস্থিত তালপত্র-লিখিত প্রাচীন পঞ্জিকা দেখিয়া, দ্বাদশভাগে গ্ৰহগণের যথাযথ সমাবেশ করিলেন, পরে শ্ৰীকে বলিলেন, “তোমার লগ্নে স্বক্ষেত্রস্ত পূৰ্ণচন্দ্র এবং সপ্তমে বুধ, বৃহস্পতি শুক্র তিনটি শুভগ্ৰহ আছেন । তুমি সন্ন্যাসিনী কেন মা ? তুমি যে রাজমহিষী ৷” * ঐ শুনিয়াছি, আমার স্বামী রাজা হইয়াছেন । আমি তাহ দেখি নাই । স্বামী । তুমি তাহ দেখিবে না বটে । এই সপ্তমস্থ বৃহস্পতি নীচস্ত এবং শুভগ্রহক্রয় পাপগ্রহের f ক্ষেত্রে পাপদৃষ্ট হইয়াছেন । তোমার অদৃষ্ট্রে রাজ্যভোগ নাই । ঐ তা কিছুই বুঝে না, চুপ করির রহিল । আরও একটু দেখিয়া স্বামীকে বলিল “আর কিছু দুর্ভাগ্য দেখিতেছেন ?" স্বামী চন্দ্র শনির ত্রি:শংশগত । ঐ । তাহাতে কি হয় ? স্বামী । তুমি তোমার প্রিয়জনের প্রাণহস্ত্রী | শ্ৰী আর বসিল না- - উঠিয়া চলিল'। স্বামী তাহাকে ইঙ্গিত করিয়া ফিরাক্টলেন । বলিলেন, “তিষ্ঠ । তোমার অদুষ্টে এক পরম পুণ আছে । তাহার সময় এখনও উপস্তিত হয় নাই । সময় উপস্থিত হইলে স্বামি-সনদর্শনে গমন করিও ” ঐ । কবে সে সময় উপস্তিত হইবে ? স্বামী । এখন তাহ। বলিতে পারিতেছি না । অনেক গণনার প্রয়োজন । সে সময়ও নিকট নহে । তুমি কোথা যাইতেছ ? ঐ । পুরুষোত্তমদর্শনে যাইব, মনে করিয়াছি । স্বামী । যাও । সময়াস্তরে, আগামী বৎসরে তুমি আমার নিকটে আসিও । সময় নির্দেশ করিয়া বুলিব । 韜

  • * জায়ন্থে চ শুভব্ৰয়ে প্রণয়িনী রাষ্ট্ৰী ভবেদ ভূপতেঃ।

+ মকরে । বঙ্কিমচঞ্জে গ্রন্থাবলী । তখন স্বামী সন্ন্যাসিনীকেও বলিলেন, “তুমিও আসিও ।” তখন গঙ্গাধর স্বামী বাক্যালাপ বন্ধ করিয়া ধ্যানস্ত হইলেন । সন্ন্যাসিনীদ্বয় তাহাকে প্রণাম করিয়া গুহা ইষ্টতে বহির্গত হইল । চতুর্দশ পরিচ্ছেদ আবার সেই সুগল সন্ন্যাসিনীমূৰ্ত্তি উড়িষ্যার রাজপথ আলে৷ করিয়া পুরুষোত্তমাভিমুখে চলিল। উড়িয়ার পথে সারি দিয়া দাড়াইয়৷ ষ্টা করিয়া দেখিতে লাগিল । কেহ আসিন্ন। তাহাদের পায়ের কাছে লম্ব হইয়৷ শুইয়। পড়িয়া বলিল, “মে মুণ্ডেরে চরড় দিবারে হউ " কেহ কেহ বলিল, “টিকে ঠিয়া হৈকিরি ম দুঃখ শুনিবারে হউ ।" সকলকে যথাসম্ভব উত্তরে প্রফুল্ল করির সুন্দরাদ্বয় চলিল । চঞ্চলগামিনী ঐকে একটু স্থির করিবার জঙ্গ সন্ন্যাসিনী বলিল, “ধীরে স্ব! গো বহিন ! একটু পীরে স । ছুটিলে কি অদৃষ্ট ছাড়াইয়! যাইতে পারিবি ?" স্নেহুসংস্থাপনে শ্রীর প্রাণ একটু জুড়াইল । তুষ্ট দিন সন্ন।াসিনীর সঙ্গে থাকিয়, শ্রী তাঙ্গকে ভালবাসিতে আরম্ভ করিয়াছিল । এষ্ট দুই দিন, মা ! বাছ ? বলিয়। কথা হইতেছিল, —কেন না, সন্ন্যাসিনী শ্রীর পূজনীয়৷ ৷ সন্ন। সিনী সে সম্বোপন ছাড়িয়া বহিন সম্বোধন কলাম শ্ৰী বুঝিল যে, সেগু ভালবাসিতে তার গু করিয়াছে । শ্রী পারে চলিল । সন্ন। সিনা পুলিতে লাগিল---“আর ম| বাঢ়। সম্বো পুল তোমার সঙ্গে পোসার ল --অামাদের দুজনেরই সমান বয়স, আমর। দুই জনে ভগিনী |" ই ! তুমিও কি আমার মত ছঃখে সংসার ত্যাগ করিয়াছ ? সপ্ল্যাসিনী । ভnমর সুখ-দুঃখ নাই । তেমন অদৃষ্ট নয় । তোমার ঘুখের কথা শুনিব । সে এখনকার কথা নয় । তোমার নাম এখনও পর্য্যস্ত জিজ্ঞাস করা হয় নাই –কি বলিয়া তোমায় ডাকিব ? இ তোমায় কি বলিয়া, ডাকিব ? সন্ন্যাসিনী । আমার নাম জয়ন্তী ! আমাকে তুমি নাম ধরিয়াই ডাকিও ; এখন তোমাকে আমার নাম ঐ ।