পাতা:বঙ্কিম-প্রসঙ্গ.djvu/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

§ বঙ্কিম-প্রসঙ্গ লাই। আজ নানা লেখা নানা মত নানা আলোচনা আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। আজ কোন দিন বা ভাবের স্রোত মন্দ হইয়৷ জাসে কোন দিন বা অপেক্ষাকৃত পরিপুষ্ট হইয় উঠে। এইরূপ হইয়া থাকে এবং এইরূপই হওয়া আবশুক। কিন্তু কাহার প্রসাদে এরূপ হওয়া সম্ভব হইল সে কথা স্মরণ করিতে হইবে। আমরা আত্মাভিমানে সৰ্ব্বদাই তাহা ভুলিয়া যাই। ভুলিয়া যে যাই তাহার প্রথম প্রমাণ, রামমোহন রায়কে জামাদের বর্তমান বঙ্গদেশের নিৰ্ম্মাণকৰ্ত্তা বলিয়া আমরা জানি না। কি রাজনীতি, কি বিদ্যাশিক্ষা, কি সমাজ, কি ভাষা, আধুনিক বঙ্গদেশে এমন কিছুই নাই রামমোহন রায় স্বহস্তে যাহার স্বত্রপাত করিয়া যান নাই। এমন কি, আজ প্রাচীন শাস্ত্রালোচনার প্রতি দেশের যে এক নূতন উৎসাহ দেখা যাইতেছে রামমোহন রায় তাহারও পথপ্রদর্শক। যখন নব শিক্ষাভিমানে স্বভাবতই পুরাতন শাস্ত্রের প্রতি অবজ্ঞা জন্মিবার সম্ভাবনা তখন রামমোহন রায় সাধারণের অনধিগম্য বিস্তৃত-প্রায় বেদপুরাণতন্ত্র হইতে সারোদ্ধার করিয়া প্রাচীন শাস্ত্রের গৌরব উজ্জ্বল রাখিয়াছিলেন। বঙ্গদেশ অন্ত সেই রামমোছন রায়ের নিকট কিছুতেই হৃদয়ের সহিত কৃতজ্ঞতা স্বীকার করিতে চাহে না। রামমোহন বঙ্গসাহিত্যকে গ্রাণিট স্তরের উপর স্থাপন করিয়া নিমজ্জনদশা হইতে উন্নত করিয়া তুলিয়াছিলেন, বঙ্কিমচন্দ্র তাহারই উপর প্রতিভার প্রবাহ চালিয়া গুরবন্ধ পলি স্কৃত্তিক ক্ষেপণ করিয়া গিয়াছেন। আজ খাংলাভাষ্ণ কেবল দৃঢ় বাসযোগ্য নহে, উর্বর শস্যামল হইয়া উঠিয়াছে।