পাতা:বঙ্কিম চন্দ্রের দীনবন্ধু-জীবনী.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দীনবন্ধু-জীবনী । VO) দীনবন্ধু । সজেই বুঝা যায় যে, ইহার মধ্যে দ্বিতীয় প্ৰথমের শিষ্য, এবং চতুর্থ তৃতীয়ের শিস্য। টেকচাদের সহিত হুতোমের যতদূর সাদৃশ্য, ঈশ্বর গুপ্তের সঙ্গে দীনবন্ধুর ততদূর সাদৃশ্য না থাকুক, অনেকদূর ছিল। প্ৰভেদ এই যে, ঈশ্বরগুপ্তের লেখায় ব্যঙ্গ ( Wit ) প্রধান ; দীনবন্ধুর লেখায় হাস্য প্রধান। কিন্তু ব্যঙ্গ এবং হাস্য উভয়বিধ রচনায় দুই জনেই পটু ছিলেন,-তুল্য পটু ছিলেন না । হাস্যরসে ঈশ্বরগুপ্ত দীনবন্ধুর সমকক্ষ নহেন । আমি যতদূর জানি, দীনবন্ধুর প্রথম রচনা “মানব-চরিত্র” নামক একটা কবিতা । ঈশ্বর গুপ্ত কত্ত্বক সম্পাদিত “সাধুরঞ্জন” নামক সাপ্তাহিক পত্রে উহ। প্ৰকাশিত হয় । অতি অল্প বয়সের লেখা, এজন্য ঐ কবিতায় অনুপ্ৰাসের অত্যস্ত আড়ম্বর । ইহাও, বোধ হয়, ঈশ্বর গুপ্তের প্রদত্ত শিক্ষার ফল । অন্যে ঐ কবিতা পাঠ করিয়া কিরূপ বোধ করিয়াছিলেন বলিতে পারি না, কিন্তু উহা আমাকে অত্যন্ত মোহিত করিয়াছিল । আমি ঐ কবিতা আদ্যোপাস্ত কণ্ঠস্ত করিয়াছিলাম, এবং যত দিন সেই সংখ্যার সাধুরঞ্জন খানি জীৰ্ণগলিত না হইয়াছিল, তত দিন উহাকে ত্যাগ করি নাই । সে প্ৰায় সাতাইশ বৎসর হইল ; এই কাল মধ্যে ঐ কবিতা আর কখন দেখি নাই ; কিন্তু ঐ কবিতা আমাকে এমনই মন্ত্ৰমুগ্ধ করিয়াছিল যে, অদ্যাপি তাহার কোন কোন অংশ স্মরণ করিয়া বলিতে পারি। পাঠকগণের ঐ কবিতা দেখিতে পাইবার সম্ভাবনা নাই, কেন না। উহা কখন পুনমুন্দিত হয় নাই । অনেকেই দীনবন্ধুর প্রথম রচনার দুই এক পংক্তি শুনিলেও প্রীত হইতে পারেন ; এজন্য স্মৃতির উপর নির্ভর করিয়া ঐ কবিতা হইতে দুই পংক্তি উদ্ধত করিলাম। উহার আরম্ভ এইরূপ মানব-চরিত্ৰ-ক্ষেত্রে নেত্ৰ নিক্ষেপিয়া । দুঃখানলে দহে দেহ, বিদরয়ে হিয়া ॥ একটী কবিতা এই-- যে দোষে সরাস হয়। সে জনে সরস । যে দোষে বিরাস হয়। সে জনে বিরাস ৷ আর একটিী যে নয়নে রেণু অণু আসি অনুমান । বায়সে হানিবে তায় তীক্ষা চন্ধু-বাণ ৷ -३टJांति ।