পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী পন্ডিত ইহারা কেহ তিন চারি বৎসর পর্য্যন্ত প্রভাকরের লেখক বন্ধর শ্রেণী মধ্যে ভুক্ত হইয়াছেন।” "শ্ৰীযক্ত হরচন্দ্র ন্যায়রত্ন ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয়, আমাদিগের সম্প্রদায়ের এক জন প্রধান সংযক্তি বন্ধ শ্যামাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় সহকারী সম্পাদকের ন্যায় তাবৎ কৰ্ম্মম সম্পন্ন করেন, অতএব ইহাদিগের বিষয় প্রকাশ করা অতিরেক মাত্র। বিশেষতঃ শেষোক্ত ব্যক্তির শ্রমের হস্তে যখন আমরা সমন্দিয় কৰ্ম্মম সমপণ করি, তখন তাঁহার ক্ষমতা সকলেই বিবেচনা করিবেন।” “রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় অসমন্দিগের সংযোজিত লেখক বন্ধ, ইহার সদগণি ও ক্ষমতার কথা কি ব্যাখ্যা করিব! এই সময়ে আমাদিগের পরম স্নেহান্বিত মত বন্ধ বােব প্রসন্নচন্দ্র ঘোষের শোক পািনঃ পািনঃ শেল সাবরাপ হইয়া হৃদয় বিদীর্ণ করিতেছে। যেহেতু ইনি রচনা বিষয়ে তাঁহার ন্যায় ক্ষমতা দশাইতেছেন, বরং কবিত্ব ব্যাপারে। ইহার অধিক শক্তি দন্ট হইতেছে। কবিতা নাত্তকীর ন্যায় অভিপ্ৰায়ের বাদ্য তালে ইহার মানসরাপ নাট্যশালায় নিয়ত নিত্য করিতেছে। ইনি কি গদ্য কি পদ্য উভয় রচনা দ্বারা পাঠকবগের মনে আনন্দ বিতরণ করিয়া থাকেন।” “ঠাকুরবংশীয় মহাশয়দিগের নামোল্লেখ করা বাহাল্য মাত্র, যেহেতু প্রভাকরের উন্নতি সৌভাগ্য। প্রতিস্ঠা প্রভৃতি যে কিছ তাহা কেবল ঐ ঠাকুরবংশের অনগ্রহ দ্বারাই হইয়াছে। মত বােব, যোগেন্দ্রমোহন ঠাকুর প্রথমতঃ ইহাকে স্থাপিত করেন। পরে বাবা কানাইলাল ঠাকুর ও গোপাললাল ঠাকুর, চন্দ্রকুমার ঠাকুর, নন্দলাল ঠাকুর, বাবা হরকুমার ঠাকুর, বােব প্রসন্নকুমার ঠাকুর, মত বাবা দ্বাবকানাথ ঠাকুর, বাব, রমানাথ ঠাকুর, বাবা মদনমোহন চট্টোপাধ্যায়, বাবা মথরানাথ ঠাকুর, বাব দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রভৃতি মহাশয়েরা আমাদিগের আশার অতীত কৃপা বিতরণ করিয়াছেন, এবং ইতাদিগের যত্নে অদ্যাপি অনেক মহাশয় আমাদিগের প্রতি যথোচিত স্নেহ করিয়া থাকেন।” “এই প্রভাকরের প্রতি বাবা গিরিশচন্দ্র দেব মহাশয়ের অত্যন্ত অনগ্রহ জন্য আমরা অত্যন্ত বাধা আছি। বিবিধ বিদ্যাতৎপর মহানভব বাবা কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় প্রভাকরের প্রতি আতিশয় স্নেহ করতঃ ইহার সৌভাগ্যবদ্ধন বিষয়ে বিপল চেন্টা করিয়া থাকেন। বাব রমাপ্রসাদ রায়, বাবা কাশীপ্রসাদ ঘোষ, বাবা মাধবচন্দ্র সেন, বােব রাজেন্দ্র দত্ত, বাবা হরচন্দ্র লাহিড়ী, বাবা অন্নদাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়, রায় বৈকুণ্ঠনাথ চৌধরিী, রায় হরিনারায়ণ ঘোষ প্রভৃতি মহাশয়েরা আমাদিগের পত্রে সমাদর করিয়া, উন্নতিকলেপ বিলক্ষণ যত্নশীল আছেন।” প্রভাকরের বর্ষ বদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে লেখক এবং সাহায্যকারী সংখ্যা বদ্ধি হইতে থাকে। বঙ্গদেশের প্রায় সমস্ত সম্প্রান্ত জমীদার এবং কলিকাতার প্রায় সমস্ত ধনবান এবং কৃতবিদ্য ব্যক্তি প্রভাকরের গ্রাহক ছিলেন। মাল্যদানে অসমৰ্থ অনেক ব্যক্তিকে ঈশ্বরচন্দ্র বিনামল্যে প্রভাকর দান করিতেন। তাহার সংখ্যাও ৩।৪ শত হইবে। উত্তর পশ্চিমাঞ্চল প্রভৃতি স্থানের প্রবাসী বাঙ্গালীগণও গ্রাহকশ্রেণীভুক্ত হইয়া নিয়ত স্থানীয় প্রয়োজনীয় সংবাদ পাঠাইতেন । সিপাহীবিদ্রোহের সময়ে সেই সকল সংবাদদাতা সংবাদ প্রেরণে প্রভাকরের বিশেষ উপকার করেন। প্রভাকর এই সময়ে বাঙ্গালার সংবাদপত্ৰসমহের শীর্ষস্থান অধিকার করিয়া লয়। ১২৫৩ সালে ঈশ্বরচন্দ্র “পাষণ্ডডপীড়ন” নামে একখানি পত্রের সম্মিট করেন। ১২৫৯ সালের ১লা বৈশাখের প্রভাকরে সংবাদপত্রের ইতিবত্ত মধ্যে ঈশ্বরচন্দ্র লিখিয়া গিয়াছেন, “১২৫৩ সালের আষাঢ় মাসের সপ্তম দিবসে প্রভাকর যন্ত্ৰে পায"ডপীড়নের জন্ম হইল। ইহাতে পাবে কেবল সৰ্ব্বজন-মনোরঞ্জন প্রকৃষ্ট প্রবন্ধপঞ্জি প্রকটিত হইত, পরে ৫৪ সালে কোন বিশেষ হেতুতে পাষণডপীড়ন, পাষণডপীড়ন করিয়া, আপনিই পাষণড হন্তে পীড়িত হইলেন। অর্থাৎ সীতানাথ ঘোষ নামক জনৈক কৃতঘর ব্যক্তি যাহার নামে এই পত্র প্রচারিত হয়, সেই অধাৰ্ম্মিমক ঘোষ বিপক্ষের সহিত যোগদান করতঃ ঐ সালের ভাদ্র মাসে পাষণডপীড়নের হেড চুরি করিয়া পলায়ন করিল, সতরাং আমাদিগের বন্ধগণ তৎপ্রকাশে বঞ্চিত হইলেন। ঐ ঘোষ উক্ত পত্র ভাস্করের করে দিয়া পাতরে আছড়াইয়া নন্ট করিল।” সম্পবাদ ভাস্কর-সম্পাদক গৌরীশঙ্কর তর্কবাগীশের সহিত ঈশ্বরচন্দ্রের অনেক দিন হইতেই মিত্রতা ছিল। ঈশ্বরচন্দ্ৰ ১২৫৩ সালের ২রা বৈশাখের প্রভাকরে লিখিয়া গিয়াছেন, “সবিখ্যাত পন্ডিত ভাস্কর-সম্পাদক তকদ্বাগীশ মহাশয় পর্ক্সেব বন্ধরিপে এই প্রভাকরের অনেক সাহায্য করিতেন, এক্ষণে সময়াভাবে আর সেরাপ পারেন না।” ১২৫৪ সালের ১লা বৈশাখের প্রভাকরে ঈশ্বরচন্দ্ৰ পনরায় লেখন, “ভাস্কর-সম্পাদক 88