পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী Struggle for existence? Survival of the Fittest! Lisą też 4 festiw চিরজয়ী। হোম সাহেবের কিছ মাত্ৰ দোষ নাই। দেশী, বিদেশী, সকল মনীষাই এই রােপ। সকলেই মিন্ট কথার বশ। অবোধ বাঙ্গালীরা আজকাল মিন্ট কথা ভুলিতেছে। হোম সাহেব একজন অতিশয় সািদক্ষ, সাবিজ্ঞ লোক। মাখ মচিরামও তাঁহাকে ভুলাইতে পারিল--কেবল মিন্ট কথার বলে । অন্টাম পরিচ্ছেদ মচিরামবাবা-এখন তিনি একটা ভারি রকম। বাবা, এখন তাঁহাকে শািন্ধ মচিরাম বলা যাইতে পারে না-মচিরামবােব পেস্কারি পাইয়া বড় ফাঁফরে পড়িলেন। বিদ্যাবদ্ধিতে পেস্কারি পর্যন্ত কুলায় না।--কাজ চলে কি প্রকারে ? “ভাগ্যবানের বোঝা ভগবানে বয়”-মচিরামবাবার বোঝা বাহিত হইল। ভজগোবিন্দ চক্ৰবত্তীর্ণ নামে একজন তাইদানবীশ সেই কালেক্টরী আপিসে থাকে। ভজগোবিন্দ বার বৎসর তাইদানবীশ আছে। সে বদ্ধিমান, কমঠ, কালেক্টরীর সকল কক্ষম কাজ বার বৎসর ধরিয়া শিখিয়াছে। কিন্তু মরবিব নাই—ভাগ্য নাই-এ পৰ্যন্ত কিছ হয় নাই। তাহার বাসা খরচ চলে না। মচিরাম তাহাকে অবলম্বন করিলেন। আপনার বাসায় লইয়া গিয়া রাখিলেন। ভজগোবিন্দ মচিরামের বাসায় থাকে, খায় পরে, গাহকৰ্ম্মে সহায়তা করে, রাত্রিকালে বাবার ঘরে বাহিরে মোসাহেবী করে, এবং আপিসের সমস্ত কাজ কাম করিয়া দেয়। মচিরাম তাহাকে টাকাটা সিকেটা দেওয়াইয়া দেন। ভজগোবিন্দের সাহায্যে মচিরামের কম কাজ রেলগাড়ির মত গড় গড় করিয়া চলিল। হোম সাহেব অনেক প্রশংসা করিতেন। বিশেষ মচিরাম বিশদ্ধ প্রণালীতে সেলাম করিত, এবং “মাই লাড” এবং “ইওর অনার" কিছতেই छाछऊ ना। মচিরামবােবর উপাত্তজনের আর সীমা রহিল না। হাতে অনেক টাকা জমিয়া গেল। ভজগোবিন্দ বলিল, “টাকা ফেলিয়া মাখিবার প্রয়োজন নাই।--তালিক মািলক করােন।” মচিরাম সম্মত হইলেন, কিন্তু যে যে জেলায় কৰ্ম্ম করে, সে জেলায় বিষয় খরিদ করা নিষেধ। ভজগোবিন্দ বলিল যে, বেনামীতে কিনন। কাহার বেনামীতে ? ভজগোবিন্দের ইচ্ছা, ভজগোবিন্দের নামেই বিষয় খরিদ হয়, কিন্তু সাহস করিয়া বলিতে পারিল না। এ দিকে মচিরাম কাহারও বাসায় গলপ শনিয়া আসিলেন যে, সন্ত্রীর অপেক্ষা আত্মীয় কেহ নাই। কথাটায় ভাঁহার সম্পপণ্য বিশ্বাস হইল কি না জানি না-কিন্তু মনে মনে ভাবিলেন যে, সন্ত্রীর নামে বিষয় করাই বেনামীর শ্রেণীঠ। এই এখনকার দেবত্র। আগে লোকে বিষয় করিত ঠাকুরের নামে—এখন বিষয় করিতে হয় ঠাকুরাণের নামে। উভয় স্থলেই বিষয়কত্তা “সেবাইত” মাত্র-পরম ভক্ত-পাদপদ্মে বিক্ৰীত। এইরুপ রাধাকান্ত জিউর স্থানে রাধামণি, শ্যামসন্দরের স্থানে শ্যামসন্দরী দেবী মালিক হওয়ায় ভাল হইয়াছে, কি মন্দ হইয়াছে, জানি না।--তবে একটা কথা বঝা যায়। বিষয় হস্তান্তরের কিছ সংবিধা হইয়াছে। দধি ভোজনের পক্ষে নেপোর খাব সংযোগ হইয়াছে। সন্ত্রীর বেনামীতে বিষয় করা শ্রেয়ঃ, ইহা মচিরাম বঝিলেন, কিন্তু এই সঙ্কলেস্প একটা সামান্য রকম বিঘা উপস্থিত হইল-মচিরামের সত্ৰী নাই। এ পৰ্যন্ত তাঁহার বিবাহ করা হয় নাই-অনকলেস্পর অভাব ছিল না। কিন্তু এ স্থলে অন কলপ চলিবে কি না, তদ্বিষয়ে পেস্কার মহাশয় কিছ সন্দিহান হইলেন। ভজগোবিন্দের সঙ্গে কিছ. বিচার হইল—কিন্তু ভজগোবিন্দ একপ্রকার বাবাইয়া দিল যে, এ স্থলে অন্যাকলপ চলিবে না। অতএব মচিরাম দারগ্রহণে কৃতসঙ্কলপ হইলেন। কোন কুল পবিত্র করিবেন, তাহার অন্বেষণ করিতেছিলেন, এমন সময়ে ভজগোবিন্দ জানাইল যে, তাহার একটি অবিবাহিতা ভগিনী আছে-ভজগোবিন্দের পিতৃকুল উক্তজবল করায় ক্ষতি নাই। অতএব মচিরাম একদিন সন্ধ্যার পর শােভ লগ্নে মাথায় টোপর দিয়া, হাতে সীতা বাঁধিয়া, এবং পট্টবস্ত্র পরিধান করিয়া ভদ্রকালী নাম্পানী ভজগোবিন্দের সহোদরাকে সৌভাগ্যশালিনী করিলেন। তাহার পর হইতে ভদ্রকালীর নামে অনেক জমিদারী পত্তানি ছলে, বলে, কলে, কৌশলে খরিদ হইতে লাগিল। ভদ্রকালী হঠাৎ জেলার মধ্যে একজন প্রধানা ভূম্যধিকারিণী হইয়া দাঁড়াইলেন। SSO