পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এ লাঠি এমনি মৰ্ম্মস্থানে বাজিয়াছিল যে, হিন্দগণ আপনা হইতেই চাঁদাতে সহি কারিয়া, প্রিবিকেন্সিলে আপীল করিতে উদ্যত! প্রধান প্রধান সম্পবাদপত্র, “হা সতীত্ব! কোথায় গেলি” বলিয়া ইংরেজি বাঙ্গালা সরে রোদন করিয়া “ওরে চাঁদা দে!” বলিয়া ডাকিতে লাগিলেন। শেষটা কি হইয়াছে জানি না; কেন না, দেশী সম্পবাদপত্র পাঠসমূখে আমরা ইচ্ছাক্রমে বঞ্চিত। কিন্তু যাহাই হউক, যাঁহারা এই বিচার অতি ভয়ঙ্কর ব্যাপার মনে করিয়াছিলেন, তাঁহাদিগকে আমাদিগের একটি কথা জিজ্ঞাস্য আছে। স্বীকার করি, অসতী সত্ৰী বিষয়ে বঞ্চিত হওয়াই বিধেয়, তাহা হইলে অসতীত্ব পাপ বড় শাসিত থাকে; কিন্তু সেই সঙ্গে আর একটি বিধান হইলে ভাল হয় না, যে লম্পট পরিষ অথবা যে পরিষ পত্নী ভিন্ন অন্য নারীর সংসগা করিয়াছে, সেও বিষয়াধিকারে অক্ষম হইবে ? বিষয়ে বঞ্চিত হইবার ভয় দেখাইয়া সত্ৰী দিগকে সতী করিতে চাও-সেই ভয় দেখাইয়া পরষগণকে সৎপথে রাখিতে চাও না কেন ? ধৰ্ম্মমন্দ্ৰিন্টা স্ত্ৰী বিষয় পাইবে না; ধৰ্ম্মম ভ্রন্ট পরিষ বিষয় পাইবে কেন ? ধৰ্ম্মমন্দ্রিস্ট পরিষ,-ষে লম্পট, যে চোর, যে মিথ্যাবাদী, যে মদ্যপায়ী, যে কৃতঘ্য, সে সকলেই বিষয় পাইবে; কেন না, সে পরিষ; কেবল অসতী বিষয় পাইবে না; কেন না, সে সত্ৰী ! ইহা যদি ধৰ্ম্মশাস্ত্র, তবে অধৰ্ম্মশাস্ত্র কি ? ইহা যদি আইন, তবে বেআইন কি ? এই আইন রক্ষাৰ্থ চাঁদা তোলা যদি দেশবাৎসল্য, তবে মহাপাতক কেমনতর ? সত্ৰীজাতির সতীত্বধৰ্ম্মম সব্বতোভাবে রক্ষণীয়, তাহার রক্ষাৰ্থ যত বাঁধন বাঁধিতে পাের, ততই ভাল, কাহারও আপত্তি নাই। কিন্তু পরিষের উপর কোন কথা নাই কেন ? পরিষ বারাস্ত্রীগমন করােক, পরদার নিরত হউক, তাহার কোন শাসন নাই কেন ? শাস্ত্রে ভুরি ভুরি নিষেধ আছে; সকলেই বলিবে, পরিষের পক্ষেও এ সকল অতি মন্দ কম, লোকেও একটা একটা নিন্দা করিবে—কিন্তু এই পর্যন্ত। সন্ত্রীলোকদিগের উপর যেরপ কঠিন শাসন, পরষদিগের উপর সেরাপ কিছই নাই। কথায় কিছ হয় না; ভ্রস্টা পরিষের কোন সামাজিক দন্ড নাই। একজন সত্ৰী সতীত্ব সম্পবন্ধে কোন দোষ করিলে সে আর মািখ দেখাইতে পারে না; হয়ত আত্মীয় সর্বজন তাহাকে বিষ প্রদান করেন; আর একজন পরিষ প্রকাশ্যে সেইরােপ কাৰ্য্য করিয়া রোশনাই করিয়া, জড়ি হাঁকাইয়া রাত্রিশেষে পত্নীকে চরণরেণ। সপশ করাইতে আসেন; পত্নী পলকিত হয়েনা; লোকে কেহ কষ্ট করিয়া অসাধাবাদ করে না; লোকসমাজে তিনি যেরপে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন, সেইরােপ প্রতিষ্ঠিত থাকেন, কেহ তাঁহার সহিত কোন প্রকার ব্যবহারে সংকুচিত হয় না; এবং তাঁহার কোন প্রকার দাবি দাওয়া থাকিলে সবচ্ছন্দে তিনি দেশের চড়া বলিয়া প্ৰতিভাত হইতে পারেন। এই আর একটি গারতের বৈষম্য। আর একটি অন্যচিত বৈষম্য এই যে, সব্বনিম্নশ্রেণীর সন্ত্রীলোক ভিন্ন, এদেশীয় স্ত্রীগণ উপাৰ্জন করিতে পারে না। সত্য বটে, উপাত্তজনকারী পরিষেরা আপন আপন পরিবারস্থা সত্ৰীগণকে প্রতিপালন করিয়া থাকে। কিন্তু এমন সত্ৰী অনেক এ দেশে আছে যে, তাহাদিগকে প্রতিপালন করে, এমন কেহই নাই। বাঙ্গালার বিধবা সত্ৰীগণকে বিশেষতঃ লক্ষ্য করিয়াই আমরা লিখিতেছি। অনাথা বঙ্গবিধবাদিগের অন্নকৰ্ম্মট লোকবিখ্যাত, তাহার বিস্তারে প্রয়োজন নাই। তাহারা উপাত্তজন করিয়া দিনপাত করিতে পারে না, ইহা সমাজের নিতান্ত নিম্ঠারতা। সত্যু বটে, দাসীত্ব বা পাচিকাব্যত্তি করিবার পক্ষে কোন বাধা নাই, কিন্তু ভদ্রলোকের সত্ৰী কন্যা। এ সকল বত্তি করিতে সক্ষম নয়-তদপেক্ষা মহত্যুতে যন্ত্রণা অলপ। অন্য কোনপ্রকারে ইহারা যে উপাত্তজন করিতে পারে না, তাহার তিনটি কারণ আছে। প্রথমতঃ, তাহারা দেশী সমাজের রীত্যনসারে গাহের বাহির হইতে পারে না। গাহের বাহির না হইলে উপাতজন করার অলপ সম্ভাবনা। দ্বিতীয়, এ দেশীয় স্ত্ৰীগণ লেখাপড়া বা শিলপাদিতে সশিক্ষিতা নহে; কোনপ্রকার বিদ্যায় সশিক্ষিত না হইলে কেহ উপাত্তজন করিতে পারে না। তৃতীয়, বিদেশী উমেদওয়ার এবং বিদেশী শিলপীরা প্রতিযোগী; এ দেশী পরিষেই চাকরি, ব্যবসায়, শিলপ বা বাণিজ্যে অন্ন করিয়া সম্ভকুলান করিয়া উঠিতে পারিতেছে না, তাহার উপর সত্ৰীলোক প্রবেশ করিয়া কি করিবে ? এই তিনটি বিঘা নিরাকরণের একই উপায়-শিক্ষা। লোকে সশিক্ষিত হইলে, বিশেষতঃ সত্ৰীগণ সশিক্ষিতা হইলে, তাহারা অনায়াসেই গহমধ্যে গগুপ্ত থাকার পদ্ধতি অতিক্ৰম করিতে পরিবে। শিক্ষা থাকিলেই, অথোেপাল্যজনে নারীগণের ক্ষমতা জলিমবে। এবং এ দেশী uuuB BDB BD DDD DBDBDDB BBS DBBDD BDBBBDS DBDu uuiBu DDD 8O