পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७िका ब्राफ़माब्ब्जी লাগিলেন। তখন রাজপত্ৰ মনে কি ভাবিতেছিলেন কে বলিবে ? চক্ষতে জল আসিয়াছিল। কি না কে বলিবে ? রাজকুমার একাকী কারাগারে তিলোত্তমাকে লইয়া অত্যন্ত ব্যস্ত হইলেন। যদি আয়েষার নিকট সংবাদ যাইতে না পারে, যদি আয়েষা কোন উপায় করিতে না পারেন, তবে কি হইবে ? তিলোত্তমার ক্ৰমে অলপ অলপ চেতনা হইতে লাগিল। সেই ক্ষণেই মক্ত দবারপথে জগৎসিংহ দেখিতে পাইলেন যে, প্রহরীর সঙ্গে দাইটি স্ত্রীলোক আসিতেছে, একজন অবগঠিনবতী । দর হইতেই, অবগন্ঠনবতীর উন্নত শরীর, সঙ্গীতমধর-পদবিন্যাস, লাবণ্যময় গ্রীবাভঙ্গী দেখিয়া রাজপত্র জানিতে পারিলেন যে, দাসীসঙ্গে আয়েষা স্বয়ং আসিতেছেন, আর যেন अ७6ा अ७6ा उठद्जा ख्वाज6उ56छ । আয়েষা ও দাসী প্রহরীর সঙ্গে কারাগার-দাবারে আসিলে, দবাররক্ষক, অঙ্গরীয়বাহক প্রহরীকে জিজ্ঞাসা করিল, “ইহাদেরও যাইতে দিতে হইবে কি ?” অঙ্গরীয়বাহক কহিল, “তুমি জান——আমি জানি না।” রক্ষী কহিল, ‘উত্তম।“ এই বলিয়া সত্ৰীলোকদিগকে কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিতে নিষেধ করিল। নিষেধ। শনিয়া আয়েষা মাখের অবগন্ঠন মক্ত করিয়া কহিলেন, “প্রহরী, আমাকে প্রবেশ করিতে দাও ; যদি ইহাতে তোমার প্রতি কোন মন্দ ঘটে আমার দোষ দিও !" প্রহরী আয়েষাকে চিনিত না। কিন্তু দাসী চুপি চুপি পরিচয় দিল। প্রহরী বিস্মিত হইয়া অভিবাদন করিল এবং করযোড়ে কহিল, “দীনের অপরাধ মাতজনা হয়, আপনার কোথাও যাইতে নিষেধ নাই ।” আয়েষা কারাগারমধ্যে প্রবেশ করিলেন। সে সময়ে তিনি হাসিতেছিলেন না, কিন্তু মািখ সম্ভবতঃ সহস্য; বোধ হইল হাসিতেছেন। কারাগারের শ্ৰী ফিরিল ; কাহারও বোধ রহিল না যে, এ কারাগার । আয়েষা রাজপত্রকে অভিবাদন করিয়া কহিলেন, “রাজপত্রে! এ কি সংবাদ ?” রাজপত্র কি উত্তর করিবেন ? উত্তর না করিয়া অঙগালিনিন্দেশে ভূতলশায়িনী তিলোত্তমাকে দেখাইয়া দিলেন। আয়েষ্যা তিলোত্তমাকে নিরীক্ষণ করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “ইনি কে ?” রাজপত্র সঙ্কুচিত হইয়া কহিলেন, “বীরেন্দ্ৰসিংহের কন্যা।” আয়েষা তিলোত্তমাকে কোলে করিয়া বসিলেন। আর কেহ কোনরাপ সঙ্কোচ করিতে পারিত; সাত পাঁচ ভাবিত ; আয়েষ্যা একেবারে ক্লোড়ে তুলিয়া লইলেন। আয়েষা যাহা করিতেন, তাহাই সন্দের দেখাইত; সকল কায্য সন্দির করিয়া করিতে পারিতেন। যখন তিলোত্তমাকে ক্লোড়ে লইয়া বসিলেন, জগৎ সিংহ আর দাসী উভয়েই মনে মনে ভাবিলেন, কি সন্দির!” দাসীর হস্ত দিয়া আয়েষা গোলাব সরবত প্রভৃতি আনিয়াছিলেন; তিলোত্তমাকে তৎসমদায় সেবন ও সেচন করাইতে লাগিলেন। দাসী ব্যজন করিতে লাগিল, পকেবা তিলোত্তমার চেতনা হইয়া আসিতেছিল; এক্ষণে আয়েষার শাশ্রষায় সম্পণেরপে সংজ্ঞাপ্ৰাপত হইয়া উঠিলেন। চারি দিক চাহিবামাত্র পািকব কথা মনে পড়িল : তৎক্ষণাৎ তিলোত্তম কক্ষ হইতে নিৰৱকান্ত হইয়া যাইতেছিলেন, কিন্তু এ রাত্রির শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমে শীর্ণ তন অবসন্ন হইয়া আসিয়াছিল; যাইতে- পারিলেন না, পািব্ব কথা সমরণ হইবামাত্র মস্তক ঘণিত হইয়া আমনি আবার বসিয়া পড়িলেন। আয়েষ্যা তাঁহার হস্ত ধরিয়া কহিলেন, “ভীগি নি! তুমি কেন ব্যস্ত হইতেছে ? তুমি এক্ষণে অতি দািববল, আমার গহে গিয়া বিশ্রাম করিবে চলে, পরে তোমার যখন ইচ্ছা তখন অভিপ্রেতি সন্থানে তোমাকে পাঠাইয়া দিব।” তিলোত্তমা উত্তর করিলেন না। আয়েষা প্রহরীর নিকট, সে যতদর জানে, সকলই শনিয়াছিলেন, অতএব তিলোত্তমার মনে সন্দেহ আশঙ্কা করিয়া কহিলেন, “আমাকে অবিশবাস করিতেছ। কেন ? আমি তোমার শত্রকন্যা বটে, কিন্তু তাই বলিয়া আমাকে অবিশবাসিনী বিবেচনা করিও না! আমার হইতে কোন কথা প্রকাশ হইবে না। রাত্রি অবসান হইতে না হইতে যেখানে যাইবে, সেইখানে দাসী দিয়া পাঠাইয়া দিব। কেহ কোন কথা প্রকাশ করিবে না।” N RO