পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙিকম রচনাবলী মাধবাচায্য বিস্মিত হইয়া কহিলেন, “সে কি! আমি ভাবিতেছিলাম যে, তুমি কালিকার কথায় মণিালিনীকে চিত্ত হইতে দীর করিযাছিলে!” হেমচন্দ্র পকেবর ন্যায় মন্দভাবে বলিলেন, “মণালিনী অত্যাজ্য। তিনি আমার পরিণীতা সত্ৰী ? মাধবাচাৰ্য্য চমৎকৃত হইলেন । রাস্ট হইলেন। ক্ষোভ করিয়া কহিলেন, “আমি ইহার কিছ জানিলাম না ?” হেমচন্দ্র তখন আদ্যোপােন্ত তাঁহার বিবাহের বক্তান্ত বিবত করিলেন। শনিয়া মাধবাচায্য কিছশক্ষণ মৌনী হইয়া রহিলেন। কহিলেন, “যে সত্ৰী অসদাচারিণী, সে ত শাস্ত্রানসাবে ত্যাজ্যা। মণিালিনীর চরিত্রসম্বন্ধে যে সংশয়, তাহা কালি প্রকাশ করিয়াছি।” তখন হেমচন্দ্র ব্যোমকেশের বক্তান্ত সকল প্রকাশ করিয়া বলিলেন। শনিয়া মাধবাচাৰ্য্য আনন্দ প্রকাশ করিলেন। কহিলেন, “বৎস! বড় প্রীত হইলাম। তোমার প্রিয়তমা এবণ8 গণিবতী ভাৰ্য্যাকে তোমার নিকট হইতে বিষাক্ত করিয়া তোমাকে অনেক ক্লেশ দিয়াছি। এক্ষণে আশীৰ্ব্বাদ করিতেছি, তোমরা দীঘজীবী হইয়া বহকাল একত্ৰ ধৰ্ম্মাচরণ করা। যদি তুমি এক্ষণে সস্ত্রীক হইয়াছ, তবে তোমাকে আর আমি আমার সঙ্গে কামরাপ যাইতে অননুরোধ করি না। আমি আগ্ৰে যাইতেছি। যখন সময় বঝিবেন, তখন তোমার নিকট কামরপাধিপতি দতে প্রেবণ করিবেন। এক্ষণে তুমি বধকে লইয়া মাথারায় গিয়া বাস কর-অথবা অন্য অভিপ্রেত সথানে বাস করিও ।” এইরপ কথোপকথনের পর, হেমচন্দ্র মাধবাচায্যের নিকট বিদায় লইলেন। মাধবাচাৰ্য্য আশীৰ্ব্ববাদ, আলিঙ্গন করিয়া সাশ্রলোচনে তাঁহাকে বিদায় করিলেন। ত্ৰয়োদশ পরিচ্ছেদ ঃ মহম্মদ আলির প্রায়শিচত্ত যে রাত্রে রাজধানী যবন-সেনা-বিপলিবে পীড়িত হইতেছিল, সেই রাত্রে পশপতি একাকী কারাগারে অবরািন্ধ ছিলেন । নিশাবশেষে সেনা-বিপলব সমাপত হইয়া গেল। মহম্মদ আলি তখন তাঁহার সম্ভাষণে আসিলেন। পাশপাতি কহিলেন, ‘যবন -প্রিয়-সম্ভাষণে আর আবশ্যকতা নাই। একবার তোমারই প্রিয়সম্ভাষণে বিশ বাস করিয়া এই অবস্থাপন্ন হইয়াছি। বিধমীর্ণ যবনকে বিশ্ববাস করিবার যে ফল, তাহা প্রাপিত হইয়াছি। এখন আমি মাতৃত্যু শ্রেয় বিবেচনা করিয়া অন্য ভরসা ত্যাগ করিয়াছি। তোমাদিগের কোন প্রিয়সম্পভাষণ শনিব না।” মহম্মদ আলি কহিল, “আমি প্রভুর আজ্ঞা প্রতিপালন করি—প্রভুর আজ্ঞা প্রতিপালন করিতে আসিয়াছি। আপনাকে যবনবেশ পবিধান করিতে হইবে।” পশপতি কহিলেন, “সে বিষয়ে চিত্ত স্থির করন। আমি এক্ষণে মাতু্য স্থির করিয়াছি। প্রাণত্যাগ করিতে স্বীকৃত আছি—কিন্তু যবনধৰ্ম্ম অবলম্বন করিব না।” ম। আপনাকে এক্ষণে যবনধৰ্ম্মম অবলম্বন করিতে বলিতেছি না। কেবল রাজপ্রতিনিধির তৃপিতির জন্য যবনের পোষাক পরিধান করিতে বলিতেছি। প। ব্রাহ্মণ হইয়। কি জন্য মেলচ্ছের বেশ পরিব ? ম। আপনি ইচ্ছাপত্ত্বক না পবিলে, আপনাকে বলপ্যন্ত্বক পরাইব । অস্বীকারে লাভের E키T5 5 IR | পশপতি উত্তর করিলেন না। মহম্মদ আলি স্বহস্তে তাঁহাকে যবনবেশ পরাইলেন। কহিলেন, “আমার সঙ্গে আসন।” প। কোথায় যাইব ? ম। আপনি বন্দী——জিজ্ঞাসার প্রয়োজন কি ? মহম্মদ আলি তাঁহাকে সিংহদ্বারে লইয়া চলিলেন। যে ব্যক্তি পশতুপতির রক্ষায় নিযঞ্জ ছিল, সেও সঙ্গে সঙ্গে চলিল । দ্বারে প্রহরিগণের জিজ্ঞাসামতে মহম্মদ আলি আপন পরিচয় দিলেন ; এক সঙেকত করিলেন। প্ৰহারিগণ তাঁহাদিগকে যাইতে দিল। সিংহদ্বার হইতে নিক্সোন্ত হইয়া তিন জনে কিছ: দর রাজপথ অতিবাহিত করিলেন। তখন যবন সেনা নগরমন্থন সমাপন করিয়া বিশ্রাম করিতেছিল; 8 Gk ܓ