পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बर्ताऽका ब्राbन्मादब्लारी বন্ধ করা, অলপ বয়সে বিবাহ বন্ধ কর, জাতি উঠাইয়া দেও, সত্ৰীলোকগণ এক্ষণে গোেরর মত গোেহালে বাঁধা থাকে—দাঁড়ি খলিয়া তাহাদিগকে ছাড়িয়া দাও, চরিয়া খাকা। আমার গোর নাই, পরের গোেহালের সঙ্গেও আমার বিশেষ সম্পবন্ধ নাই। জাতি উঠাইতে আমি বড় রাজি নহি, আমি তত দীর আজিও সশিক্ষিত হই নাই। আমি এখনও আমার ঝাড়দারের সঙ্গে একত্রে বসিয়া খাইতে অনিচ্ছােক, তাহার কন্যা বিবাহ করিতে অনিচ্ছক, এবং যে গালি শিরোমণি মহাশয় দিলে নিঃশব্দে সহিব, ঝাড়দারের কাছে তাহা সহিতে অনিচ্ছক। সতরাং আমার জাতি থাকুক। বিধবা বিবাহ করে করােক, ছেলে পলেরা আইবড়ো থাকে থাকুক, কুলীন ব্রাহ্মণ এক পত্নীর যন্ত্রণায় খসী হয় হউক, আমার আপত্তি নাই; কিন্তু তাহার পোষকতায় লোকের কি হিত হইবে, তাহা আমার বদ্ধির অতীত। সতরাং এ বঙ্গসমাজে আমার কোন কাৰ্য্য নাই। এখানে আমি কেহ নহি—আমি কোথাও নাহি। আমি, আমি, এই পৰ্য্যন্ত; আর কিছ নাহি। আমার সেই দঃখ। আর কিছ দঃখ নাই—লবঙ্গলতার হস্তলিপি ভুলিয়া যাইতেছি। পণ8ম পরিচ্ছেদ আমার এইরােপ মনের অবস্থা, আমি এমত সময়ে—কাশীধামে গোবিন্দ দত্তের কাছে রজনীর নাম শানিলাম। মনে হইল, ঈশবর আমাকে বঝি একটি গােরােতর কায্যের ভার দিলেন। এ সংসারে আমি একটি কাৰ্য্য পাইলাম। রজনীর যথার্থ উপকার চেস্টা করিলে করা যায়। আমার ত কোন কাজ নাই—এই কাজ কেন করি না । ইহা কি আমার যোগ্য কাজ নাহে ? এখানে শচীন্দ্রের বংশাবলীর পরিচয় কিছ দিতে হইল। শচীন্দ্রনাথের পিতার নাম রামসদয় মিত্র; পিতামহের নাম বাঞ্ছারাম মিত্র; প্রপিতামহের নাম কেবলরাম মিত্র। তাঁহাদিগের পৰ্ব্বব্যাপােরষের বাস কলিকাতায় নহে!—তাঁহার পিতা প্রথমে কলিকাতায় বাস করেন। তাঁহাদিগের পৰবৰ্ণপরিষের বাস ভবানীনগর গ্রামে। তাঁহার প্রপিতামহ দরিদ্র নিঃস্ব ব্যক্তি ছিলেন। পিতামহ বন্দিধবলে ধন সঞ্চয় করিয়া তাঁহাদিগের ভোগ্য ভূসম্পত্তি সকল ক্লয় করিয়াছিলেন। বাঞ্ছারামের এক পরম বন্ধ ছিলেন, নাম মনোহর দাস। বাঞ্ছারাম মনোহর দাসের সাহায্যেই এই বিভবের অধিপতি হইয়াছিলেন। মনোহর, প্ৰাণপাত করিয়া তাঁহার কায্য করিতেন, নিজে কখন ধনসঞ্চয় করিতেন না। বাঞ্ছারাম তাঁহার এই সকল গণে অত্যন্ত বাধ্য ছিলেন। মনোহরকে সহোদরের ন্যায়। ভালবাসিতেন ; এবং মনোহর বয়োজ্যোিঠ বলিয়া জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার ন্যায়। তাঁহাকে মান্য করিতেন। তাঁহার পিতার সঙ্গে পিতামহের তােদশ সম্প্রীতি ছিল না। বোধ হয়, উভয় পক্ষেরই কিছ, কিছ, দোষ ছিল। একদা রামসদায়ের সঙ্গে মনোহর দাসের ঘোরতর বিবাদ উপস্থিত হইল। মনোহর দাস বাঞ্ছারামকে বলিলেন যে, রামসদয় তাঁহাকে কোন বিষয়ে সহনাতীত অপমান করিয়াছেন। অপমানের কথা বাঞ্ছারামকে বলিয়া, মনোহর তাঁহার কায্য পরিত্যাগ করিয়া সপরিবারে ভবানীনগর হইতে উঠিয়া গেলেন। বাঞ্ছারাম মনোহরকে অনেক অনানয় বিনয় করিলেন ; মনোহর কিছই শনিলেন না। উঠিয়া কোন দেশে গিয়া বাস করিলেন, তাহাও কাহাকে জানাইলেন না। বাঞ্ছারাম রামসদায়ের প্রতি যত স্নেহ করন বা না করন, মনোহরকে ততোধিক স্নেহ করিতেন। সতরাং রামসদায়ের উপর তাঁহার ক্ৰোধ অপরিসীম হইল। বাঞ্ছারাম অত্যন্ত কটক্তি করিয়া গালি দিলেন, রামসদয়ও সকল কথা নিঃশব্দে সহ্য করিলেন না। পিতা পত্রের বিবাদের ফল। এই দাঁড়াইল যে, বাঞ্ছারাম পত্রিকে গহবহিস্কৃত করিয়া দিলেন। পত্ৰও গািহত্যাগ করিয়া, শপথ করিলেন, আর কখনও পিতৃভবনে মািখ দেখাইবেন না। বাঞ্ছারাম রাগ করিয়া এক উইল করিলেন। উইলে লিখিত হইল যে, বাঞ্ছারাম মিত্রের সম্পত্তিতে তস্য পত্ৰ রামসদয় মিত্র কখন অধিকারী হইবেন না। বাঞ্ছারাম মিত্রের অবত্তমানে মনোহর দাস, মনোহর দাসের অভাবে মনোহরের উত্তরাধিকারিগণ অধিকারী হইবেন ; তদভাবে রামসদায়ের পত্রিপৌত্ৰাদি যথাক্ৰমে, কিন্তু রামসদয় নহে। রামসদয় গহত্যাগ করিয়া প্রথমা সন্ত্রীকে লইয়া কলিকাতায় আসিলেন। ঐ সত্রীর কিছ: পিতৃদত্ত অর্থ ছিল। তদবলম্বনে, এবং একজন সঙ্জন বণিক সাহেবের আনকল্যে তিনি ○ Obf