পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বণ্ডিকমণ রচনাবলী ব্ৰজ | কোথায় ? একবার দেখা হয় না ? ব্ৰহ্ম। হাঁ। আমি দেখা করিয়ে দিয়ে তোমার বাপ-মার দ্য চক্ষের বিষ হই! তার চেয়ে বিহঙ্গমা বিহাওগামীর কথা শোন । ব্রজ। ভয় নাই—বাপ-মা আমাকে ডাকাইয়া বলিয়াছেন—তাকে তাড়াইয়া দাও । তা দেখা না পেলে, তাড়াইয়া দিব কি প্রকারে ? তুমি ঠাকুরমা, তোমার কাছে সন্ধানের জন্য আসিয়াছি। ব্ৰহ্ম। ভাই, আমি বড়ো মান ষ-কৃষ্ণনাম জপ করি, আর আলো চাল খাই। রপেকথা শোন ত বলতে পারি। বাগদীর কথাতেও নাই, বামনীর কথাতেও নাই। ব্রজ । হায়! বড়ো বয়সে কবে তুমি ডাকাতের হাতে পড়িবে! ব্ৰহ্ম। অমন কথা বলিস নে—বড় ডাকাতের ভয়! কি, দেখা করবি ? ব্রজ। তা নাহিলে কি তোমার মালাজপা দেখতে এসেছি ? ব্ৰহ্ম ৷ সাগর বৌয়ের কাছে যা । ব্রজ । সতীনে কি সতীনকে দেখায় ? ব্ৰহ্ম। তুই যা না। সাগর তোকে ডেকেছে, ঘরে গিয়ে বসে আছে। অমন মেয়ে আর ठूश न्मा । ব্ৰজ | চরকা ভেঙেগছে ব’লে ? নয়ানকে বলে দেব—সে যেন একটা চরকা ভেঙ্গে দেয়। ব্ৰহ্ম | হাঁ—সাগরে, আর নয়ানো! যা, যা ! ব্রজ। গেলে বাগিন্দনী দেখতে পাব ? ব্ৰহ্ম। বাড়ীর কথাটাই শোনা না; কি জবালাতেই পড়লেম গা ? আমার মালা জপ হলো না। তোর ঠাকুরদাদার তেষট্টিটা বিয়ে ছিল—কিন্তু চৌদ্দ বছরই হোক। —আর চুয়াত্তর বছরই হোক। —কই কেউ ডাকলে তা কখন ‘না’ বলিত না। ব্রজ। ঠাকুরদাদার অক্ষয় সবগ হৌক—আমি চৌদ্দ বছরের সন্ধানে চলিলাম। ফিরিয়া আসিয়া চুয়াত্তর বছরের সন্ধান লাইব কি ? ব্ৰহ্ম। যা যা যা! আমার মালা জপ ঘরে গেল। আমি নয়নতারাকে বলে দিব, তুই বড় চেঙাগড়া হয়েছিস । ব্রজ। ব’লে দিও । খাসী হ’য়ে দটো ছোলা ভাজা পাঠিয়ে দেবে। এই বলিয়া ব্রজেশবের সাগরের সন্ধানে প্ৰস্থান করিলেন। ষািঠ পরিচ্ছেদ সাগর শবশরিবাড়ী আসিয়া দাইটি ঘর পাইয়াছিল, একটি নীচে, একটি উপরে। নীচের ঘরে বসিয়া সাগর পান সাজিত, সমবয়স্কদিগের সঙ্গে খেলা করিত, কি গলপ করিত। উপরের ঘরে রাত্রে শইত; দিনমানে নিদ্ৰা আসিলে সেই ঘরে গিয়া দবার দিত। অতএব ব্ৰজেশবর, ব্ৰহ্মঠাকুরাণীর উপকথার জবালা এড়াইয়া সেই উপরের ঘরে গেলেন। সেখানে সাগর নাই—কিন্তু তাহার পরিবত্তে আর একজন কে আছে। অন্যভাবে বঝিলেন, এই সেই প্রথমা সত্ৰী । বড় গোল বাধিলা। দই জনে সম্প্ৰবন্ধ বড় নিকট-সত্ৰী পরিষ—পরস্পরের অদ্ধাঙ্গ, পথিবীর মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষা ঘনিষ্ঠ সম্পবন্ধ। কিন্তু কখনও দেখা নাই। কখনও কথা নাই। কি বলিয়া কথা আরম্ভ হইবে ? কে আগে কথা কহিবে ? বিশেষ একজন তাড়াইতে আসিয়াছে, আৰু একজন তাড়া খাইতে আসিয়াছে। আমরা প্রাচীনা পাঠিকাদিগকে জিজ্ঞাসা করি, কথাটা কি রকমে আরম্ভ হওয়া উচিত ছিল ? উচিত। যাই হউক।-উচিতমত কিছই হইল না। প্রথমে দাই জনের একজনও অনেকক্ষণ কথা কহিল না। শেষে প্রফল্পে অলপ, অলপমাত্ৰ হাসিয়া, গলায় কাপড় দিয়া ব্রজেশবরের পায়ের গোড়ায় আসিয়া ঢিপ করিয়া এক প্ৰণাম করিল। ব্রজেশবের বাপের মত নহে। প্ৰণাম গ্রহণ করিয়া অপ্রতিভ হইয়া বাহ ধরিয়া প্ৰফল্লিকে উঠাইয়া পালঙেক বসাইল । বসাইয়া। আপনি কাছে বসিল । প্রফল্লের মখে একটা ঘোমটা ছিল—সে কালের মেয়েরা এ কালের মেয়েদের মত নহে— Գ Հ) Ե*