পাতা:বঙ্গদর্শন-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭৮ অখিল ব্রহ্মাণ্ডের অনাদি ক্রিয়া পরম্পরার একটি ফল এই যে, উনবিংশ শতাব্দীতে কমলাকান্ত চক্রবর্তী জন্মগ্রহণ করিয়া অদ্য রাত্রে নসীরাম বাবুর বৈঠকখানায় বসিয়া মাত্রা বেশী করিয়া ফেলিবেন । সুতরাং আমার সাধ্য কি যে তাহার অন্তথা করি। ঝিমাইতে ঝিমাইতে দেখিলাম যে একটা পতঙ্গ আসিয়া, ফানুষের চারি পাশে শব্দ করিয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছে। “চো-ও-ও” : “ বো-ও-গু” করিয়া শব্দ করিতেছে । আফিমের ঝোকে মনে করিলাম, পতঙ্গের ভাষা কি বুঝিতে পারি না? কিছু ক্ষণ কাণ পাতিয়া শুনিলাম—কিছু বুঝিতে পারিলাম না । মনে মনে পতঙ্গকে বলিলাম, “তুমি কি ও চো বো করিয়া বলিতেছ, আমি কিছু বুঝিতে পারিতেছি না।” হঠাৎ আফিম প্রসাদাং দিব্য কর্ণ প্রাপ্ত । আত্মবিসর্জনে ইচ্ছুক। আমাদের সঙ্গে হইলাম-শুনিলাম, পতঙ্গ বলিল, “আমি আলোর সঙ্গে কথা কহিতেছি—তুমি চুপ কর ।” আমি তখন চুপ করিয়া পতঙ্গের । শিখা জলিতে দেখিলে কাপ দিয়া পড়ে বটে। মরি, তাহারাও পুড়িয়া মরে । কিন্তু, দেখ, কথা শুনিতে লাগিলাম। পতঙ্গ বলি のすびg--- দেখ, তালে৷ মহাশয়, তুমি সেকালে ভাল ছিলে—পিতলের পিলস্থজের উপর মেটে প্রদীপে শোভা পাইতে—আমরা স্বচ্ছদে পুড়িয়া মরিতাম। এখন আবার । সেজের ভিতর ঢুকিয়াছ—আমরা চারি- ; দিগে ঘুরে বেড়াই—প্রবেশ করিবার পথ । পাই না, পুড়িয়া মরিতে পাই ন । কমলাকাস্তের দপ্তর। তখন : মরিবার জন্য মরি। (৭ঙ্গদর্শম, অ’, • २ध्र ८ ! দেপ, পুড়িয়৷ মরিতে আমাদের রাইট আছে—আমাদের চিরকালের হক্‌ ! আমর পতঙ্গ জাতি, পূৰ্ব্বাপর আলোতে পুড়িয়া মরিয়া আসিতেছি—কখন কোন আলো আমাদের বারণ করে নাই। তেলের আলো, বাতির আলো, কাঠের আলো, কোন আলো কখন বারণ করে নাই। তুমি কাচ মুড়ি দিয়া আছ কেন প্রভূ ? আমরা গরিব পতঙ্গ—আমাদের উপর সহমবণ নিষেধের আইন জারি কেন? আমরা কি হিন্দুর মেয়ে, যে পুড়িয়া মরিতে পাব না ? দেখ, হিন্দুর মেয়ের সঙ্গে আমাদের তানেক প্রভেদ । হিন্দুর মেয়ের আশাভরসা থাকিতে কখন পুড়িয়া মরিতে চাহে না— আগে বিধবা হয়, তবে পুড়িয়া মরিতে বসে। আমরাই কেবল সকল সময়েই স্ত্রীজাতির তুলনা ? আমাদিগের হ্যায়, স্ত্রীজাতিও রূপের ফলও এক,—আমরাও পুড়িয়া সেই দাহতেই তাদের সুখ,—আমাদের কি সুখ ? আমরা কেবল পুড়িবার জন্ত পুড়ি, স্ত্রীজাতিতে পারে ? তবে আমাদের সঙ্গে তাহদের তুলন। কেন ? গুন, যদি জলন্ত রূপে শরীর না ঢালিলাম তবে এ শরীর কেন? অন্যজীবে কি ভাবে, তাহু। বলিতে পারি না, কিন্তু আমরা পতঙ্গ