পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৮৫ ] রাজসিংহ S দস্থ্য বলিল, “মহারাণ রাজসিংহকে কে না চিনে ?” তখন রাজসিংহ বলিলেন, “আমি তোমার জীবনদান করিলাম। কিন্তু তুমি ব্রাহ্মণের ব্রহ্মস্ব হরণ করিয়াছ, আমি যদি তোমাকে কোন প্রকার দণ্ড না দিই তবে আমি রাজধৰ্ম্মে পতিত হইব ।” মাণিকলাল বিনীতভাবে বলিল, “মহারাজাধিরাজ ! এ পাপে আমি নুতন ব্রতী। অনুগ্রহ করিয়া আমার প্রতি লঘু দণ্ডেরই বিধান করুন। আমি আপনার সম্মুখেই শাস্তি লইতেছি।” এই বলিয়া দসু্য কটিদেশ হইতে ক্ষুদ্র ছুরিকা নির্গত করিয়া, অবলীলাক্রমে, আপনার তর্জনী অঙ্গুলি ছেদন করিতে উদ্যত হইল। ছুরীতে মাংস কাটিয়া, অস্থি কাটিল না । তখন মাণিকলাল ঐ শিলাখণ্ডের উপর হস্ত রাখিয়া ঐ অঙ্গ,লির উপর ছবিকা বসাইয়া, আর একখণ্ড প্রস্তরেব দ্বাবা তাহাতে ঘা মারিল । আঙ্গল কাটিয়া মাটিতে পড়িল। দস্য বলিল, “মহারাজ এই দণ্ড মঞ্জুর করুন।” 挪 বাজসিংহ দেখিয়া বিস্মিত হইলেন, দস্তু ভ্ৰক্ষেপও করিতেছে না । বলিলেন, “ইহাই যথেষ্ট । তোমাব নাম কি ?” দস্থ্য বলিল, “এ অধমেব নাম মাণিকলাল সিংহ । আমি বাজপুতকুলের রাজসিংহ বলিলেন, “মাণিকলাল, আজি হইতে তুমি আমার কাৰ্য্যে নিযুক্ত হইলে । এক্ষণে তুমি অশ্বাবোহী সৈন্তাভুক্ত হইলে—তোমার কন্যা লইয়া উদয়পুরে যাও ; তোমাকে ভূমি দিব বাস কবিও ” মাণিকলাল তখন রাণাৰ পদধূলি গ্রহণ করিল। এবং রাণাকে ক্ষণকাল অবস্থিতি করাইয়া গুহামধ্যে প্রবেশ করিয়া তথা হইতে অপহৃত মুক্তাবলয়, পত্র ছুইখানি, এবং আশবফি চারিখণ্ড আনিয়া দিল । বলিল, “ব্রাহ্মণের যাহা আমরা কাড়িয়া লইয়াছিলাম, তাহা শ্রীচরণে অর্পণ করিতেছি। পত্র দুইখানি আপনারই জন্স । দাস যে উহা পাঠ করিয়াছে, সে অপরাধ মার্জনা করিবেন।” রাণা পত্র হস্তে লইয়া দেখিলেন, তাহারই নামাঙ্কিত শিরোনামা। বলিলেন, “মাণিকলাল—পত্র পড়িবার এ স্থান নতে। অামার সঙ্গে আইস—তোমরা পথ জান, পথ দেখাও।” A. . মাণিকলাল পথ দেখাইয়া চলিল। রাণা দেখিলেন যে দস্য একবার তাহার ক্ষত ও আহত হস্তের প্রতি দৃষ্টিপাত করিতেছে না, বা তৎসম্বন্ধে একটা কথাও বলিতেছে না—বা একবার মুখ বিকৃত করিতেছে না। রাণ শীঘ্রই বন হইতে বেগবতী ক্ষীণাতটিনীতীরে এক সুরম্য নিভৃত স্থানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। रे কলঙ্ক ।