পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম পরিচ্ছেদ নের সহিত জনক জননীর কিছু না কিছু বৈসাদৃশ্য থাকে। আমরা এ পর্যাস্ত বলিয়া আসিয়াছি যে সস্তান জনক জননীর মত হয় ; অর্থাৎ অপর ব্যক্তি অপেক্ষা জনক জননীর সহিত সস্তানের সাদৃশ্ব বিশেষ থাকে। কখন কখন সাদৃশ্য এমত হয় যে, তাহা দেখিয়া চমৎকৃত হইতে হয়। কিন্তু সাদৃশু যতই সূক্ষ্ম হউক, কোন অংশে না কোন অংশে বৈসাদৃশ্য থাকে। জনক জননীর ন্যায় সন্তান হয় ইহা নৈসর্গিক নিয়ম, আবার জনক জননী হইতে সন্তানের যে কিঞ্চিং বৈসাদৃশ্ব থাকে ইহাও আর একটা নৈসর্গিক নিয়ম। উভয় নিয়ম পরস্পর অসংলগ্ন নহে । সাধারণতঃ আকৃতি বা প্রকৃতি সম্বন্ধে পিতা পুত্র, একইরূপ হয়, কিন্তু অনেক সূক্ষ্ম অংশে অন্যরূপ হয়। পৃথিবীর কোন দুইটা পশু বা পক্ষী একরূপ নহে, কোন অংশে না কোন অংশে তাহাদের বৈসাদৃশু থাকে। আবার সেই বৈসাদৃশ্বের তারতম্য আছে। কোন অংশের প্রভেদ হয় ত এত স্পষ্ট যে প্রথমেই তাহাৰ প্ৰর্তি দৃষ্টি পড়ে। কোথাও বৈসাদৃশ্য এত সামান্য বা এত সূক্ষ্ম যে তাহা বিশেষ অনুসন্ধান না করিলে লক্ষ্য হয় না। আমাদের দৃষ্টি অসম্পূর্ণ, সূক্ষ্ম প্রভেদ থাকিলে আমরা হয় ত তাহা একেবারে দেখিতে পাই না । পিপীলিকার মধ্যে পরস্পৰ কোন প্রভেদই আমরা দেখিতে পাই না, অথচ তাহাদের মধ্যে বিলক্ষণ প্রভেদ আছে ; প্রভেদ না থাকিলে তাহারা পরস্পরকে চিনিতে পারিত না মনুষ্ঠ মধ্যে মূক্ষ্ম বৈসাদৃশু আমরা অনেক বুঝিতে পারি, সত্য, কিন্তু সকলগুলি পারি না জন্মভূমিগত একরূপ বৈসাদৃপ্ত হয় আমরা তাহা একেবারে দেখিতে পাই না। কিন্তু একরূপ ক্ষুজ ক্ষুদ্র কীট আছে তাহার এই বৈসাদৃশু বুঝিতে পারে। উষ্ণপ্রদেশজাত ব্যক্তিকে তাহারা দংশন করে না, কিন্তু শীত প্রদেশজাত ব্যক্তির অনাবৃত দেহ পাইলে একেবারে অস্থির করিয়া দেয়। পিতা যদি শীতপ্রদেশে জন্মগ্রহণ করিয়া থাকেন