পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२४” तल्लझुन्नि [ বৈশাখ রাঙ্গা শ্মশ্রুদল ও প্রকাণ্ড বক্ষবস্ত্র প্রভাশালী হইল, বোধ হইল যেন একটা প্রকাগু ব্যাস্ত্র ঝাপ দিতে উদ্যত। তাহার পাশ্বে আর একটি আসনে আশুতোষ বাবু মহাশয় উপবিষ্ট, একজন শ্বেত কলেবর একজন গৌরাঙ্গ, কিন্তু গঠন প্রতাঙ্গ দেখিলে বোধ হয় উভয়ে এক শ্রেণীস্থ লোক—উভয়েই প্রশস্ত অঙ্গশালী গম্ভীবমূৰ্ত্তি ভক্তির আস্পদ। উভয়ে নানা বিষয়েব কথা হইল ; পত্তনী লইবেন, নীলকুটি খুলিবেন, বেসমের ও লায়ের কারবার আরম্ভ হইবে । আশুতোষ বাবুর নিকট কেবল বিংশতি সহস্র মুদ্র ঋণের প্রার্থনা রাখেন, তাতা দিতেও আশুতোষ বাবু সম্মত হইলেন, বিষয় কার্য্য প্রায় শেষ হইল । আমি জানিলাম ইনিই বাবু মহাশয়ের পরম বন্ধু ডাক্তার ইটুযাল সাহেব, কথা কহিতে কহিতে যখনই সাহেবের চক্ষু আমাদের দিকে পড়িতেছে অমনি গুরুমহাশয় দুই এক পদ পশ্চাতে গমন করিয়া আমার পৃষ্ঠভাগে চিমটি কাটিয়া কহিতেছেন “চুপ কর, পালিয়ে আয়।” কিন্তু আমি সাহেবের একটি অভ্যাস দেখিয়া বিস্মিত হইতেছিলাম, রুমাল লইয়া তিনি দন্তপাটি হইতে এক একটি ক্ষুদ্র দ্রব্য বাহিব কবিতেছেন পুনরায় বদনে নিক্ষেপ করিতেছেন । গুরুমহাশয় আমার কাণে কাণে কহিলেন “এ কি ? মাংস খণ্ড ?” আমি কহিলাম “চুপ করুন, সাহেবের ছোট তাজিরি হইতেছে।” দত্তজ কহিলেন “ম্লেচ্ছ । র্যাহার সাহেব সাজেন তাহাবাও এইরূপ ছোট হাজিরি করেন ৷” পরক্ষণেই গুরুমহাশয় ঐ স্থান ত্যাগ করিযা চলিয়া গেলেন । ক্রমে কাৰ্য্য শেষ করিয়া ২০ হাজার টাকার একটা হুণ্ডি পকেটে ভরিয়া অগণিত ধন্যবাদ দিতে দিতে সাহেব বাহাদুর দাড়াইলেন ও হস্ত প্রসারিয়া বাবু মহাশয়েব করাবলম্বন করিয়া কহিলেন নগরে গমন হইলে আবার সাক্ষাৎ হইবেক । সঙ্গে সঙ্গে আশ্বারোহণ করিলেন, চারিদিকে সেলামের ধুম পড়িয়া গেল । আবার তামার দিকে আশুতোষ বাবু চাঙ্গিয কহিলেন ‘কি তে জটাধারী, সাহেবের ইংরেজি কথা বুঝিতে পাবিলে ?” আমি কহিলাম “মহাশয় অনুগ্রহ করিয়া, বুঝাইলে পারি।" দয়াৰ শরীব আৰ্দ্ৰ হইল, বাবু মহাশয় হাসিয়া কহিলেন বল “রিং দি বেল” “বাজাও ঘণ্টা” আবার কতিলেন “সট দি বক্স" আমি কহিলাম “সট দি বক্সো—” হল না বক্সে নয়—বক্স ছুটি পাঠই আমার সত্ত্বর অভ্যাস হইল, তখন বৃদ্ধ ভৈরব ভৃত্যকে ডাকিযা একটি বৃহৎ আলমারী খুলিতে অনুমতি দিলেন । ভৈরব আলমারির নিকট গেল, কহিল আলমারি খুলিল না, কপাট বাড়ের ঝালরে ঠেকিতেছে।” আমাদের সকল বন্দবস্তষ্ট এইরূপ সন্তোষজনক ! কোন মতে কপাট কতক দূর খুলিয়া একটি দপ্তর বাহির করিলেক, তাহাতে বাঙ্গাল, ফারসী ও ইংরেজি কতকগুলি পুরাতন পুস্তক দেখিলাম, এক একটা ফারসী পুস্তক এক এক হাত পরিমাণ, মনে করিলাম এসব কবে পড়িব । বাৰু