পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৩৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sરાના ] জটাধারীর রোজনামচ * - \లిy: প্রকৃত খেলী সে গজানন কোথায় ? তিনি বিচারালয়ে আসিতে বড় কাতর, হলফ করিতে আরো কাতর। তিনি রঙ্গভূমিতে আসেন নাই, দূর হইতে কল টিপিতেছেন, ডোর ছাড়িতেছেন, টানিতেছেন, গ্রামের কোন নিভৃত স্থানে বসিয়া আছেন, পলে পলে সকল সংবাদ পাইতেছেন । পোষ্টমাষ্টার গাঙ্গুলি মহাশয়েরও এখানে দেখা নাই। মাজিষ্ট্রেট ক্ষুদ্র বিচারপতি, বেঙ্গল গবৰ্ণমেণ্টের ভূতা, তিনি কেবল নবাব গবর্ণর জান্দেরেলের অধীন। অধীনতম হাকিমের কাছারিতে গিয়া নূনতা স্বীকার করা অপমান অথচ ফলতঃ খবর সকল বিষয়ের রাখিতে হইবে এ জন্য দুটি ডাকের ধাওয়া কাছারীতে রিপোর্টার নিযুক্ত করিয়া পাঠাইয়াছেন, গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয় বিলক্ষণ নিন্দাবাদপটু ও ভদ্রের গ্লানি করা তাহার বিশেষ গৌরব, তিনি মহা তীর্থ জ্ঞানবাপীর স্যায় সমলসলিল পূর্ণ। সকল সাক্ষীর এজাহার লিখিত হইল। কাগজাৎ পাঠ হইল। হার্কিম রায় লিখিতে বসিলেন । সকলে নীরব, এমন সময় মটুকধারী বনমালী পিতাম্বরসজ্জায় কোথা হইতে শীতু ঠাকুর আসিয়া উপস্থিত ও গদগদ বচনে করযোড়ে । কহিলেন, “আজ ধৰ্ম্মাবতারের আবির্ভাব, শুনিয়াছিলাম আজ রাবণ আসিয়াছে সীতা হরণ হইবে তা ত নয় ; এই আমার দরখাস্তু নিষ্করে দখল দেন আর এই সুন্দরীকে দান করুন প্ৰভু ! আমি ঘনেশ্যাম তাহার উপযুক্ত পাত্র।" বলিয়া আপন গলদেশ হইতে মালা খুলিয়া সুন্দরীর গলায় অর্পণ করিল। মৌলবী সাহেব ইহার ভয়ানক গোস্তাকি দেখিয়া ক্রুদ্ধ হইলেন । ইঙ্গিত মাত্র বদ্ধকর হইয়া সিংহাসনেচ্ছু শীতু ঠাকুর কারাবাসে চলিলেন। মধ্যে মধ্যে কেবল মাত্র কহিতে লাগিলেন, এতদিনে দশম দশা প্রাপ্ত হইলাম, ও সঙ্গে সঙ্গে গান হাকিয়া দিলেন । এদিকে মৌলবী সাহেবের রায় লিখিতে কিয়ৎকাল অতিবাচিত হইল, পশ্চিমাকাশে প্রবল ঝড় উঠিবার পূৰ্ব্বে যেমন উচ্চ তরুশ্রেণী স্থিরপত্রে দণ্ডায়মান হয় সেইরূপ দর্শকমণ্ডল আদেশ প্রচার হইবার পূৰ্ব্বে সুস্থির ! এক্ষণে হাকিম কহিলেন “শিবসহায় সিংহ, তুমি রঘুকে গুরুতর আঘাত করিয়াছ, সাংঘাতিক অস্ত্র সহকারে দাঙ্গা তোমার অনুমতিতেই হইয়াছে, তুমি কাদম্বিনীর মৃত্যুর মিথ্যা সংবাদ দিয়াছিলে ও সেই মিথ্যার পোষকে আজ আবার সফৎ করিয়া প্রকাশু বিচারালয়ে মিথ্যা কথা কহিলে যে এই আওরাত তোমার দকতর । নহে । এ সকল গুরুতর অপরাধ, আমার অভিমতে তোমার আরো উচ্চতর বিচারস্থলে দণ্ড বিধান হওয়া উচিত, অতএব তোমাকে সসিহান সুপর্ণ করিলাম।” একজন মোহরার কহিয়া উঠিল, “আপনি সাফায় সাক্ষীর নাম দেন ।"