পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৪২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রীরপালন । ডাক্তার ঐযদুনাথ মুখোপাধ্যায় প্রণীত । ৮ম সংস্করণ। . চিকিৎসা প্রকাশ যন্ত্র সন ১২৮৫ । মাথা মুগু নাটক নবেল লিখিয়া নব্য বাবুগণ দেশের কি উপকার কবেন, তাহা বলিতে পারি না । নাটক নবেল, অতিশয় উৎকৃষ্ট এবং লোকহিতকর সামগ্ৰী সন্দেহ নাই—যদি ভাল হয় । কিন্তু ভাল নাটক নবেল লিখিতে পারে এমন লোক শত বৎসবে একজন জন্মে কি না সন্দেহ । সকল প্রকার প্রতিভার অপেক্ষা সাহিত্যেৰ উজ্জ্বলকারী প্রতিভাই দুর্লভ। কিন্তু বাঙ্গালায় যে কলম ধরিতে শিখিয়াছে সেই কাব্য নাটক উপন্যাসের প্রণেতা । এই সম্প্রদায়ের লোককে আমরা পরামর্শ দিই যে, যদি তাহাদিগের সাধ্য থাকে তবে অন্য পথ ছাড়িয়া, যদু বাবুর অনুকরণ করুন। যাহা লোকহিতকর, তাহাতে মনোযোগ দিন । বস্তুতঃ বিবেচনা করিয়া দেখিলে যত্নবাবুর ন্যায় কোন বাঙ্গালি লেখকই দেশের হিতে নিযুক্ত নতেন । “ধাত্রীশিক্ষা” “চিকিৎসাদর্পণ” “শরীরপালন” প্রভৃতি গ্রন্থে চিকিৎসা শাস্ত্রের দুরূহ ব্যাপার সকল তিনি জনসাধারণের বোধগম্য করিয়া সকলকে আত্মরক্ষায় সক্ষম করিয়াছেন। যে একজন মনুষ্যের জীবন রক্ষা করে সে মনুষ্যলোকে ধন্য—যন্ত্র বাবুর এই সকল পুস্তকে বহুলোকের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষা হইয়াছে অতএব বাঙ্গালি লেখকের মধ্যে র্তাহার তুল্য লোকহিতকর আর কাহাকেই দেখি না। বিশেষ এবিষয়ে তাহার উদ্যম, সাহস ও অধ্যবসায় অত্যন্ত প্রশংসার বিষয়। এক চিকিৎসা কল্পদ্রুমে যে ব্যয়, পরিশ্রম, ও ক্ষতি স্বীকার তাহা আর কোন লেখকই সহ করিতে পারেন না। এরূপ কার্য্যে যশ বা ধনলাভ নাই— কেন না সাধারণ পাঠকে ইহার কিছুই বুঝে না পড়ে না বা উৎসাহ দেয় না। যিনি পুরস্কারের আকাঙ্ক রহিত হইয়া লোকের হিতে নিযুক্ত তিনিই যথার্থ মহাত্মা ।