পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$२vहै ] বাঙ্গালা ভাষা *** *? পারিবেন না ?—ইহার উত্তরে অবশ্য এই কথা বলিবেন যে, ওরূপ ভাষা বিশেষ শিক্ষাপ্রদ নয় এবং উহা সৰ্ব্বসমক্ষে পাঠ করিতে লজ্জা বোধ হয় । অতএব বলিতে হইবে যে, আলালী ভাষা সম্প্রদায়বিশেষের বিশেষ মনোরঞ্জিকা হইলেও উহ সৰ্ব্ববিধ পাঠকের পক্ষে উপযুক্ত নহে। যদি তাহা না হইল, তবে আবার জিজ্ঞাস্য হইতেছে যে, ঐরূপ ভাষায় গ্রন্থরচনা করা উচিত কি না ?—আমাদের বোধে অবশু উচিত। যেমন ফলারে বসিয়া অনবরত মিঠাই মগু খাইলে জিহা একরূপ বিকৃত হইয়া যায়—মধ্যে মধ্যে আদার কুচি ও কুমুড়ার খাট্ট মুখে না দিলে সে বিকৃতির নিবারণ হয় না, সেইরূপ কেবল বিদ্যাসাগবী রচনা শ্রবণে কর্ণের যে একরূপ ভাব জন্মে, তাহাব পরিবর্তন করণার্থ মধ্যে মধ্যে অপরবিধ রচনা শ্রবণকরা পাঠকদিগের আবশু্যক ” আমরা ইহাতে বুঝিতেছি যে প্রচলিত ভাষা ব্যবহারের পক্ষে স্বায়রত্ব মহাশয়ের প্রধান আপত্তি যে পিতা পুত্রে একত্রে বসিয়া এরূপ ভাষা ব্যবহার কবিতে পাবে না। বুঝিলাম যে হ্যায়বত্ব মহাশযের বিবেচনায় পিতা পুত্রে বড় বড় সংস্কৃত শব্দে কথোপকথন কলা কৰ্ত্তব্য ; প্রচলিত ভাষায় কথাবাৰ্ত্ত হইতে পারে না । এই আইন চলিলে বোধ হয় ইতার পব শুনিব যে শিশু মাতাব কাছে খাবাব চাইবাল সময় বলিৰে, তে মাতঃ খাদ্যং দেহি মে এবং ছেলে বাপেৰ কাছে জুতার আবদাৰ করিবার সময় বলিবে ছিন্নেয়ং পাছক মদীয়া । হ্যায়রত্ব মহাশয় সকলের সম্মুখে সরল ভাষা ব্যবহাৰ করিতে লজ্জা বোধ করেন, এবং সেই ভাষাকে শিক্ষা প্রদ বিবেচনা কবেন না ইহা শুনিয়া তাহার ছাত্রদিগের জন্ত আমরা বড় দুঃখিত হইলাম। বোধ হয় তিনি স্বীয় ছাত্রগণকে উপদেশ দিবার সময়ে লজ্জাবশতঃ দেড়গঙ্গী সমাসপৰস্পর বিন্যাসে তাহাদিগের মাথা ঘুরাইয়া দেন। তাহারা যে এবংবিধ শিক্ষায় অধিক বিদ্যা উপার্জন করে এমত বোধ হয় না । কেন না আমাদের স্কুল বুদ্ধিতে ইহাই উপলব্ধি হয় যে যাহা বুঝিতে না পার। যায় তাহা হইতে কিছু শিক্ষালাভ হয় না। আমাদের এইরূপ বোধ আছে যে সরল ভাষাই শিক্ষাপ্রদ। ন্যায়রত্ন মহাশয় কেন সরল ভাষাকে শিক্ষাপ্রদ নহে বিবেচনা করিয়াছেন তাহা আমরা অনেক ভাবিয়া স্থির করিতে পারিলাম না। বোধ হয় বাল্যসংস্কার ভিন্ন আর কিছুই, সরল ভাষার প্রতি তাহার বীতরাগের কারণ নহে । আমরা আরও বিস্মিত হইয়া দেখিলাম যে তিনি স্বয়ং যে ভাষায় বাঙ্গালাসাহিত্য-বিষয়ক . প্রস্তাব লিখিয়াছেন তাহাও সরল প্রচলিত ভাষা । টেকচার্দী ভাষার সঙ্গে এবং তাহার ভাষার সঙ্গে কোন প্রভেদ নাই, প্রভেদ কেবল এই যে টেকচাদে রঙ্গরস আছে, ন্যায়রত্বে কোন রঙ্গরস নাই। তিনি যে বলিয়াছেন যে পিতাপুত্রে একত্র বসিয়া অসংস্কুচিত মুখে টেকচাদী ভাষা পড়িতে