পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(N9e লোকাস্তরপরিবেষ্টিত বিশ্বের সহিত যুক্ত বলিয়া জানিতে হইবে—অনন্ত দেশকালের সহিত, জল-স্থল-আকাশের সহিত, চন্দ্র-স্বৰ্য্যনক্ষত্রের সহিভ আপনাকে একাত্ম করিয়া অনুভব করিতে হইবে । তাহার পরে স্তন্ধ হইয়া বলিতে হইবে—তৎসবিতুৰ্বরেণ্যং ভগো দেবস্ত ধীমহি—যে নিখিললোকের সহিত আমি সম্মিলিত, এই নিখিলের যিনি সবিতা—এই নিখিল অহরহই যাহার রশ্মিবিকিরণ, তাহারই শক্তি ধ্যান করি—এই ভুভু বঃ স্বঃ–এই নিখিল ভুবনই তাহার অবিরাম শক্তির প্রকাশ । এই শক্তিকে যে ধ্যানদ্বারা সৰ্ব্বত্র অনুভব করিব, সেই ধ্যানের শক্তি কোথা হইতে আসিতেছে ? ধিয়ে। যে নঃ প্রচোদস্থাৎ—যিনি আমাদিগকে ধীপ্রেরণ করিতেছেন, তাহ হইতেই । বাহিরে বিশ্ব র্তাহারই বিকিরণ, অন্তরে চৈতন্ত র্তাহারই প্রেরণা । তাহারই প্রেরিত এই ধা দ্বারা আমরা সৰ্ব্বত্র তাহারই শক্তি দেখিতেছি— তাহারই প্রেরিত এই ধী’র সহায়তায় আমরা স্বৰ্য্যকে তাহারই দ্বার। দীপ্ত, বায়ুকে তাহারই দ্বার। নিশ্বসিত, পৃথিবীকে তাহারই দ্বারা দুঢ় বলিয়া জানিলাম—তাহারই প্রেরিত এই ধীস্থত্রে আত্মার সহিত নিখিলকে ও নিখিলের সহিত নিখিলসবিতাকে সম্মিলিত করিয়া ধ্যান করিলাম । কিন্তু এইখানেই শেষ নহে—ইহ আরম্ভমাত্র । এই ভুভুবঃস্বলোকের মধ্যে দাড়াইয়া যে ধ্যান করা—অস্তরে-বাহিরে সর্বত্র সেই সৰ্ব্বশক্তিমানের শক্তিকে মনন করিয়া লওয়া, ইহা ব্রহ্মোপাসনার উদ্বোধনমাত্র । তাহার পরে সংসারের মধ্যে, প্রাত্যহিক বঙ্গদর্শন । { ৩য় বর্ষ, ফাঙ্কন । ব্যাপারের মধ্যেই প্রতিদিন ব্রহ্মোপাসনাকে বিশেষভাবে বিচিত্রভাবে সম্পূর্ণ করিতে হইবে । এককে অনেকের মধ্যে, ধ্রুবকে চঞ্চলের মধ্যে, মঙ্গলকে স্বখদুঃখের মধ্যে পদে পদে ধারণা করিরা লইতে হইবে। তবেই এই উপাসনা অস্তরে-বাহিরে সত্য হইয়৷ উঠিবে। ইহাকে স্বদুর ভাবলোকের মধ্যে খণ্ডিত করিয়া আমাদের মানবত্বের অধিকাংশ হইতেই, আমাদের নিকটতর প্রত্যক্ষতর জীবন হইতেই, বিচ্ছিন্ন করিয়া রাখিলে ব্ৰহ্ম-উপলব্ধির সম্ভাবনা থাকে না এবং ংসার ও সঙ্কটপুর্ণ হইয় উঠে। আমরা বিশ্বের অন্তসৰ্ব্বত্র ব্রহ্মের অাবির্তাব কেবলমাত্র সাধারণভাবে জ্ঞানে জানিতে পারি। জল-স্থল-আকাশ-গ্রহ-নক্ষত্রের সহিত আমাদের হৃদয়ের আদানপ্রদান চলে না —তাহাদের সহিত অামাদের , মঙ্গলকম্মের সম্বন্ধ ও নাই । আমরা " জ্ঞানে-প্ৰেমে-কৰ্ম্মে অর্থাৎ সম্পূর্ণভাবে কেবল মামুঘকেই পাইতে পারি। এইজন্ত মামুষের মধ্যেই পুর্ণতরভাবে ব্রহ্মের উপলব্ধি মামুষের পক্ষে সম্ভবপর । নিখিল মানবাত্মার মধ্যে আমরা সেই পরমাত্মাকে নিকটতম অন্তরতম রূপে জানিয়া তাহাকে বারবার নমস্কার করি । “সৰ্ব্বভূতান্তরাত্ম৷” ব্ৰহ্ম এই মনুষ্যত্বের ক্রোড়েই আমাদিগকে মাতার দ্যায় ধারণ করিয়াছেন, এই বিশ্বমানবের স্তম্ভরসপ্রবাহে ব্ৰহ্ম আমাদিগকে চিরকালসঞ্চিত প্রাণ, বুদ্ধি, প্রতি ও উদ্যমে নিরস্তর পরিপূর্ণ করিয়া রাখিতেছেন, এই বিশ্বমানবের কণ্ঠ হইতে ব্ৰহ্ম আমাদের মুখে পরমাশ্চৰ্য্য ভাষার সঞ্চার করিয়া দিতেছেন, এই বিশ্বমানবর