পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] শাসনে বিভক্ত করিয়া, তাছাদের সমবায়ে একটা আত্মপ্রতিষ্ঠ শাসন-সঙ্ঘ বা যুক্তরাজ্য গড়িয়া উঠিবে এই আশার কথা প্রচার করিয়া স্বদেশপ্রেমিকদিগের আশাকে সঞ্জীবিত করিয়াই তাহদের উদ্যম ও উৎসাহকে সংযত করিবার চেষ্টা করিয়াছেন। সেই মুদূর লক্ষ্যকে ধরিয়াই এই নৃতন ঢাক-বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও উপস্থিত করিয়াছেন। দেশের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষাৎ গতি ও নিয়তি র্যারা লক্ষ্য করিতেছেন, স্বজাতির অত্যুদয় ও সমগ্র মানবসমাজের শান্তি ও উন্নতি যাহারা কামনা করেন, তাহদের পক্ষে সৰ্ব্বতোভাবে লাট হার্ডিঞ্জের এই দূরদর্শিনী নীতির সমর্থন করা কৰ্ত্তব্য। প্যান ইসলামিজমৃ যে ভাবে জগতের মুসলমানসমাজের শক্তি-বুদ্ধির ও একতা সাধনের জন্য চেষ্ট৷ করিতেছে, সে ভাবে ইস্লামের অভু্যখ্যান হউক, ইহা ইচ্ছা করি না বলিয়, কেহ আমাদিগকে ইস্লামধৰ্ম্মের বা মুসলমানসমাজের শত্রু মনে করিবেন না। আমরা সৰ্ব্বান্ত:করণে ইসলামের হিত কামনা করি। ইস্লামের অধোগতিতে মানবসমাজের একটা অতি বৃহৎ ও শ্রেষ্ট অঙ্গ বিকল হইতেছে, ইঙ্গ আমরা সৰ্ব্বতোভাবে স্বীকার করি। সমগ্ৰমানবমণ্ডলীর হিতার্থেই আমরা ইসলামের হিত কামনা করি। আর ভারতের সঙ্গে ইস্লামের যে একটা বিশেষ ও অতি ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ বহুদিন ধরিয়া ধীরে ধীরে , গড়িয়া উঠিয়ছে, ইহাও আমরা বিস্তৃত श्रे নাই। ভারতীয় মুসলমানগণ ভারত-সমাজের অঙ্গ। অঙ্গের উৎকর্ষে অঙ্গীর উন্নতি অবশ্যম্ভাবী। অঙ্গের অপকর্ষে অঙ্গীর অবনতি অপরিহার্য্য। সাময়িক-আলোচন৷ Seq স্বতরাং ভারত-সমাজের কল্যাণকল্পেই ভারত্তের মুসলমানসম্প্রদায়ের যথাযোগ্য অভু্যদয় কামনা করিয়া থাকি। কিন্তু অঙ্গ যদি অঙ্গীর বিদ্রোহী হইয়া, তাহার সঙ্গে সৰ্ব্বপ্রকারের সম্বন্ধ চ্ছেদন করিয়া, ৰতন্ত্র ও স্বপ্রতিষ্ঠ হইতে চাহে, তাহাতে অঙ্গ ও অঙ্গী উভয়েরই শক্তিক্ষয় হয়, এবং উভয়েরই আপন, আপন সফলতালাভের অশেষ অম্ভরায় জন্মিয়া থাকে। ভারতের মুসলমানসম্প্রদায় যদি প্যান্‌ ইস্লামের মোহিনীমূৰ্ত্তি দেখিয়া আত্মবিস্তৃত হইয় তাহার পশ্চাৎ ধাবিত হইতে থাকেন, তাহাঁতে যেমন র্তাহীদের নিজের, তেমনি ভারতবর্ষের, তেমনি সমগ্র মানবমণ্ডলীর অশেষ অকল্যাণের সূত্রপাত হইবে, ইহ প্রত্যক্ষ করিয়াই, আমরা এই আত্মঘাতী ও স্বদেশদ্রোহী প্রয়াসের প্রতিরোধ করা কর্তব্য মনে করি। ভারতের আধুনিক শিক্ষাপ্রাপ্ত মুসলমানগণ যে সকল ক্ষেত্রে হিন্দুনেতৃবর্গের সহিত মিলিত হইয়া, প্রকাণ্ডে ও একযোগে ব্রিটিশ রাজকৰ্ম্মচারিগণের নীতির বা কার্য্যের প্রতিবাদ করিতে যাইয়া, প্রকৃতপক্ষে, ভিতরে ভিতরে এই প্যান্‌-ইসলামিজমেরই শক্তিসঞ্চার কৱিতে চেষ্টা করিবেন, সে সকল ক্ষেত্রে আমাদিগকে সচকিতস্বাতন্ত্র্য অবলম্বন করিতেই হইবে । এই কয় বৎসর, মিণ্টে মহোদয়ের শাসনকালে, ভারতেপান্‌ ইসলামের প্রচারকগণ ইংরেজরাজপুরুষগণকে ধরিয়া আপনাদের কার্য্যোদ্ধার করিতেছিলেন। লাট হার্ডিঞ্জের বিচক্ষণ বুদ্ধি সে পথ রোধ করিয়াছে। এখন র্তাহার দেশের হিন্দুনেতৃগণকে ধরিয়া সেই কাজই বাঞ্জাইবার চেষ্টা করিতেছেন। এট আমাদের বোঝা উচিত ।