পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] গতিশক্তি তীর সনাতন স্থিতিশক্তিকে একান্তভাবে অভিভূত করিয়া ফেলে, সেখানেই সমাজ-চৈতন্য একেবারে আত্মবিস্তৃত হইয়া, উন্মদিনী বিপ্লবশক্তির ক্রীড়াপুত্তলি হয় এবং অচিরে বিনাশের মুখে যাইয় পড়ে। আবার যেখানে সমাজের স্থিতি-শক্তি একান্তভাবে তাহার স্বাভাবিক গতিশীলতাকে চাপিয়ারাথিতে বা পিষিয়া মারিতে চেষ্টা করে, সেখানে কিছুদিনের জন্ত সমাজ নিতান্ত স্থবির হইয় পড়ে এবং শুদ্ধ গতানুগতিক পথ ধরিয়া জড়গতিমাত্র প্রাপ্ত হয়, জীবন চেষ্টা প্রকাশ করিতে পারে না। আর স্বভাবের গতিরোধ কুরিয়া কিছুকালের জন্য স্থবিরত্ব লাভ করে বলিয়াই, তাহারই প্রতিক্রিয়ার ফলস্বরূপ, পরিণামে প্রবল বিপ্লবের মুখে যাইয়াই পড়ে। এই জন্য,সমাজের চিরন্তন কল্যাণকল্পে, তাহার স্বাভাবিক বিবৰ্ত্তন-পথ অবাধ ও প্রশস্ত রাখিতে "হইলে, তাহার গতিশক্তি ও স্থিতিশক্তি উভয় শক্তিকেই, আপন আপন অধিকারে, মপ্রতিষ্ঠিত রাখা আবশ্বক হয়। সমাজ-জীবনের ত্রিধর কারণ, জনসমাজের বিবৰ্ত্তন-চেষ্টা গতি-শক্তি ও স্থিতি-শক্তি উভয়কেই সমভাবে অবলম্বন করিয়া চলে। একদল লোক যখন কোনো অভিনব ভাব বা আদর্শের প্রতি ঐকান্তিক অনুরাগবশতঃ আত্যন্তিকভাবে সমাজের গতিবের্গকে বাড়াইয়৷ তুলিতে চান; অপর এক দল লোক তখন, সমাজের অবস্থার পরিবৰ্ত্তনের সঙ্গে সঙ্গে তার বিধিব্যবস্থার এবং অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠানেরও পরিবর্ধন যে অপরিহার্ঘ্য হইয়া উঠে এবং এই পরিবর্তনের একান্ত প্রতিরোধ করিলে সমাজের গুরুতর অকল্যাণ চরিত-চিত্র \b সাধিত হয়, ইহা বিচার না করিয়া, সমাজস্থিতির ” দোহাই দিয়া, প্রাণপণে এই প্রবুদ্ধ গতিশক্তিকে চাপিয়া রাখিতে চেষ্টা করেন। আর এই দুই দলই সমাজ-বিবর্তনের প্রত্যক্ষ হেতুরূপে,ইতিशंदन श्रद्रौग्न श्ध्न व्रtश्न । किरू ऍांशंद्र ७ीक দিকে দিক্‌বিদিক্ জ্ঞানশূন্ত হইয়া, এইরূপে সমাজের গতিবেগকে আত্যস্তিক ভাবে বাড়াইয়া তোলেন, উহার যেমন সমাজের স্বৈর্য্য ও শান্তি নষ্ট করিয়া, তাহাৰু আভ্যন্তরীণ প্রাণবস্তুকে পীড়িত করেন ; সেইরূপ যাহারা অন্যদিকে অভিনব যুগধর্মের ও কালধৰ্ম্মের 'প্রতি আমনস্ক হইয়া, এই প্রবুদ্ধ গতিবেগকে জোর করিয়া প্রতিরোধ করিতে বদ্ধপরিকর হন, তাহারাও সেইরূপই অযথা সংগ্রাম বাধাইয়া, সমাজ-প্রাণকে রক্ষা করিতে যাইয়াই, তাহাকে নষ্ট করিতে উদ্যত হন। কিন্তু যাহারা এই সংগ্রামে প্রবৃত্ত না হইয়া, ধীরভাবে তাঁর পরিণাম লক্ষ্য করিতে থাকেন এবং যতক্ষণ না এই সংগ্রামের নিবৃত্তি হইয়। নূতনের ও পুরাতনের মধ্যে একটা উচ্চতর সন্ধি ও সামঞ্জস্য প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে, ততক্ষণ কোন এক পক্ষকে একান্তভাবে অবলম্বন না করিয়া যথাসম্ভব নিরপেক্ষভাবে, এই কলহকোলাহলের মধ্যে সমাজের মৰ্ম্মস্থলে যে সনাতন প্রাণবস্তু আপনাকে লুকাইয়া রাখতে চেষ্টা করে, তাহাকেই কেবল ধরিয়া বসিয়া রহেন,—তাহারাই প্রকৃতপক্ষে সমাজের মেরুদণ্ডস্বরূপ। কোন সমাজে, কালপ্রভাবে,তাহার পূৰ্ব্বকৃত ও অধুন-চেষ্টিত কৰ্ম্মবশে, এইরূপ, সমর-সঙ্কট উপস্থিত হইলে, যাহারা নূতনের লোভেও আত্মবিস্তৃত হন না, আর তার ভয়বিভীষিকাতেও বিক্ষিপ্ত হুইয়া উঠেন না,—