২য় সংখ্যা ইংরেজের ইংরেজত্বকে—এ সকল ভিন্ন ভিন্ন জা’তের জাতিত্ব বা জাতীয় তাকে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছে। মানুষের হিসাবে ইহুদী ও হিন্দু, জাপ ও জৰ্ম্মাণ, রুশ ও চীন, ইতালীয় ও ইংরেজ, এরা সকলেই সমান। সকলেরই মামুযের দেহ, মামুযের মন, মামুযের ভাবস্বভাব রহিয়াছে। অথচ জাতির হিসাবে, ইহাদের সকলেই অপর সকল হইতে ভিন্ন। হিন্দুর চেহারায়, কথাবাৰ্ত্তায়, চালচলনে, ভাবস্বভাবে, এমন একটা বিশেষত্ব আছে যাহ। জগতের আর কোনে জা'তের ভিতরে নাই। এই বিশেষত্বটুকুই হিন্দুর হিন্দুত্ব। যে সকল চিহ্ন দ্বারা জুনিয়ার অসংখ্য জা'তের মাঝখানে আমরা হিন্দুকে বাছাই করিয়া আলাহিদ। করিতে পারি, তাই তার হিন্দুত্ব। সেইরূপ যে সকল চিহ্নের দ্বার। জৰ্ম্মাণকে জগতের আর দশটা জাতের ভিতরে চিনিয়া লষ্টতে পার৷ যায়, তাহাই তার জার্মাণত্ব । আর ষে সকল লক্ষণার দ্বারা ইংরেজকে এইভাবে বিশ্বের মানবসমাজের মাঝখানে চিহ্নিত করিয়া বাহির করিতে পারা যায়, তাহাই তার ইংরেজত্ব। এই ইংরেজত্ব-বস্তু ইংরেজের চেহারায়, তার গঠনে, তার বর্ণে, তার সৰ্ব্ববিধ সূক্ষ্ম শারীর ধৰ্ম্মে, তার চালচলনে, তার ভাবস্বভাবে, জীবনের সকল বিভাগে ফুটিয়া রহিয়াছে। র্যার ভিতরে এই ইংরেজত্ববস্তু বেশি লক্ষ্য করিতে পারি, যে ইংরেজ আপনার জাতের এই সকল স্বরূপলক্ষণেতে অবস্থানী করিতেছে, কেবল র্তাহাকেই খাটি ইংরেজ বলা যায়। আর এই অর্থেই ষ্টেডকে আমি অত্যন্ত খাটি ইংরেজ বলিতেছি। চরিত-চিত্র ծՀԳ ইংরেজত্বের শারীর লক্ষণ আমাদের দেশের নানা জাতের নান। লোকের ভিতরে কে যে হিন্দু আর কে যে অহিন্দু ইহা যেমন তাহার চেহারাতেই অনেক সময় ধরা পড়ে, সেইরূপ বিলাতের নান জা'তের লোকের মধ্যে কে যে ইংরেজ ইহা তার চেহার। দেখিয়াই চিনিতে পারা যায়। বিলাতে ইংরেজ আছে, স্বচ, বা স্কট্ আছে, আইরিশ আছে, ওয়েল্শ, আছে ; তাহ ছাড়া জৰ্ম্মাণ, রুশ, ইতালীয়, ফরাসীস, এ সকল শ্বেতাঙ্গও বিস্তর আছে । আর কিছু দিন সে দেশে বাস কঞ্চিলেই কে কোন জা'তের লোক ইহা তাহদের চেহারা দেখিয়াই ঠিক করিতে পারা যায়। যেখানে পুরুষানুক্রমে অসজাতীয় বিবাহ নিবন্ধন নানা জাতের রক্তের বেশি মেশামিশি হইয়া গিয়াছে, সেখানে কে ইংরেজ, কে জার্মাণ, কে আইরিশ, ইহ। একেবারে ঠিক করা যায় না বটে, কিন্তু যেখানে এরূপ শোণিত-মিশ্রণ হয় নাই, সেখানে খাটি ইংরেজ যে কে ইহা তার চেহারাতেই ধরা পড়ে । খাটি ইংরেজের চেহারা ভারি ভারি ঠেকে । আইরিশের বা ইতালীয়ের চেহারা যেমন কাটা ছাট, ইংরেজের চেহারা সেরূপ নয় । আইরিশ বা ইতালীয়ের প্রত্যেকটা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেরূপভাবে আপন আপন উৎকর্ষলাভের চেষ্টা করে, ইংরেজের যেন সেরূপ করে না । নাক, চোখ, ক্র, কপোল, ললাট, কর্ণ গ্রীবা,—আইরিশ বা ইতালীয়ের চেহারায় এরা সকলে আপন আপন অধিকারে স্বপ্রতিষ্ঠ হইয়া, সকলে মিলিয়,
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৩২
অবয়ব