পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ΥΦb' দের নিকট হইতেই বর্তমান খৃষ্টীয়ান্‌ ধষ্মের সকল প্রকারের গভীর তত্ত্বের প্রতিষ্ঠা হইয়াছে। আবার যখন, কালক্রনে এই খৃষ্টীয় ধৰ্ম্মই রোমক সাধনার সঙ্গে মিলিয়া গেল, তখন এই নূতন সাধনার প্রভাবে, তাহার মধ্যে পুনরায় একটা প্রবল বৈধীভাবেরও প্রতিষ্ঠা হইল। খৃষ্টীয়ান্‌ ধৰ্ম্ম প্রচারকধৰ্ম্ম । নানা সময়ে নানা গ্রোকের মধ্যে এই ধৰ্ম্মের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা হইয়াছে ! কিন্তু সৰ্ব্বদা ও সৰ্ব্বত্রই এই সকল বিভিন্ন প্রকৃতির সভ্যতা ও সাধনার সঙ্গে মিলিত হইয়া, ভিন্ন ভিন্ন দেশে, ভিন্ন ভিন্ন লোকের মধ্যে, এই একই ধৰ্ম্ম নানা আকারও ধারণ করিয়াছে। খৃষ্টধষ্মের মূল কথাগুলি সকল স্থানেই রহিয়াছে। কিন্তু সৰ্ব্বত্র একই অর্থে এই সকল কথা লোকে বোঝে নাই, বুঝিতে পারে না, ফলতঃ কেবল বিশেষ বিশেষ ধৰ্ম্ম সম্বন্ধেই এ কথা সত্য, সাধারণ ভাবে সকল ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে সত্য নয়, এমন কথাও বলা যায় না । জগতের অসংখ্য খৃষ্টউপাসকদিগের সকলের অন্তরে খৃষ্ট যেমন এক নহেন,ভিন্ন ভিন্ন সাধকের অন্তরে ও সাধনীতে একই খৃষ্ট অসংখ্য রূপ ধারণ করিয়া আছেন ; সেইরূপ প্রত্যেকের ঈশ্বব ও অপরের ঈশ্বর হইতে স্বতন্ত্র। জগতের নানা লোকে,নান নামে যেমন একই ঈশ্বরের ভঞ্জন করে, ইহা সত্য ; তেমনি প্রত্যেক লোকের অন্তরের ঈশ্বরানুভূতি ও ঈশ্বরোপলব্ধি যে অপর লোকের ঈশ্বরামুভূতি হইতে পৃথক, ইহাও সত্য। ব্ৰহ্ম বল, জিহোভা বল, ঈশ্বর বল, গোদা বল, বিষ্ণু বল, শিৰ বল, রাধা বল, শক্তি বল, ষে নামেই পরমতত্ত্বকে ব্যক্ত করিতে চেষ্টা কর না কেন, এ সকল নামের অন্তরালে বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ম, আষাঢ়, ১৩১৯ যে সত্য বস্তুর অনুভূতি থাকে, তাহা তোমার নিজের, তোমার ভিতরকার প্রকৃতির দ্বারা, সেই প্রকৃতির রসে রঞ্জিত হইয়। আছে। তোমার প্রকৃতি যদি তামসিক হয়, সাত্ত্বিক বিষ্ণুমন্ত্র গ্রহণ করিলেই তোমার প্রাণের মধ্যে যে দেবতার প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠা হইয়াছে, তাহা কখনো সাত্ত্বিক হইবে না ; হইতেই পারে না। এই জন্য সাধকের প্রকৃতির বিশেষত্ব নিবন্ধন অনেক শৈব এবং শাক্ত সাধকও প্রকৃত বৈষ্ণব হইয়া থাকেন, অনেক বৈষ্ণব সাধকও ঘোরতর শাক্ত হইয়া রহেন। অনেক নিরাকারবাদী ব্রাহ্ম ও ভিতরে ভিতরে ঘোরতর পৌত্তলিক হইয়া রছেন। আর অনেক দেবেীপাসক ও বিশুদ্ধ আধ্যাত্মিক ঐসম্পদ লাভ করিয়া, দেবতার নামে ও দেববিগ্রহে সেই “অলখ নিরঞ্জনেরই” ভজনা করিয়া থাকেন। " জয় জ্যোতিৰ্ম্ময় " বলিয়া অনেক ব্রহ্মোপাসকও চক্ষু বুজিয়া কেবল একটা জগৎজোড়া আগুণের হস্কাই হয়ত দেখেন ; আর কখনো উচ্চ প্রকৃতির কোনো সকারোপাসকও হয়ত, "জয় জ্যোতিৰ্ম্ময় " বলিতে বলিতেই ধান মগ্ন হুইয়া আপনার অন্তরে স্বপ্রকাশ ও জগৎপ্রকাশক চিজ্যোতিই প্রত্যক্ষ করিয়া থাকেন। কোনো আকারসমূখেন। রাখিলেই যে অমৃত্ত্বের মানসপূজা হয়, আর বাহমূৰ্ত্তির সম্মুখে বসলেই সৰ্ব্বদা যে মুর্তেরই পূজা করিতে হয় সেখানে অমৃত্ত্বের প্রকাশ অসম্ভব ও অসাধ্য, তাহা নহে। দেবতার মূর্ব-প্রকাশ ও অমূৰ্ব-প্রকাশ উভয়ই বাহিরের মূৰ্ত্তির প্রতিষ্ঠার বা তাহার অভাবের উপরে নির্তুর করে না। কিন্তু উপাদকের ভিতরকার প্রকৃতির উপরেই একান্তভাবে নির্ভর করিয়া থাকে। র্যাহার ভিতরকার