পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৫২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম সংখ্যা ] কবিতাগুলিতে তাহাকেই যেন বৃত্তির আকারে বিশদ করিয়া তুলিবার চেষ্টা করিয়াছেন। একদিকে আপনার চারি পাশের নিসর্গের ও মানবসমাজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ও অন্যদিকে আপনার অন্তরের নিগূঢ়তম অপরোক্ষ রসাযুভূতি -এই দ্বিবিধ সত্যকে আশ্রয় করিয়। যেমন কবি তার অপূর্ব উৰ্ব্বণকে সেইরূপ এই নারী’ শীর্ষক অনেক চিত্র ও চরিত্রকে গড়িয়া তুলিয়াছেন ; এবং এইজন্ত তার ‘উৰ্ব্বণী যেমন গভীর বস্তু তন্ত্র তালাভ করিয়াছে, সেইরূপ র্তার ‘তোমরা ও আমরা’, ‘ব্যক্ত প্রেম’, 'লজ্জিত এই সকলগুলিই অনুপম সৌন্দৰ্য্য ও বস্তুতন্ত্রতা লাভ করিয়াছে । ফলতঃ নারীহৃদয়ের গভীরতা ও রমণী-চরিত্রের দুর্ভেদ্য বিচিত্র রহস্য রবীন্দ্রনাথ যেমন করিয়া নানাদিক্ দিয়া, নানাভাবে, ও বিচিত্র বর্ণে অঙ্কিত করিয়াছেন, আর কোনও বাঙ্গালী কবি তাহা করিতে পারেন নাই। আর রবীন্দ্রনাথ যে কালে, যে দেশে, যে পরিবারে যে সমাজে অসাধারণ রূপগুণে বিভূষিত হইয়া এন্মিয়াছেন, এবং যে সকল বিবিধ সম্বন্ধে আবদ্ধ হইয়া জীবনের সমুদায় অভিজ্ঞতা অর্জন করিয়াছেন, তাহাকে স তুমি জান কত ক্ৰট, কত অপরাধ ভরিয়াছে এ জীবুন—সব জেনে শুনে তবু মোরে ভালবাস শুধু নিজ গুণে। হে প্রেমবারিধি মোর অসীম অগাধ, সামার জীবন-তট বেড়িয়া ঘেরিয়া আমারে বেঁধেছ তুমি চির-আলিঙ্গনে। পত উপচারে তুমি দেহমন দিয়া সতী ¢ > ጫ আশ্রয় করিয়াই তার নারীচরিত্রগুলি এমন অপূৰ্ব্বসৌন্দর্য্য ও সঙ্গ্যলাভ করিয়াছে। আবার রবিবাবু অনেক সময় সুকোমল গোলাপদলে শয়ন করিয়া, বসন্তের মৃদ্ধ মলয় নিঃশ্বন পান ও শরতের ফুল্ল জোৎস্নায় স্নিগ্ধ হইয়। কবি-কল্পনার এই সকল মামুলী উপুকরণের সাহায্যেই অনেক কবিতাও রচনা করিয়াছেন। এই স ক ল কাব্য স্বষ্টি যতই সুন্দর হউক না কেন, বস্তুতন্ত্র যে হয় নাই, ইহা কিছুই আশ্চৰ্য্য নহে। এই সকল কবিতার ঝঙ্কারের মিষ্টত্ব বিমানচারিণী ভাবুক তাকে যতই মুগ্ধ করুক না কেন, উচ্চাঙ্গের সাহিত্যের রসপিপাসাকে কিছুতেই যে স্কিন্ধ করিতে সমর্থ হয় না—ইহাও পূর্ব অস্বীকার করিতে পারা যায় কি ? * শ্ৰীবিপিনচন্দ্র পাল।

  • রবীন্দ্রবাবুর চরিত-চিত্র বাহির হওয়ার পর উহার সম্বন্ধে কোনও প্রকার বাদপ্রতিবাদ “বঙ্গদর্শনে" দেওয়া অনাবগুক স্থির হয়েছিল। এই প্রবন্ধটী সেইজন্ত অগ্রস্থায়ণের “বিজয়া"র জন্তই বিশেষ ভাবে লিখিত হয়, কিন্তু এই প্রবন্ধটি লেখা শেষ হওয়ার পর দেখা গেল ইহা বাদ-প্রতিবাদ নহে এবং ইহাতে অনেক নুতন কথাও আছে, সেইজন্ত লেখক মহাশয়ের সন্মতিক্ৰমে “বঙ্গদর্শনে”ও ইহা প্রকাশিত হইল। বঃ সঃ

তী নিত্য মোর কর পূজা-আমি জানি মনে সে নৈবেদ্য মোর নয় ; আমি মাটি খড়, শুধু ভক্ত-হৃদয়ের মানসী প্রতিমা প্রেমমস্ত্রে বাধা হেথা—আমি মৃত জড়। "যে প্রাণ আমাতে হেরি তুমি ধ্যানরত তোমার সাধনা বলে হে সতি আমার, সে প্রাণ এ মৃত প্রাণে হবে কি সঞ্চার ?