পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৬৮ ঐতিহাসিকতা সম্বন্ধে মহাভারতের কি মত। মহাভারতের মতে কুরুপাণ্ডবের ইতিবৃত্ত সত্য পুরাবৃত্ত আদিপর্বের প্রারম্ভেই নৈমিষারণ্যবাসী মুনিগণ জিজ্ঞাসা করিতেছেন যে, ভারতস্তেতিহাসষ্ঠ পুণ্যাং গ্রন্থার্থসংযুতাম্। 臺 臺 臺 米 জনমেজয়ন্ত যাং রাজ্ঞো বৈশম্পয়ন উক্তবান। 臺 姆 臺 爱 学 সংহিতাং শ্রোতুমিচ্ছামঃ পুণ্যাং পহাম ॥ পুণ্য ভারত-ইতিহাস যাহ। বৈশম্পায়ন জয়মেজয় রাজাকে বলেন সেই পাপনাশিনী সংহিতা আমরা শুনিতে ইচ্ছা করি । ইহার উত্তরে সৌতি বলিলেন-- আচক্ষুঃ কবয়ঃ কেচিৎ সং ত্যাচক্ষতে পরে । আখ্যাস্তান্তি তথৈবন্ত ইতিহাসমিমং ভূবি ॥ কোন কোন কবি এই ইতিহাস পূৰ্ব্বে ব্যাখ্যা করিয়াছেন। অপর কেহ ইহা এখনও ব্যাখ্যা করেন । ভবিষ্যতেও অন্যে ইহ। পৃথিবীতে প্রচার করিবেন। আদিপর্কের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৩৬ শ্লোকেও মহাভারতকে ইতিহাসরূপে নির্দেশ করা द्रश्नitछ्– ইতিহাসঃ প্রধানার্থঃ শ্রেষ্ঠঃ সৰ্ব্বগমেম্বয়ম্। এই ইতিহাস গভীরার্থক ও সমস্ত আগমের মধ্যে শ্রেষ্ঠ । আদিপর্কের ৬০ অধ্যায়ের শেষে ব্যাসদেব বৈশম্পায়নকে আদেশ করিতেছেন— কুরূণাং পাণ্ডবনাঞ্চ যথা ভেদোহভবৎ পুরা। তপস্মৈ সৰ্ব্বমাচক্ষ যন্মত্ত: শ্রুতবানপি ॥ আমার নিকট তুমি কুরুগণের ও পাণ্ডবগণের ভেদ সম্বন্ধে যাহা শুনিয়াছ তাহা ইহার নিকট সমস্ত বল । t বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, ফাঙ্কন, ১৩১৯ তাহার পর লেখা হইয়াছে – গুরোব চনমাঞ্জায় স তু বিপ্রর্যভস্তদা। আচচক্ষে ততঃ সৰ্ব্বমিতিহাসং পুরাতনম্ ॥ গুরুর আদেশ পাইয়৷ সেই বিপ্রর্ষি তখন সেই প্রাচীন ইতিহাস আমূল বলিলেন। ১১ অধ্যায়ে প্রাগুক্ত সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়া বৈশম্পায়ন বলিতেছেন— এবমেতৎ পুরাবৃত্তং তেষামক্লিষ্টকৰ্ম্মণামূ। ভেদে রাজ্যবিনাশায় জয়শচ জয়তাং বর ॥ হে জেতৃগণের প্রধান, সেই অক্লিষ্টকৰ্ম্ম পাগুলগণের পুরাবৃত্ত এইরূপ । রাজ্যের জন্য তাঁহাদের কলহ হয় এবং এইরূপে তাঙ্গার জয়লাভ করেন। মহাভারতের মতে যে মহাভারত ইতিহাস, তদ্বিষয়ে ভূরি ভূরি নিদর্শন দেওয়া যাইতে পারে। এক্ষণে বিবেচ্য যে ব্যাসদেব স্বীয় মাতার কন্যাদশায় বিবাহওগোপন করেন নাই, যিনি উৰ্দ্ধবাহু হইয়া কাদিয়া বেড়াইয়াছেন যে—ধৰ্ম্ম হইতেই অর্থ ও কাম পাওয়া যায়, অতএব হে জীব ! কোন অবস্থায় ধৰ্ম্ম ত্যাগ করিও না—যিনি সত্যের মাহাত্ম্য জলদগম্ভীরনাদে গাহিয়াছেন, সেই মহর্ষি কি কল্পিত চরিত্র লিখিয়া " সেই উপন্যাসকে ইতিহাস কলিবেন ? বেদব্যাস মিথ্যাবাদী ইহা র্যাহারা বিশ্বাস করিতে পারেন তাহাদের বিশ্বাসকে ধন্য । তিনি কেবল স্বীয় কৃতিকে ইতিহাস বলিয়াই নিরস্ত হন নাই; ঐ ইতিবৃত্তে র্তাহার ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধও দেখাইয়াছেন। তিনিই ধৃতরাষ্ট্র ও পাণ্ডুর জন্মদাতা, তিনিই পাণ্ডবগণের বিবাহ দ্রৌপদীর সহিত দেন, তিনিই রাজস্বয় যজ্ঞের প্রধান পুরোহিত, তিনিই