পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৭২ এই দুই বিদ্যালাভে সাহায্য করিয়াছিল । ছেদির পিতা ভূখনলাল মধ্যে মধ্যে দোকানের জষ্ঠ জিনিস কিনিতে যাইতেন ; সেই সময়ে দোকানের ভার ছেদির উপর পড়িত। ছেদি এই সুযোগে দোকান হইতে কিছু কিছু অর্থ সংগ্ৰহ করিয়া গ্রাহকদের নামে খরচ লিখিয়া রাখিত এবং বিশেষ মনোযোগের সহিত হাদের স্বাক্ষর নকল করিবার চেষ্টা করিত । পাঠশালা ছাড়িয়া ছেদি কিছুদিন তাহার মাতুলের নিকটে বিষয় কাৰ্য্য সম্বন্ধে শিক্ষা লাভ করিতে আসিল । ছেদির মাতুল মুন্সী রামশরণ লাল জমিদারের ‘পাটোয়ারি ছিলেন। দলিল দস্তাবেজ লিখিতে সে অঞ্চলে না কি তাহার সমকক্ষ কেহ ছিল না । ছেদি মাতুলের নিকট থাকিয়৷ অল্পদিনের মধ্যেই ” এই দুলৰ্ভ ‘দলিল মুসাবিদ বিদ্যায় প্রগাঢ় জ্ঞান লাভ করিল। বল বাহুল্য এই উমেদারি অবস্থাতেও ছেদির অর্জনস্পৃহা একান্ত মুৰুপ্ত থাকে নাই । পক্ষান্তরে ছেদি একাঙ্গ উন্নতির পক্ষপাতী ছিল না। বিদ্যশিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে মাদকসেবন এবং ইন্দ্রিয়পরতার ব্যাপারেও সে সমভাবে উন্নতিসাধন করিতেছিল। বিংশতি বর্ম বয়সে শিক্ষা সমাপ্ত হইলে ছেদি কৰ্ম্মসংগ্রহের জন্য ব্যগ্র হইয়া উঠিল। বহুদিন নানাস্থানে ঘোরাঘুরি করিয়া অবশেষে মাতুলের সাহায্যে সে এক জমিদারের বহুদূরবন্তী মাহীলে’ পাঁচ টাকা বেতনের এক পাটোয়ারির পদ লাভ করিল। এই পাঁচ টাকা বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, ফাল্গুন, ১৩১৯ সম্বন্ধেও সত্ত্ব রহিল যে প্রজাদের দুরস্ত করিয়া দিতে না পরিলে ছেদি পূর্ণ বেতন লাভের অধিকার হইবে না। সে অঞ্চলে গবর্ণমেণ্টের জরিপ আরম্ভ হইবার কথা হইতেছিল। জরিপে একবার খাজনার হার নির্ধারিত হইয়া গেলে সে হার আর সত্বরে বৰ্দ্ধিত করা দুঃসাধ্য। সুতরা: পূৰ্ব্ব হইতে খাজনা বাড়াইয়া লইতে না পাfরণে জমিদারের সমূহ ক্ষতি । তাই মালিক রামপ্রতাপ সিং বহুদিন হইতে একজন উপযুক্ত কৰ্ম্মচারীর অসুসন্ধান করিতেছিলেন। ইতিমধ্যে দুইবার পাটোয়ারি পরিবৰ্ত্তি ত হইয়াছিল। কেহই জমিদারের উদ্বেগু সাধনে সমর্থ হয় নাই ! ছেদি আলিয়া ‘কড়ার' করিল যে তিন বংসরে মধ্যে যদি যে খাজনা বাড়াইয়া দিতে না পরে তাহা হইলে সে বিনা আপত্তিতে বরখাস্ত হইবে এবং যতদিন না সে কার্য্য সিদ্ধ করিতে পরিবে ততদিন সে পাঁচ টাকার স্থলে তিন টাকা মাত্র বেতন গ্রহণ করিবে । সন্তুষ্ট হইয়া জমিদার ছেদিকেই উপযুক্ত কৰ্ম্মচারীরূপে মনোনীঠ করিখেন। sp ૨ কাৰ্য্যভার গ্রহণ করিয়াই মুচতুর ছেদি প্রজাদের সঙ্গে আত্মীয়তা স্থাপনে যত্নবান হইল। প্রথম সাক্ষাতেই সে প্রজাদের নিকট জমিদারের ষথেষ্ট নিন্দাবাদ করিল এবং জমিদার যে এরূপ অত্যাচারী এ কথা পূৰ্ব্বে ঘূণাক্ষরে জানিতে পারিণে সে যে কদাচ এই কৰ্ম্ম গ্রহণ করিতে সন্মত হইত না এ কথা তাহীদের বিশদরূপে