পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳՀ8 এখন দিনকতক আমাদের ঘরের কথা আমাদিগকে ভাবিতে হইবে, নহিলে আর যে চলে না । - ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, বোম-এই পাচটির পাচটিতেই আমরা সাধারণ ভারতবালী, বিশেষত বঙ্গবাসী নানারূপে বিড়ম্বিত। আমরা শুষ্ক মািটতে বাস করিতে পাই না ; স্বান, পান ও রন্ধনের জন্ত পরিষ্কার জল পাই না ; পল্লীগ্রাম সকল জঙ্গলে পূর্ণ হইয়াছে কাজেই প্রচুর স্বৰ্য্যালোক পাই নামটী-পচায়, গাছ-পচায়, জল-পচায়, পাট-পচা বায়ু অনেক স্থানে বিষম দুযিত হইয়াছে,—বিশুদ্ধ বায়ু আমরা সেবন করিতে পাই না ; রোগক্লিষ্ট শোকগ্ৰস্ত, অন্নাভাবে শীর্ণ অকালে জীর্ণ কোটি কোটি নরনারীর আর্ত রবে আকাশ পর্য্যন্ত দুযিত হইয়াছে, শূন্তপ্রাণে শূন্তপানে চাহিয়াও আমরা সাস্তুনা পাই না। দুর্দশায় আমাদের স্বস্তি, শান্তি অস্তৰ্হিত হইতে বসিয়াছে। কি করিব আমরা নিৰ্ব্বাচিত সদস্যপূর্ণ মন্ত্রণা-সভা লইয়া ? কি করিব কমিটি, বোড কাউন্‌সিল লইয়া ? কি করিব উচ্চ নীচ,স্থলভ দুলভ শিক্ষা লইয়া ? কি বরিববিচারক ও শাসকের পার্থক্য লইয়া ? কি করিব সভাগৃহমধ্যে রাজকৰ্ম্মচারী দিগকে অবাধ প্রশ্ন কুরিবার ক্ষমতা লইয়া ? তবে, শত ধন্যবাদ দিই মহারাজ রণজিৎ সিংহকে আর রায় সীতানাথ রায়কে ; তবু দুই জন লোক, বড় লোক হইয়াও আমাদের স্বাস্থ্যবিভ্রাটের কথা বড়লাটের সভ্যতায় উপস্থাপিত করিয়াছিলেন, মদের ভাল বুলিতে হইবে । আমরা নিতান্ত বিপন্ন, দীনহীন হইয়া পড়িতেছি,—আমরা যে বাস্তুর মাটী পাই না, তৃষ্ণুর জল পাই না,শীতে রৌদ্র পাই না,গ্রীষ্মে বঙ্গদর্শন । [ ১২শ বর্ষ, চৈত্র, ১৩১৯ বিশুদ্ধ বায়ু পাই না। আমরা বিষম দেশব্যাপী জরে হয় জড়সড় হইয়া কাল কাটাই, নয় উজাড় হইয়া যাই। আমরা যে প্রচুর আহারের অভাবে দিন দিন ক্ষীণ হইতেছি ; দেহের বল কমিতেছে, হৃদয়ের সাহস কমিতেছে, প্রাণের স্থত নাই বলিলেই চলে। রাস্ত, বাধ, জঙ্গল, সড়ক—সমগ্র ভারতে নিত্যই বাড়িতেছে,–গোলোক-ধাঁধার মত রাস্তার জটিলতায় পথ হারাইয়া ফেলিতে হয় ; রাস্তার জাল দিয়া সমস্ত ভারতবর্ষ বিরিয়া ফেলা হইয়াছে,—তাহাতে স্থলপথ সুপার হইয়াছে বটে, কিন্তু জলনিকাশের পথ প্রচুর না থাকায় বৃষ্টির জল, বস্তার জল নিকাশ পায় না, মাটীতে ক্রমাগত জল বসিতে থাকে। কাজেই ভূমি হইয়াছে ম্যালেরিয়ার বিহারক্ষেত্ৰ, ৰালকের শিশু-শরীরপালন পাঠ করিয়া, শুষ্ক ভূমিতে বাস করিতে শিক্ষা পাইতেছে, কিন্তু ভূমিতে জল বসিলে ভূমি শুষ্ক থাকে কিরূপে ; কাজেই বাস্তুভূমি সকল বিক্রীত হইয়াছে। আবার নদীগর্ভ সকল ক্রমেই ভরিয়া উঠিতেছে। এক যশোহরের রায় যদুনাথ মজুমদার ব্যতীত কেহই সে দিকে মনোবোগী নছেন। বাঙ্গলার অনেক স্থলের নদী সকল কাটাইয়া না দিলে রীতিমত জল নিকাশ হইবে না ; দিলে জল নিকাশের ব্যবস্থা হইবে, স্নানের ও পানের জল সস্কুলান হইবে এবং বাণিজ্য ও ধাতায়াত সুগম হইবে। ভাগীরথী কাটাইবার কথা বাঙ্গলার লাট সভায় উপস্থাপিত করিয়া মহারাজ রণজিৎ আমাদের পুনৰ্ব্বার ধন্যবাদার্হ হইয়াছেন। পূৰ্ব্বে ধনী ও মধ্যবিত্তের ধৰ্ম্মপ্রাণত